Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তাংরুর অপেক্ষায় হরিশ্চন্দ্রপুর, শুরু প্রচার

ওষুধের দোকানের ভিতরে জমাটি আড্ডা চলে। সেখানে চা নিয়ে যেতে হয় রাস্তার উল্টো দিকের চা দোকানী শেখ আসাবিকে। চিনি ছাড়া দুধ চা খান তাংরুদা। যতক্ষণ আড্ডা চলে ততক্ষণ বেশ কয়েকবার আসাবিকে চা নিয়ে ছুটতে হয়।

বাপি মজুমদার
হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৪ ০৭:৫৬
Share: Save:

ওষুধের দোকানের ভিতরে জমাটি আড্ডা চলে। সেখানে চা নিয়ে যেতে হয় রাস্তার উল্টো দিকের চা দোকানী শেখ আসাবিকে। চিনি ছাড়া দুধ চা খান তাংরুদা। যতক্ষণ আড্ডা চলে ততক্ষণ বেশ কয়েকবার আসাবিকে চা নিয়ে ছুটতে হয়। এলাকার মানুষের মত তিনিও তাংরুদাকে নামী গায়ক হিসেবেই চেনেন।

সেই তাংরুদাই এ বার উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন জানতে পারার পর উত্তেজনায় ফুটছেন আসাবি। বারবার তাংরুদার বন্ধুদের কাছে খোঁজ নিচ্ছেন, দাদা কবে বাড়িতে আসবেন। শুধু আসাবি নয়, গায়ক থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা সৌমিত্র রায় কবে আসবেন, অপেক্ষা শুরু হয়েছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে।

এলাকার জমিদারবাড়ির ছেলে সৌমিত্রবাবু। বাবা সীতাংশু রায়রা ছিলেন ছ’ভাই। বড়দা রামপ্রসন্ন রায় ছিলেন রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ। বাইরে পড়াশোনা ও পরে কলকাতায় থিতু হওয়ার পর বাংলা ব্যান্ডের সৌজন্যে পরিচিত হলেও হরিশ্চন্দ্রপুরের সঙ্গে সৌমিত্রবাবুর নাড়ির যোগ রয়েছে। সময় পেলেই তিনি ছুটে আসেন হরিশ্চন্দ্রপুরে। মাঠেঘাটে ঘুরে তাঁর গানের শুটিংও করেন। গত সপ্তাহেও এসেছিলেন। জমিদারবাড়িতে এখনও ৫ দিন ধরে দোল হয়। ওই সময় প্রতিবছর বাড়িতে আসেন তিনি। অনুষ্ঠান না থাকলে হাজির হন পুজোতেও।

বাবা এবং পাঁচ জ্যাঠার মধ্যে এখন একমাত্র অরুণ রায় জীবিত। তাঁকেই বাবার মতো দেখেন সৌমিত্রবাবু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ওই পুরোদস্তুর কংগ্রেসি পরিবারের যোগাযোগ কয়েক দশকের। বুধবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী টেলিফোন করে অরুণবাবুকে তাঁর ভাইপোকে প্রার্থী করার কথা জানান। অরুণবাবু বলেন, “এবার রাজনীতির জগতেও ও সফল হোক, এটাই কামনা করি।” আর সৌমিত্রবাবু বলেন, “এই এলাকায় আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। আমি তাক দুমদুম তাক দুমদুম করে বঙ্গ বাজাতাম বলে ওখানে আমাকে অনেকেই তাংরু বলে ডাকে। মালদহের মানুষের জন্য কাজ করতে পারলে খুব ভাল লাগবে। কিছুদিনের মধ্যেই যাব। রামকানাইয়ের মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করব।”

নাম ঘোষণার পরেও এখনও মালদহের আর এক প্রার্থী চিকিৎসক মোয়াজ্জেম হোসেন জেলায় আসেননি। কিন্তু বসে না থেকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুই কেন্দ্রে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। শুরু হয়েছে দেওয়াল লিখন। জেলার সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “আমরা সময় নষ্ট করতে চাই না। কংগ্রেসকে হারাতেই হবে। আমরা মাঠে নেমে পড়েছি।”

পিছিয়ে নেই সিপিএমও। এদিন সকাল থেকে মালদহ শহরের ইংরেজবাজার পুরসভার তিনটি ওয়ার্ডে পদযাত্রা করেন দক্ষিণ মালদহের সিপিএম প্রার্থী আবুল হাসনাত খান। উত্তর মালদহের সিপিএম প্রার্থী খগেন মুর্মুও নিজের বিধানসভা কেন্দ্র হবিবপুর থেকে প্রচার শুরু করেছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “আমরা প্রচারে নেমে পড়েছি। তবে সৌমিত্র রায়ের সঙ্গে ভূমি ব্যান্ডের নাম জড়িয়ে থাকলেও নিজের ‘ভূমির’ সঙ্গে ওঁর যোগাযোগ নেই। এলাকার সমস্যা, উন্নয়ন এসব কতটা জানে, জানি না। মাঝেমধ্যে কেবল আসেন মাত্র।”

সহ প্রতিবেদন: পীযূষ সাহা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE