Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চাহিদা আছে, তবু মিলছে না হিমুলের দুধ

বাজারে চাহিদা রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার লিটার। অথচ দুধ মিলছে ৪ হাজার লিটারের মত। তাও আবার সকালে। মঙ্গলবার নিয়ে গত দু’দিন শিলিগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকায় বিকালে দুধ মেলেনি। উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহত্‌ দুধ প্যাকেটজাত সংস্থা হিমুলের এহেন দশা নিয়ে গ্রাহকেরা ছাড়াও দুধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৪ ০২:০৭
Share: Save:

বাজারে চাহিদা রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার লিটার। অথচ দুধ মিলছে ৪ হাজার লিটারের মত। তাও আবার সকালে। মঙ্গলবার নিয়ে গত দু’দিন শিলিগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকায় বিকালে দুধ মেলেনি। উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহত্‌ দুধ প্যাকেটজাত সংস্থা হিমুলের এহেন দশা নিয়ে গ্রাহকেরা ছাড়াও দুধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, চাহিদা অনুসারে কোনওদিনই দুধ মিলছে না। অথচ নগদ টাকা নিয়ে সকলেই দুধ কিনতে রাজি।

হিমুল সূত্রের খবর, গত ৫ নভেম্বর শেষবারের মত বিহারের বারৌণি থেকে প্রায় ১৫ লিটার দুধ এসেছিল। বিহারের বকেয়ার পরিমাণ বর্তমানে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। টাকা না পাঠানো সরবরাহকারীরা আর দুধ পাঠাচ্ছেন না। স্থানীয় খড়িবাড়ি, নকশালবাড়ি, বিধাননগরের মত এলাকায় বকেয়া ১৫ লক্ষ টাকা’র মত দাঁড়িয়েছে। এতে দুধ কম দিচ্ছেন স্থানীয় সরবরাহকারীরা। ৪-৬ হাজার লিটারের বেশি দুধ আর মিলছে না।

শহরের বিধানরোডের দুধ বিক্রেতা গোপাল দত্ত বলেন, “চাহিদা থাকলে অর্ধেকও পাওয়া যাচ্ছে না।” বর্ধমান রোডের দুধ বিক্রেতা অরবিন্দ কর্মকার বলেন, “আমার ৬-৭ ক্যারেট দুধের চাহিদা থাকে। পাচ্ছি মাত্র ২-৩টা ক্যারেট। এভাবে কী করে ব্যবসা করব বুঝতে পারছি না।” তাঁরা জানিয়েছেন, প্রতি ক্যারেটে ২০টি করে দুধের প্যাকেট থাকে। অমৃত, সুরভি এবং ডবল টোনড দুধ থাকলে কেবলমাত্র অমৃতই সরবরাহ করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “হিমুলকে এর মধ্যে বহু কোটি টাকা ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। আর্থিক সমস্যা কাটানো হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”

সংস্থা সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই হিমুলে স্থানীয় এবং বিহারের দুধ সরবরাহকারীদের টাকা নগদে সরবরাহ করার প্রক্রিয়া চালু ছিল। তবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তা ‘ট্রান্সফার’ করা হচ্ছিল না। চলতি মাসেই হিমুলের চার কর্মী, অফিসারকে আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া নগদে টাকা লেনদেন করার অভিযোগ ওঠে। সংস্থার কয়েকজন অফিসার, কর্মী জানান, কয়েকমাস আগেই সরকার পিএফ, বিদ্যুত্‌ বিল, সরবরাহকারীদের বকেয়া মিলিয়ে ৩ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা দেয়। এ ছাড়া প্রতি মাসে ২০ লক্ষ টাকা দৈনন্দিন খরচের জন্য দেওয়া শুরু হয়। দুই মাসের টাকাও মেলে। তার পরে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।

এ ছাড়াও সংস্থার পশুখাদ্য কারখানাতেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। ১৪ জন অস্থায়ী শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকায় তাঁদের গত ১৫ দিনের হাজিরা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তাতে তাঁরা গত দুইদিন কাজ না করায় উত্‌পাদন পুরোপুরি বন্ধ ছিল। এ দিন বকেয়া নগদে দিয়ে দ্রুত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়। হিমুলের মূখ্য কার্য নির্বাহী আধিকারিক রচনা ভকত বলেন, “সংস্থার সমস্ত লেনদেন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে এ বার থেকে করা হবে। সমস্ত প্রক্রিয়ার পরিবর্তনের জন্য একটু সমস্যা হচ্ছে। এ মাসের শেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

shortage of milk himul siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE