Advertisement
১৫ জুন ২০২৪

গরমে জল-সঙ্কট বাড়ছে শিলিগুড়ি পুর-এলাকায়

কোথাও পাম্প খারাপ, কোথাও বা জলাধারে ফুটো হয়ে জল পড়ছে। তার জেরে জল সরবরাহ হচ্ছে না। দীপচর, অরবিন্দপল্লির মতো বস্তিগুলিতে জলের সরবরাহ নেই। কোথাও বাড়ির ট্যাঙ্কে পুরসভার সরবরাহ করা জল পৌঁছচ্ছে না। কারও বাড়িতে বা রাস্তার ধারে থাকা পুরসভার কলে জলের চাপ নেই। সরু সুতোর মতো ধারায় জল পড়ছে। খোদ পানীয় জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদের বাড়ির ট্যাঙ্কেও জল উঠছে না। গরমে শুরুতে শিলিগুড়ি শহর জুড়েই তাই জলকষ্টে ভুগতেই হচ্ছে বাসিন্দাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৫৮
Share: Save:

কোথাও পাম্প খারাপ, কোথাও বা জলাধারে ফুটো হয়ে জল পড়ছে। তার জেরে জল সরবরাহ হচ্ছে না। দীপচর, অরবিন্দপল্লির মতো বস্তিগুলিতে জলের সরবরাহ নেই। কোথাও বাড়ির ট্যাঙ্কে পুরসভার সরবরাহ করা জল পৌঁছচ্ছে না। কারও বাড়িতে বা রাস্তার ধারে থাকা পুরসভার কলে জলের চাপ নেই। সরু সুতোর মতো ধারায় জল পড়ছে। খোদ পানীয় জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদের বাড়ির ট্যাঙ্কেও জল উঠছে না। গরমে শুরুতে শিলিগুড়ি শহর জুড়েই তাই জলকষ্টে ভুগতেই হচ্ছে বাসিন্দাদের।

পুরসভার ৫, ১০, ১২, ১৮, ২২, ২৩, ২৪, ২৮, ২৯, ৩৯, ৪২-৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে জলের সমস্যা বেশি। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গানগর, নতুনপাড়া, সন্তোষীনগর এলাকায় জল সরবরাহ নিয়ে নালিশ করেন বাম কাউন্সিলর অমরনাথ সিংহ। তিনি বলেন, “দিনে ১৫-২০ মিনিটের বেশি জল সরবরাহ হচ্ছে না। পুর কর্তৃপক্ষকে বলেও কাজ হয়নি। বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।” একই পরিস্থিতি ১০ নম্বর ওয়ার্ডে পশ্চিম আশ্রমপাড়ার। এলাকার কাউন্সিলর কমল অগ্রবাল জানান, দু দিন আগেই এলাকার মহিলাদের নিয়ে গিয়ে তাঁরা পুর কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপিও দেন। সকালে ২ ঘণ্টা জল সরবরাহ হওয়ার কথা। অথচ ১ ঘণ্টাও থাকছে না। কয়েকটি ওয়ার্ডে একই সমস্যা। ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের বড় অংশে এখনও পুরসভার তরফে পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। শিলিগুড়ি পলিটেকনিক কলেজের পিছনের দিকে অরবিন্দপল্লি বস্তি, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে দীপচর বস্তি এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা না-থাকায় গরমে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। সোমবার ৫ নম্বর বরো কমিটির বৈঠকে ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বঙ্কিমনগর, শাস্ত্রীনগর, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে জলের সমস্যার কথা জানিয়েছেন বরো কমিটির চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেসের কাউন্সিলর শর্মিলা শর্মা। রথখোলার জলাধার চুঁইয়ে জল বার হচ্ছে। তাতে ওই জলাধার থেকে এলাকায় জল সরবরাহ ঠিক মতো হচ্ছে না বলে জানান জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ পম্পা দাস।

মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। পানীয় জল সরবরাহের যাতে সুষ্ঠু ভাবে করা যায় সে জন্য ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতায় আমরা ফুলবাড়িতে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের কাছে দিঘি খনন করতে চেয়েছিলাম। সরকার তা অনুমোদন করেনি। গজলডোবা থেকে পাইপে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করতে প্রকল্প পাঠানো হয়েছিল। রাজ্য সরকার সেই কাজ করবে বলে পরে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণা করে। অথচ সে ব্যাপারে কিছুই হল না।” তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ পাল জানান, পুরসভার তরফে প্রথমে যে পরিকল্পনা করা হয় তা ভুল ছিল। জোটের বোর্ডে তৃণমূল থাকার সময় পরিকল্পনা ঠিক করে পাঠানো হয়। তার অনুমোদন হয়। তবে বর্তমান পুর কর্তৃপক্ষ তদ্বির না করাতেই সেই কাজ তারা শুরু করতে পারলেন না।

ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে পানীয় জল সরবরাহ হয়। গরমে তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানেলে জল কমে যাওয়ায় সরবরাহ করতে নির্দিষ্ট সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। তিস্তা ক্যানেলের জল মহানন্দায় গিয়ে পড়ে। যে জায়গা থেকে জল তোলা হয় দীর্ঘদিন ধরে পলি জমে তার উচ্চতা বেড়ে গিয়েছে। জল কম থাকলে তা তোলার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ পম্পা দাস বলেন, ‘‘যা পরিস্থিতি তাতে সুষ্ঠুভাবে জল সরবরাহ করতে সমস্যা তো হচ্ছেই। গরমে প্রতিটি ওয়ার্ডে কম বেশি সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যে পরিকাঠামো রয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। তাই অনেক জায়গাতেই জল সরবরাহ করা যাচ্ছে না।”

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস দুয়েক আগেই জলাধারের জন্য কম ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি নতুন পাম্প মেশিন আনা হয়। সে দু’টি খারাপ হয়েছে। পুরনো মেশিন মেরামত করে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পুরসভার বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, “অধিকাংশ ওয়ার্ডেই পানীয় জল সরবরাহের সমস্যা হচ্ছে। কিছু ওয়ার্ডে জল সরবরাহ হচ্ছে না। বোর্ড মিটিংয়ে সমস্যার কথা তুলব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

water crisis siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE