Advertisement
E-Paper

চিকিত্‌সা দরকার নেই, বাগানটা খুলে দিন বাবু

বিনা চিকিত্‌সায় চা বাগানের শ্রমিক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল বুধবার। সমালোচনার মেঘ জমতেই, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন্ধ রেডব্যাঙ্ক ও রায়পুর--দুটি চা বাগানে প্রশাসনিক তত্‌পরতা দেখা গেল। চার মাস বন্ধ থাকার পরে, বৃহস্পতিবার রেড ব্যাঙ্ক বাগানের শ্রমিকদের বিশেষ সাহায্য হিসেবে পরিবার পিছু ১২ কেজি চাল বিলি করা হয়। দু’মাস ধরে বাগানে বন্ধ একশো দিনের প্রকল্পও চালু হয়েছে এ দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৪ ০১:৪২
খাবারের জন্য অপেক্ষা।

খাবারের জন্য অপেক্ষা।

বিনা চিকিত্‌সায় চা বাগানের শ্রমিক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল বুধবার। সমালোচনার মেঘ জমতেই, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন্ধ রেডব্যাঙ্ক ও রায়পুর--দুটি চা বাগানে প্রশাসনিক তত্‌পরতা দেখা গেল। চার মাস বন্ধ থাকার পরে, বৃহস্পতিবার রেড ব্যাঙ্ক বাগানের শ্রমিকদের বিশেষ সাহায্য হিসেবে পরিবার পিছু ১২ কেজি চাল বিলি করা হয়। দু’মাস ধরে বাগানে বন্ধ একশো দিনের প্রকল্পও চালু হয়েছে এ দিন।

এ দিন সকালে রেড ব্যাঙ্কে বাগানে পৌঁছন জলপাইগুড়ির জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার। বাগানের প্রতিটি বাড়িতে খোঁজ নেন তিনি। আজ শুক্রবার থেকে বাগানে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য কর্তাদের উদ্যোগ দেখে জেলা সিপিএমের প্রশ্ন, এত দিনে ঘুম ভাঙল প্রশাসনের। জেলা কংগ্রেসের এক তাবড় নেতার কথায়, “এত দিন চিকিত্‌সা পেলে কাউকে জোর করে হাসপাতালে ভর্তির প্রশ্ন উঠত না।”

শয্যাশায়ী বিষ্ণু ওরাওঁ। বন্ধ রায়পুর চা বাগানে সন্দীপ পালের ছবি।

অসুস্থদের চিকিত্‌সা ব্যবস্থা নিশ্চিত করাতে এ দিন রায়পুর চা বাগানে যান জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ সভাধিপতি নুরজাহান বেগম। তিনিও শয্যাশায়ী বিষ্ণু ওঁরাওকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিত্‌সা করানোর অনুরোধ করেন। বিষ্ণুর স্ত্রী রীতা বলেন, “এত কিছুর প্রয়োজন নেই বাবু। বাগানটা খোলাতে পারলে দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে। না হলে আমরা সবাই মারা যাব।”

রেডব্যাঙ্কে জন্ডিস আক্রান্ত বাগানর শ্রমিক শেখর নাগারচির গত বুধবার সকালে মৃত্যু হয়। বৃদ্ধা মা এবং তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তিনি। পরিবারের আর্থিক অভাবের কারণে, শেখরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়। এ দিন শেখর নাগারচির বৃদ্ধা মা আখজি বলেন, “রবিবার থেকে ছেলেটা বিছানায় শুয়ে ছিল। তখন যদি কেউ এক বার এসে খোঁজ নিয়ে ওকে হাসপাতালে ভর্তি করাত, তা হলে হয়তো বেঁচে যেত।”

এ দিন বাগানে এসে জগন্নাথবাবু বলেন, “বিনাচিকিত্‌সায় কাউকে মরতে দেওয়া যাবে না। পরিবারের আপত্তি থাকলে শোনা হবে না। হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।” বাগানের কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য বাসুদেব ওঁরাও পাল্টা বলছেন, “ঘরে কেউ বিনা চিকিত্‌সায় থেকে মরবে তা কেউ চান? সকলেই চিকিত্‌সা চান। অসুস্থদের ৮ কিমি দূরে বানারহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া কে দেবে?”

সাহায্যের চাল নিয়ে ঘরের পথে। রেডব্যাঙ্কে রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি।

এ দিনই দুই কর্মাধ্যক্ষ এবং জলপাইগুড়ি সদর পঞ্চায়েত সমিতির বামফ্রন্ট সভাপতি রাখি বর্মনকে নিয়ে রায়পুর বাগানে গিয়ে মৃত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের হাতে দু’হাজার টাকা করে তুলে দেন সভাধিপতি। সেখানে সকলেই ১০০ দিনের কাজ ফের শুরু করানোর অনুরোধ করেন। সভাধিপতি বলেন, “পাঁচ মাস আগে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলাম। সেই সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হলে ছয় জন শ্রমিকের মৃত্যু হত না।”

redbank tea garden malnutrition death of tea labours banarhat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy