Advertisement
E-Paper

তৃণমূল নেত্রীর বার্তা সত্ত্বেও মালদহে জারি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে লোকসভা ভোটে দলের খারাপ ফলের পরে জেলার এক মন্ত্রীর দফতর গিয়েছে। এক মন্ত্রী বদলি হয়েছেন তুলনায় কম গুরুত্বের দফতরে। বদল হয়েছে দলের জেলা সভাপতি পদেও। ভোটের আগে থেকে এ পর্যন্ত একাধিক বার দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব থামাতে বার্তা দিয়ে ফেলেছেন দলনেত্রী। কিন্তু সে বার্তা মালদহে দলের অন্দর পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে কি না, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন জেলার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫২

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে লোকসভা ভোটে দলের খারাপ ফলের পরে জেলার এক মন্ত্রীর দফতর গিয়েছে। এক মন্ত্রী বদলি হয়েছেন তুলনায় কম গুরুত্বের দফতরে। বদল হয়েছে দলের জেলা সভাপতি পদেও। ভোটের আগে থেকে এ পর্যন্ত একাধিক বার দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব থামাতে বার্তা দিয়ে ফেলেছেন দলনেত্রী। কিন্তু সে বার্তা মালদহে দলের অন্দর পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে কি না, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন জেলার তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ।

কারণ, তাঁদের অভিজ্ঞতা, বুধবার রাতেই গোষ্ঠী-কোন্দলের জেরে দলের এক নেতা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছেন। রাজ্যের দুই মন্ত্রী--সাবিত্রী মিত্র বনাম কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর গোষ্ঠীর বিবাদ থামার লক্ষণ নেই।

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বৃহস্পতিবার বলেছেন, “বিবদমান দুই শিবিরকে নতুন করে কিছু বার্তা দেওয়ার নেই। দলের মধ্যে থেকে কী ধরনের কাজ করা যায় না, সংশ্লিষ্ট সকলে ভালই জানেন।

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিষয়টি সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত। কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হলে তিনি নিশ্চয়ই নেবেন।”

স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার ইংরেজবাজারের সদরঘাটে সংঘর্ষে জড়ায় শাসক দলের দুই গোষ্ঠী।

জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সুতীর্থ সাহা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম হন। ঘটনার পরে অবশ্য তৃণমূল কর্মী সুব্রত দাস ওরফে ছোটন-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার থানায় সুতীর্থকে স্রেফ মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের হয়। সুব্রতর পরিবার জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অম্লান ভাদুড়ির বিরুদ্ধে সুব্রতকে মারধরের পাল্টা অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দু’টি অভিযোগেরই তদন্ত চলছে।

জেলা তৃণমূলের অন্দরে সুতীর্থবাবু অম্লানবাবুর ঘনিষ্ঠ এবং অম্লানবাবু সাবিত্রী মিত্রর অনুগামী বলে পরিচিত। পক্ষান্তরে, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ইংরেজবাজার (শহর) লোকাল কমিটির সভাপতি বিশ্বজিৎ রায়ের অনুগামী ছোটন। বিশ্বজিৎকে আবার কৃষ্ণেন্দু-ঘনিষ্ঠ বলেই দলের অনেকে চেনেন।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রবল আকার নিচ্ছে দেখে লোকসভার ভোটের প্রচার-পর্বে মালদহ থেকে ফেরার পথে বিমানবন্দরে হেলিকপ্টারে ওঠার আগেও সাবিত্রী-কৃষ্ণেন্দুদের এক সঙ্গে কাজ করতে বলেছিলেন মমতা। লোকসভা ভোটের পরেও মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই দু’পক্ষকে ফের

সতর্ক করেন তিনি। তখন থেকেই সাবিত্রী দফতরবিহীন মন্ত্রী। পর্যটন থেকে কৃষ্ণেন্দুকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরে। সাবিত্রী জেলায় দলের সভাপতির পদ থেকে সরে গিয়েছেন।

তৃণমূল সূত্রের খবর, তাতেও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না দেখে দলীয় একটি বৈঠকেও জেলার দুই মন্ত্রীকে কড়া বার্তা দেন তৃণমূল নেত্রী। বলেছিলেন, বিবাদ দেখতে দেখতে তিনি ‘ক্লান্ত’।

তার পরেও জেলায় দলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামছে না কেন?

সাবিত্রীর মন্তব্য, “যা জানানোর, রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।” কৃষ্ণেন্দুর বক্তব্য, “বুধবারের ঘটনার পিছনে আমার কোনও ভূমিকা নেই। জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনকে জিজ্ঞাসা করুন।” আর মোয়াজ্জেম হোসেন বলছেন, “এক দিনে এ সমস্যা মেটার নয়। ব্লক এবং জেলা স্তরে দলীয় কমিটিগুলি ঢেলে সাজার জন্য প্রদেশ নেতৃত্বের অনুমতি চেয়েছি। অনুমতি এলেই আশা করি, এই সমস্যা মিটবে।”

স্থানীয় স্তরে তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে অবশ্য দেখা গিয়েছে তাঁরা এখন দলের আর এক গোষ্ঠীর নেতা দুলাল (বাবলা) সরকারের সঙ্গে এক মত। দলীয় রাজনীতিতে সাবিত্রী এবং কৃষ্ণেন্দুর থেকে প্রায় সমদূরত্ব বজায় রেখে চলা দুলাল বলেছেন, “এখনই যদি দলের জেলা সভাপতি শক্ত হাতে রাশ না ধরেন, তবে মালদহে তৃণমূলের অস্তিত্ব বজায় রাখাটাই কঠিন হবে।”

group conflict maldah tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy