উদয়ন গুহ। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি নেত্রী দীপা চক্রবর্তীর একটি বক্তব্য সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। যেখানে দীপাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘২০২৫ সালের মধ্যে রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি। আর বিজেপি ক্ষমতায় আসার তিন মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প।’’ ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে লোকসভা নির্বাচনে ভোটের মুখে রাজ্যে জুড়ে প্রচার করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের ফল প্রকাশের পরে সেই তৃণমূলেরই মন্ত্রী উদয়ন গুহ দাবি করলেন, জনপ্রতিনিধিদের হাতে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হোক। যাতে তাঁরা যাচাই করতে পারেন, কাদের লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রয়োজন আছে। এবং কারা লক্ষ্মীর ভান্ডারের সমালোচনা করেছেন।
উদয়নের এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, উদয়ন গুহ শুধু তৃণমূলের লোকদেরই বেছে লক্ষ্মীর ভান্ডার দিতে চান। তৃণমূল ও বিজেপি দুটো দলের মধ্যে কোনও নীতি-নৈতিকতা নেই। তাদের চিন্তাভাবনারও কোনও ফারাক নেই। গরিব মানুষকে কোনও অজুহাত দেখিয়ে বঞ্চিত করার চেষ্টা হলে তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।’’ সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা কারও ঘরের বা দলের টাকা নয়। সরকারের টাকা। গরিব মানুষেরা প্রত্যেকেই তা পাবে। দল দেখে তা বাছাই করা যায় না।’’ উদয়ন অবশ্য বিরোধীদের কথাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও চাকরির সময় ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ হয়। এ ক্ষেত্রে হলে আপত্তি কোথায়? আর যারা লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে ভোটের সময় মুখ্যমন্ত্রীকে কটূক্তি করেছেন, তাঁদের এটা নেওয়ার নৈতিক অধিকার নেই বলেই মনে করি। আর এটা আমাদের বক্তব্য। এই বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার মুখ্যমন্ত্রী নেবেন।’’
বৃহস্পতিবার কোচবিহারের মাথাভাঙায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘গত মঙ্গলবার কলকাতায় সভা হয়েছে। সেখানে আমরা নেতা-মন্ত্রীরা একটি বিষয়ে একমত হয়েছি। লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কাছে আবেদন করব যাতে জনপ্রতিনিধিদের হাতে প্রকল্প পরিচালনার কিছু মাত্র ক্ষমতা দেওয়া হয়। যাতে আমরা বাছাই করতে পারি, কার এর প্রয়োজন আছে। আর কারা সমালোচনা করেছেন, তাঁদেরও দেখে নিতে চাই।’’ উদয়নের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘‘এমনিতেই বেছে-বেছে লক্ষ্মীর ভান্ডার দেওয়া হয়। বহু গরিব মানুষ তা পান না। এ বার আরও ঝাড়াই বাছাইয়ের নামে পার্টি অফিস থেকে বিলি করতে চাইছেন তৃণমূল নেতারা। মানুষই এর জবাব দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy