Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দুই পুলিশ সাসপেন্ড, বিতর্ক

এক কংগ্রেস কর্মীকে খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্তের বাড়িতে তল্লাশিতে যাওয়ার কয়েকদিনের মাথায় সাসপেন্ড হয়েছেন দুই পুলিশ অফিসার। মালদহ জেলার চাঁচল থানার ঘটনা। সোমবার ওই দুজন অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শাস্তিপ্রাপ্ত দুই পুলিশ অফিসার হলেন এসআই কাজল চট্টোপাধ্যায় ও এসআই বিমল নন্দী। নির্দেশ পেয়েই এদিন দুপুরে থানা ছেড়ে তারা মালদহে চলে গিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০১:৩৭
Share: Save:

এক কংগ্রেস কর্মীকে খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্তের বাড়িতে তল্লাশিতে যাওয়ার কয়েকদিনের মাথায় সাসপেন্ড হয়েছেন দুই পুলিশ অফিসার। মালদহ জেলার চাঁচল থানার ঘটনা। সোমবার ওই দুজন অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শাস্তিপ্রাপ্ত দুই পুলিশ অফিসার হলেন এসআই কাজল চট্টোপাধ্যায় ও এসআই বিমল নন্দী। নির্দেশ পেয়েই এদিন দুপুরে থানা ছেড়ে তারা মালদহে চলে গিয়েছেন। ওই দুজনকে কেন সাসপেন্ড করা হয়েছে তা নিয়ে জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে কিছু জানাতে চাননি। জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দোপাধ্যায় ছুটিতে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, “দুই পুলিশ অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এটা বিভাগীয় ব্যাপার।”

এই অবস্থায়, দুই পুলিশ অফিসারকে কেন শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে তা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে। মালতিপুরের আরএসপি বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি বলেন, “পুলিশের গাফিলতিতেই ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ সক্রিয় হলে এমন হতো না। মনে হচ্ছে দুই অফিসার সক্রিয় হওয়ায় তাঁদের শাস্তি পেতে হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে যে কিছুই ঘটতে পারে।” উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূরও বিস্মিত। তিনি বলেন, “কংগ্রেস কর্মী খুনে অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশ তৎপর হওয়ায় মনে হচ্ছে দুই অফিসারকে শাস্তি পেতে হল।” তবে চাঁচল-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রশান্ত দাস কিন্তু মনে করেন, ওই দুই অপিসার তল্লাশি চালাতে গিয়ে ভাঙচুরে অবিযুক্ত হওয়ায় শাস্তি পেয়েছেন। তিনি বলেন, “অভিযুক্ত ধরা পড়ুক এটা আমরাও চাই। কিন্তু কারও বাড়ি ভাঙচুর করাটা তো ঠিক নয়। পুলিশও তো আইনের ঊর্ধ্বে নয়!”

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চাঁচলের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের খানপুকুর এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ফিরোজ আলি(৩২) নামে এক কংগ্রেস কর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়। তিনি আবার গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্যা সামিয়া বিবির স্বামী। আবার লোকসভা ভোটের আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে খুন হয়েছিলেন তাঁর কাকা গফুর আলি (৫৫)। দুটি ঘটনাতেই অভিযুক্ত কুবেদ আলিকে ধরতেই শুক্রবার রাতে তাঁর বাড়িতে হানা দেয় ৪ পুলিশ অফিসার সহ বিরাট পুলিশ বাহিনী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোয়ালপাড়া-বাহারাবাদে এলাকা দখলের লড়াইকে ঘিরে রুহুল আমিন ও কুবেদ আলি গোষ্ঠীর বিবাদ দীর্ঘদিনের। রুহুল আমিনের ভাই মৃত ফিরোজ আলি। রুহুল ও কুবেদের নামে বোমাবাজি সহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে রুহুল গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করতেই দুপক্ষের সংঘর্ষে খুন হয় ফিরোজের কাকা গফুর আলি। তার পর ফিরোজ আলি। দুটি ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কুবেদ আলিকে ধরতে তার বাড়ি যায় পুলিশ।

পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, পুলিশ বাড়িতে গিয়েও কুবেদকে পায়নি। তখন বিপক্ষের একাংশ কুবেরদের বাড়িতে পুলিশের সামনেই ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। তাতে হাত মেলান পুলিশকর্মীদেরও একাংশ বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় পুলিশের একাংশই উদ্যোগী হয়ে বিষয়টি কর্তাদের জানান। তদন্তের পরেই দুই এসআইকে সাপসেন্ড করা হয় বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।

শাস্তিপ্রাপ্ত দুই অফিসার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাদের ঘনিষ্ঠ একাধিক পুলিশকর্মী জানান, উপরওলার নির্দেশেই অভিযুক্তের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল। সেখানে আরও একাধিক অফিসার ছাড়াও প্রায় ২৫ জন পুলিশকর্মী ছিলেন। ফলে দুই পুলিশ অফিসারের উপরে কেন কোপ পড়ল তা নিয়ে পুলিশ মহলে প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ সক্রিয় না হওয়াতেই এলাকায় একের পর এক খুন-সহ এলাকা অশান্ত হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ ছিলই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police suspend chachal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE