Advertisement
E-Paper

কমছে সদস্য, স্বীকার প্রতিবেদনেই

ক্ষমতা হারানোর পর থেকে কোচবিহার জেলায় ক্রমশ কমছে সিপিএমের সদস্য সংখ্যা। রবিবার কোচবিহারের রবীন্দ্রভবনে দলের ২০ তম জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনেই সদস্য সংখ্যা কমার তথ্য জানানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৫
সম্মেলনে বামফ্রন্টের রাজ্য সম্পাদক ও বিরোধী দলনেতা। —নিজস্ব চিত্র।

সম্মেলনে বামফ্রন্টের রাজ্য সম্পাদক ও বিরোধী দলনেতা। —নিজস্ব চিত্র।

ক্ষমতা হারানোর পর থেকে কোচবিহার জেলায় ক্রমশ কমছে সিপিএমের সদস্য সংখ্যা। রবিবার কোচবিহারের রবীন্দ্রভবনে দলের ২০ তম জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনেই সদস্য সংখ্যা কমার তথ্য জানানো হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, ২০১৩ সালে ‘পার্টি সভ্য’ এবং আবেদনকারী মিলিয়ে মোট সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ১৬৩ জন। ২০১৪ সালে পুর্নবীকরণের পর সেই সংখ্যা হয় ১৩ হাজার ৫৬৬ জন। এক বছরে সদস্য সংখ্যা ২৬০৭ জন কমে যায়। এ বছর সম্মেলনের আগে অক্টোবর মাস ২০১৪ সালের মধ্যে যারা লেভি পরিশোধ করেছেন তাঁদের বৈধ প্রতিনিধি ধরা হয়। সে হিসেবে সংখ্যা মিলিয়ে হয়েছে ১১ হাজার ৫৮২ জন। যা নবীকরণের সময় থেকে ১ হাজার ৯৮৪ জন কম।

কমেছে শাখা সংগঠনের সংখ্যাও। ২০১২ সালে জেলায় শাখার সংখ্যা ছিল ১২৯৫টি। ২০১৪ সালে পুনর্নবীকরণের রিপোর্টের সময় জেলায় শাখার সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৮৬টি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সন্ত্রাস এবং বিভিন্ন ভোটে বামফ্রন্টের পরপর পরাজয়ের পরে দলের নেতাদের কয়েকজন সহ পার্টি সদস্যদের একাংশ তৃণমূলে এবং পরবর্তীকালে বিজেপিতে যোগদান করেছেন। তাঁদের অবশ্য পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরকম বহিষ্কৃত পার্টি সদস্যের সংখ্যা ৪৬২ জন এবং প্রার্থী সদস্য ৬২ জন। নিস্ক্রিয়তা সহ নানা কারণে ৮৭১ জন পার্টি সদস্য এবং ১১১ জন প্রার্থী সভ্যের সদস্যপদ খারিজ হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পরপর দুটি ভোটে হারার পর জেলার অধিকাংশ জোনাল কমিটির কাজকর্ম দুর্বল হয়ে পড়ে। কমিটির সদস্যদের উল্লেখযোগ্য অংশের অনুপস্থিতির ফলে বক্সিরহাট, তুফানগঞ্জ, সদর দক্ষিণ, শিতলখুচি সহ বেশ কিছু জোনে বর্ধিত সভা করে বা বেশ কিছু সদস্যকে আমন্ত্রিত সদস্য করে কমিটির কাজ পরিচালনা করতে হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

কেন এই পরিস্থিতি? সিপিএমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সন্ত্রাসের কারণেই এই পরিস্থিতি। সন্ত্রাসের অভিযোগের উদাহরণ হিসেবে, নিউ মাথাভাঙা জোনাল কমিটি তাদের দফতর খুলে কাজ করতে পারছে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দিনহাটা -১ জোনালের অধীন ভেটাগুড়ি অফিস তৃণমূলের দখলমুক্ত করা সম্ভব হয়নি, সিতাই জোনাল কমিটি এখনও দু’টি লোকাল এলাকায় কাজ করতে পারছে না। শাসক দলের সন্ত্রাসে চামটা ও সিতাইয়ে লোকাল সম্মেলন করতে পারেনি বলেও অভিযোগ।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পাল্টা বলেন, “বামেদের সংগঠন ছেড়ে মানুষ দলে দলে তৃণমূলে এসেছে। বামেদের সঙ্গে আর কেউ থাকতে চাইছে না। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে সন্ত্রাসের মিথ্যে অভিযোগ তোলা ঠিক নয়।”

ওই প্রতিবেদনে দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের কাজ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। যৌথভাবে কাজ করার দুর্বলতা, দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সদস্যদের একাংশের দুর্বলতা থেকে গিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র।

রবিবারই সিপিআইয়ের দু’দিনের কোচবিহার জেলা সম্মেলন শেষ হয়। প্রতিনিধিদের দেওয়া খসড়া সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের ৩৬ নম্বর পৃষ্ঠায় সাংগঠনিক বিষয় সংক্রান্ত আলোচনায় সমালোচনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, “বামফ্রন্টের একেবারে শেষপর্যায়ে রাজ্য সরকার বলতে মাত্র কয়েকজন নেতৃত্বের সরকার ছিল বললে অত্যুক্তি করা হবে না। কোন সিদ্ধান্ত নিতে গেলে বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভাতে সার্বিক আলোচনা দূরঅস্ত, বামফ্রন্টেও হত না। সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে এমন হয়েছিল। ব্যবসায়িক গোপনীয়তা বলে এড়িয়ে যাওয়া হত।”

cooch behar rabindrabhavan members cooch behar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy