রজতজয়ন্তী উৎসব
ছবি: অনিতা দত্ত।
ফেডারেশন অব সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন দার্জিলিং তাদের পঁচিশ বছর পূর্তি উদযাপন উদ্বোধন করল। গোর্খা দুঃখ নিবারক সম্মেলন কক্ষে সংস্থার বি কে রাই, সারথী থাপা, পুনম রাই, অরুণ খাওয়াসদের মতে প্রতিষ্ঠাতাদের খাদা ও ব্যাচ পরিয়ে স্বাগত জানায় সদস্যরা। স্বাগত ভাষণ দেন এজেন্ট ম্যানেজার হেমা ছেত্রী। শৈলশহরে সংস্থাটি গড়ে ওঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন নিমা লামা। চেয়ারম্যান হরেন অ্যালে পঁচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব ও সম্পাদক ভরত প্রকাশ রাই জানিয়েছেন, অনুষ্ঠান সূচির মধ্যে থাকছে স্কুল ও কলেজ স্তরে পরিবেশ বিষয়ক অঙ্কন ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা। প্রকৃতি পাঠ শিবির, পাহাড়ে বৃক্ষরোপণ উৎসবের। উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মুখপত্র ‘চোকো পরিবেশ’-এর পুনঃপ্রকাশের। পুরস্কার দেওয়া হবে দেশের নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ব্যক্তির হাতে যারা পরিবেশরক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে।
আদিবাসী ভাষাকুরুখ
ছবি: অনিতা দত্ত।
ভাষা চর্চার মধ্য দিয়েই বারেবারে তুলে ধরেছেন চার পাশের আলোছায়া মাথা দ্বন্দ্বমুখর সমাজ ও সংস্কৃতিকে। অভিরাম তিরকির সৃজন ভাষাকুরুখ। দীর্ঘ বাইশ বছর ধরে যে নাটক রচনায় নিবিষ্ট করেছেন নিজেকে তাতে উঠে আসে ডাইনি প্রথা, বন সংরক্ষণ, নারী পাচার, কখনও স্বাক্ষরতা আর সবুজ পৃথিবী, ফুলের মতো জীবন-এর কথা। তার রচিত উল্লেখযোগ্য নাটক বিষাহী, গবারি গাণ্ডীতা পুুঁপা, চালেরন ডাহারে, হারিয়ার রাজি, ঊঁখা ডাহারে কিংবা কুঁপ লেখে জিয়া, অনমাট্টি মান্ডি, জিয়া সেঁড়তা লেঁখে। রাজ্যস্তরে একাঙ্ক নাট্য প্রতিযোগিতার সাড়া ফেলেছে নাটকগুলি। তৈরি করেছেন নাট্যদল আদিবাসী কুরুখ নাট্যসংস্থা। মঞ্চস্থ করেছেন বীরভূম বর্ধমান ও বাঁকুড়ায় দর্শকের দরবারে। পেয়েছেন পুরস্কার। রচনার পাশাপাশি নির্দেশক-ভূমিকা পালন করেন তিনি। লিখেছেন আচার অনুষ্ঠান বিষয়ক গান, গল্প। ‘চিরদিনের পথ’-এর পংক্তিতে বাঁধা পড়ে ‘একানন জিনগিতা ডাহারে। এউন্দা দিগহা, এউন্দা গেটছা, কাত্তিয়া ক্যারা, এউন্দা উল্লা মাহিনা বাছাব’ (কেমন জীবন, কতদূর, কত দূরত্ব, পার হয়েছে কত মাস, কত বছর) কুমারগ্রাম রাধানগর গ্রামের এই কৃষককে কুর্নিস না জানিয়ে উপায় কী।
তিলিংয়ের সাপ
দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্কুলের প্রদর্শনীতে সে তিলিং বাঁশ-এর গোড়া দিয়ে সাপ বানিয়েছিল। তার শিল্পকর্ম প্রশংসা পেয়েছিল। লাটাগুড়ির সেই স্কুল পেরিয়ে সে এখন মাল পরিমল মিত্র মহাবিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষের বাংলা সাম্মানিকের ছাত্র। যন্ত্রের মধ্যে সম্বল হাত করাত, হ্যাক্সো ব্লেড, বাটালি ও দা। তাই দিয়ে কখনও কাঠ, কখনও বাশের গোড়া, কখনও গাছের শিকড় দিয়ে সে গড়ে সাপ, ব্যাঙ, কচ্ছপ, খরগোশ, হাঁস, মুরগি, কাঠঠোকরা, টিয়া অথবা ময়ূর। কখনও সে ব্যবহার করে সজনা গাছের ফল। তা দিয়ে তৈরি হয় ফুলের থোকা। তার ঠিকানা জলপাইগুড়ির মাল ব্লকের একটি অঞ্চল বালাট্যাঙ্কি। লাটাগুড়ি এবং ক্রান্তিহাটে রথের মেলায় তার শিল্পকর্ম বিক্রি করে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রটি। দাম তেমন পায় না। স্থানীয় মানুষেরাও তার শিল্পকর্ম সম্পর্কে তেমন আগ্রহী নয়। তার স্কুলের শিক্ষিকা ধৃতিদীপা রায় মণ্ডল এবং কলেজের শিক্ষিকা তপতী সাহা প্রচুর উৎসাহ দেন। দেন প্রয়োজনীয় পরামর্শও। তার অর্থাৎ জিতেন রায়ের সমস্যা তাতে কাটে না। অর্থাভাব, স্থানীয় মানুষের আগ্রহর অভাব তবুও শিল্পীসত্ত্বাকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় জিতেন। কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার শিল্প আত্মপ্রকাশ করে। প্রশংসা কুড়োয়। প্রশিক্ষণের সুযোগ মেলে না। মেলে না সরকারি অর্থ সাহায্যও। খুব বেশি চায় না সে। একটু প্রশিক্ষণ আর উন্নতমানের একটি হ্যাক্সো ব্লেড.... ।
লেখা: সুদীপ দত্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy