রয়্যাল ইন্টারন্যাশনালের পর কোচবিহারের আরও দু’টি অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্তভার নিচ্ছে সিবিআই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সংস্থা দু’টির নাম অ্যাঞ্জেল এগ্রিটেক লিমিটেড ও অ্যানেক্স। এই নিয়ে গত এক মাসের মধ্যে তিনটি লগ্নি সংস্থার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে গেল।
পুলিশ সূত্রের খবর, রয়্যালের একটি মামলা ইতিমধ্যে সিবিআইকে হস্তান্তর করা হয়েছে। অ্যাঞ্জেল সম্পর্কিত তথ্যাদিও ইতিমধ্যে সিবিআই দফতরে পাঠানো হয়েছে। গত সপ্তাহে সিবিআইয়ের চিঠি পাওয়ার পর অ্যানেক্সের বিষয়েও যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “একাধিক লগ্নি সংস্থার ব্যাপারে সিবিআই তথ্য চেয়েছে। সেগুলি পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিষয়টি দেখছেন।” অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “দু’টি সংস্থার ব্যাপারে সিবিআইকে তথ্য পাঠানো হয়েছে। অ্যানেক্স সম্পর্কেও খুব দ্রুত তথ্য পাঠানো হবে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১০ সাল থেকে কোচবিহারে অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির রমরমা শুরু হয়। ওই বছরই চালু হয় রয়্যাল ইন্টারন্যাশনাল। কয়েক বছরের মধ্যে জেলার সীমানা পেরিয়ে অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়ে সংস্থাটি। কম সময়ে বেশি টাকা ফেরতের টোপ দিয়ে ব্যাবসা জমায় সংস্থাটি। বাজার থেকে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা সংস্থাটি তুলে নিয়েছে বলে অনুমান। অভিযোগ, কোচবিহারের প্রভাবশালীদের একাংশ আড়াল থেকে ওই সংস্থকে মদত দিয়েছেন। প্রভাবশালীদের একাংশের নিয়ন্ত্রিত সংগঠনের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে একাধিক বিগ বাজেটের পুজোতেও টাকা ঢেলেছে সংস্থাটি। কখনও বিজ্ঞাপনের মোড়কে, কখনও সরাসরি চাঁদা হিসাবে ওই টাকা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকি সংস্থার স্থাবর সম্পত্তি বিক্রিতেও প্রভাবশালীদের মদতের অভিযোগ রয়েছে। ফরওয়ার্ড ব্লকের তরফে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে নাম না করে শাসকদলের একাংশ ও এক আমলার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও তোলা হয়েছে। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বাম আমলে ব্যবসার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে লাভ হবে না। সঠিক তদন্ত হলে সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।”
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, রয়্যালের মত ব্যবসা জমাতে না পারলেও কোচবিহারে অ্যাঞ্জেল ও অ্যানেক্সের প্রভাবও ছিল। ২০১০ সাল থেকেই কোচবিহার শহরে অফিস খুলে অ্যাঞ্জেল বাজার থেকে টাকা তুলতে শুরু করে। বাজার থেকে সংস্থাটি অন্তত ৬০ কোটি টাকা তুলেছে বলে পুলিশের অনুমান। শুধু মাথাভাঙা মহকুমা থেকেই সংস্থাটি ১৫ কোটি টাকা তুলে নেয়। কোচবিহার ছাড়াও উত্তরবঙ্গের একাধিক বড় শহরকে ঘাঁটি করে জাল বিস্তার করেছিল অ্যানেক্স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy