জমি বিতর্কের জেরে দার্জিলিঙের জামুনি থেকে প্রস্তাবিত পর্যটন প্রকল্প সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা করলেন গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) কর্তৃপক্ষ। বুধবার জিটিএ তরফে পর্যটন দফতরের এক্সিকিউটিঊ ডাইরেক্টর দার্জিলিঙের জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানান। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জিটিএ-র তরফে জেলাশাসককে পাঠানো চিঠিতে অবশ্য প্রকল্পটি সরানোর জন্য কোনও কারণের কথা বলা হয়নি। এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর শুধু বলেছেন, প্রকল্প সরানোর কথা তাঁকে শুধু জানাতে বলা হয়েছে। চিঠি পাঠানোর আগে জিটিএ পর্যটন দফথরে একটি বৈঠকও হয়। সেখানে প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারেরা উপস্থিত ছিলেন।
দার্জিলিঙের জেলাশাসক পুনীত যাদব বলেন, “জিটিএ কর্তৃপক্ষ অন্যত্র প্রকল্পটি সরানোর কথা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছি। যেভাবে তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের জমি জোর করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল, তা কাম্য নয়। জিটিএ কর্তৃপক্ষের জমি খোঁজার জন্য সবসময় আমরা সাহায্য করব।” এই প্রসঙ্গে জিটিএ-র দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য দাওয়া লেপচা শুধু বলেছেন, “আমরা প্রকল্পটি শেষ করব। তবে জামুনির কয়েকজন জমির মালিক যখন জমি দিতে নারাজ, তখন আর সেখানে প্রকল্প হবে না। ধারেকাছে কোথাও প্রকল্পটি হবে। জায়গা ঠিক হয়নি।”
দার্জিলিং থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে জামুনিতে গত ২০১১ সালে জিটিএ পর্যটন প্রকল্পটি শুরু করে। ১৩.৮ একর জমির উপর প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা খরচ হবে বিনোদন পার্ক, ওয়াটার পাক ছাড়াও বুদ্ধমূর্তি বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বিতর্কিত জমির অংশটি বাদ দিয়ে ইতিমধ্যে প্রকল্পের লজ, সুইমিং পুল, টুরিস্ট হাট ও কটেজ তৈরি কাজ চলছে। কৃত্রিম জলাধার তৈরি করে সেখানে বোটিং করার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এরই মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জমির একটি অংশ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ন’জন জমির মালিক ক্ষতিপূরণ ছাড়া তাঁদের জমি জোর করে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জেলাশাসককে অভিযোগ করেন। জমিটিতে ১৪৪ ধারা জারি হয়। প্রকল্পের কাজও বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে দার্জিলিং আদালত থেকে জিটিএ কর্তৃপক্ষ ‘স্টে-অর্ডার’ পেলেও পরে আদালত ফের জমিতে ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ দেয়। এর পর প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। গত ২৭ জুন অভিযোগকারী জমি মালিকদের অন্যতম মনিলাল তামাঙ্গ অভিযোগ করেন, তাঁদের ভয় দেখানো এবং খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে পুলবাজার বিজনবাড়ির জিটিএ সদস্য কাজিমান লোহাগুন-সহ সাত জনকে পুলিশ ধরে। কাজিমানই তাদের আগ্নেয়াস্ত্র দেন বলে বাকিরা পুলিশের কাজে দাবি করেন। বর্তমানে ওই জিটিএ সদস্য জেল হেফাজতে আছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy