দিনহাটা কাণ্ড নিয়ে সুর নরম করে ফরওয়ার্ড ব্লক জানাল, ওই ঘটনার পিছনে তৎকালীন রাজ্য সরকার বা সিপিএমের প্ররোচনা ছিল না।
বাম আমলে ২০০৮-এর ৫ ফেব্রুয়ারি দিনহাটায় আইন অমান্য আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে ৫ ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মীর মৃত্যু হয়। প্রতিবার এই দিনে শহিদ দিবস পালন করে ফরওয়ার্ড ব্লক। এ বার তাঁদের দাবি ছিল, শহিদ দিবসের মঞ্চে গিয়ে গুলি চালানোর ঘটনার নিন্দা করতে হবে সিপিএমকে। বৃহস্পতিবার সেই অনুষ্ঠানে সিপিএম নেতারা যাননি। কিন্তু পরে ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ সুর নরম করে বলেন, “আমরা মনে করি না গুলি চালানোর ঘটনায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় সিপিএমের প্ররোচনাও ছিল না।” তাঁর বক্তব্য, “শাসক দলের নেতাকে খুশি করতে পুলিশের এক অফিসারের নির্দেশেই গুলি চালানো হয়েছিল বলে সন্দেহ।”
তা হলে এর আগে বুদ্ধবাবুকে দুঃখপ্রকাশ করতে হবে বলে কেন দাবি তুলেছিলেন? কেনই বা ‘শহিদ দিবসের’ মঞ্চে গিয়ে গুলি চালানোর ঘটনার নিন্দা করতে সিপিএমের কাছে আর্জি জানানো হয়? এই প্রসঙ্গে উদয়নবাবু হাতিয়ার করেছেন এ দিন শহিদ দিবসে সিপিএম নেতাদের অনুপস্থিতিকে। তাঁর বক্তব্য, “কোন লজ্জায় তারা এই মঞ্চে হাজির হলেন না তা জানি না।” সেই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, “আন্দোলনকারী নিরীহ ব্যক্তিদের উপরে গুলি চালানোর ঘটনার নিন্দা করতে বড় শরিক কেন পিছপা হবে? কেনই বা ধিক্কার জানানো যাবে না, সেটা আমাদেরও প্রশ্ন।”
স্থানীয় সিপিএম নেতারা সরাসরি সংঘাত এড়িয়ে জানান, বামফ্রন্টের রাজ্য কমিটিতে আলোচনা না করে তাঁরা এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “উদয়নবাবু এক সঙ্গে সভা করার কথা বলেছিলেন। আমরা জানিয়েছি, বামফ্রন্টে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাব।”
দিনহাটা কাণ্ড নিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের দাবি মেনে বিচার বিভাগীয় কমিশন তৈরি হয়েছিল। সেই কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে সন্তুষ্ট নয় ফরওয়ার্ড ব্লক। তাঁদের দাবি, তদন্ত না করেই ওই রিপোর্ট তৈরি হয়।
এ দিন পুরুলিয়ায় সিপিএমের জেলা সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদন নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন উদয়নবাবু। বলেন, “মাওবাদীরা আমাদের প্রধান-সহ ৭ জন কর্মীকে খুন করেছে। কিন্তু ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ফরওয়ার্ড ব্লক মাওবাদীদের সঙ্গে নিয়ে সিপিএম কর্মীদের খুন করেছে। এটা আমাদের ছোট করার চেষ্টা।” সিপিএমের নেতারা জানান, এই ব্যাপারে প্রকাশ্যে তাঁরা মন্তব্যই করতে চান না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy