তীব্র গরমে খেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তরমুজ।—নিজস্ব চিত্র।
তীব্র দাবদাহে খেতের একটা বড় অংশের তরমুজ খেতেই নষ্ট হচ্ছে। তাই কোনওরকমে বাকি ফসল আগলে রেখে লাভের আশায় জামাইষষ্ঠীর দিকে তাকিয়ে বালুরঘাটের তরমুজ চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রাকৃতিক দুর্যোগে মার খেলেও কৃষি উদ্যান পালন দফতর থেকে কেউ খোঁজ করেনি। এখন তাঁদের একটাই প্রার্থনা, “জামাইষষ্ঠী পর্যন্ত প্রকৃতি যেন সদয় থাকে। তা হলে ফসল বিক্রি করে ভাল দাম পেয়ে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমবে।”
জেলা উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৬০০ বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ হয়। উত্পাদন হয় প্রায় ১৪ টন তরমুজ। বালুরঘাটের আত্রেয়ী নদীর বিস্তীর্ণ এলাকার চর ছাড়াও তপন ও কুমারগঞ্জ এলাকার নদীর চর ও জমিতে প্রতিবারের মত অগ্রহায়ণ মাসে চাষিরা তরমুজ বুনেছিলেন। বৈশাখ থেকেই ফল পেকে বাজারে উঠতে শুরু করেছিল। কিন্তু একটানা বৃষ্টি না হওয়ায় তরমুজে ফেটে, পচে বিঘার পর বিঘা ফসল নষ্ট হয়েছে বলে জানাচ্ছেন চাষিরা। বালুরঘাটের পরাণপুরের তরমুজ চাষি প্রতীম সরকার, বঙ্কু সরকার, সনাতন রায়, ধীরেন মণ্ডলেরা জানান, এ বার আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় তরমুজ আকারে ছোট হয়েছে। তাই দামও তেমন মিলছে না। তাঁদের কথায়, “গতবার নদীর চরে ২৮০০ গাছ বুনে ফলন হয়েছিল ১৪০ কুইন্টাল। এ বার সেখানে দ্বিগুনের বেশি গাছ লাগিয়ে মাত্র ১৮০ কুইন্টাল তরমুজের উত্পাদন হয়েছে।” বিঘা প্রতি ১২-১৬ কুইন্ট্যাল তরমুজের উত্পাদনে প্রায় আড়াই হাজার টাকা খরচ হয় এবং দাম পাওয়া যায় প্রায় ৪ হাজার টাকা। এবারে টানা গরমের জেরে ফলনে মার খাওয়ায় এখনও পর্যন্ত খরচের টাকা ওঠেনি বলে তাঁরা জানান।
চাষিরা জানান, সাধারণত কেজি প্রতি ৫-৬ টাকা পাইকারি দরে জমি থেকে তরমুজ কেনেন ফড়েরা। তা খোলা বাজারে বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৮-১০ টাকা। এ ছাড়া ট্রাকে করে হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, কলকাতা-সহ অন্য জেলায় নিয়ে গিয়ে ১২-১৪ টাকা কেজি দরে সেই তরমুজ বিক্রি হয়। মরসুমের শুরুতে বালুরঘাট থেকে ট্রাক ভর্তি হয়ে তরমুজ অন্য জেলায় নিয়ে যাওয়া হয়। জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে কয়েকদিন তরমুজের ব্যাপক চাহিদার কথা মাথায় রেখে জমির বাকি ফসল রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাত জেগে নদীর চর ও জমিতে শিয়াল ও চোরের হাত থেকে তরমুজ বাঁচাতে হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy