Advertisement
০২ মে ২০২৪

দিনহাটায় স্টেডিয়াম কবে হবে, জানেন না ক্রীড়াপ্রেমীরা, ক্ষোভ

আড়াই দশক আগে ৬ একরের কিছু বেশি পরিমাণ জমিটি চিহ্নিত করা হয়েছিল। জমির দু’দিকে সীমানা পাঁচিলও তৈরি হয়েছিল। এখন সেই পাঁচিলের ইট কিছু খুলে পড়েছে, কিছু আবার চুরিও হয়েছে বলে অভিযোগ। দিনের বেলা জমিতে গবাদি পশু চড়ে বেড়ায় আর সন্ধ্যার পরে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে মদ, জুয়ার আসরও বসে বলে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ।

অরিন্দম সাহা
দিনহাটা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৩০
Share: Save:

আড়াই দশক আগে ৬ একরের কিছু বেশি পরিমাণ জমিটি চিহ্নিত করা হয়েছিল। জমির দু’দিকে সীমানা পাঁচিলও তৈরি হয়েছিল। এখন সেই পাঁচিলের ইট কিছু খুলে পড়েছে, কিছু আবার চুরিও হয়েছে বলে অভিযোগ। দিনের বেলা জমিতে গবাদি পশু চড়ে বেড়ায় আর সন্ধ্যার পরে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে মদ, জুয়ার আসরও বসে বলে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। রাজ্যে পরিবর্তন এলেও, দিনহাটার নির্মীয়মান সরকারি স্টেডিয়ামের চিত্র বদলায়নি বলেই দাবি যে মাঠে নিয়মিত নানা খেলার আসর বসার কথা ছিল, সে মাঠে মদ-জুয়ার আসর বসায় ক্ষুব্ধ এলাকার ক্রীড়াপ্রেমীরা। স্টেডিয়ামের কাজ কবে শেষ হবে তার কোনও নির্দিষ্ট আশ্বাস মেলেনি প্রশাসনের থেকেও। উল্টে দায় নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

স্টেডিয়াম তৈরির জন্য ১৯৮৮ সালে দিনহাটা শহর লাগোয়া পুঁটিমারি এলাকায় প্রায় ৬ একর জমি কেনা হয়। সে সময় রাজ্যের যুব কল্যাণ দফতরের দেওয়া আর্থিক বরাদ্দে ওই জমি কেনা হয়। সরকারি নিয়ম মেনেই মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা ও দিনহাটা ১ পঞ্চায়েত সমিতির মালিকাধীন বলে জমিটির ‘দলিল’ তৈরি হয়। তারপর ২৫ বছর পার হয়ে গেলেও স্টেডিয়াম তৈরির জন্য একটিও ইঁট গাঁথা হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে দিনহাটার খেলাধূলো চর্চার একমাত্র ভরসা হয়ে রয়েছে শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সংহতি ময়দান। যেখানে রাজনৈতিক সভা থেকে শুরু করে বিচিত্রা অনুষ্ঠান, মেলা, পুজোর মত অন্য সব কাজকর্মের জন্য খেলা ব্যহত হয় বলে দাবি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই মাঠে নানা অসামাজিক কার্যকলাপও চলার অভিযোগ থাকায় অনেক অভিভাবকই ছেলেমেয়েদের পাঠাতে চান না বলে জানিয়েছেন।

দিনহাটা মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিভুরঞ্জন সাহা বলেন, “এতদিনেও স্টেডিয়াম না হওয়ায় এলাকার ছেলেমেয়েদের একাংশের মধ্যে খেলাধূলো নিয়ে অনীহার তৈরি হতে বসেছে। এতে গোটা মহকুমার ক্রীড়াচর্চা পিছিয়ে যাচ্ছে। আগের সরকারের কাছে বহুবার দরবার করা হয়েছিল। নতুন সরকারের কাছেও ওই ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে আর্জি জানানো হয়েছে। দেখা যাক কী হয়!” বিভুরঞ্জনবাবু দাবি করেছেন, স্টেডিয়ামের জন্য প্রস্তাবিত মাঠেও মদের আসর বসার মত নানা অভিযোগ তাদের কাছে এসেছে। মহকুমা শাসক কাজলকান্তি সাহা বলেন, “স্টেডিয়াম তৈরির প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে।” সে সময় জমি কেনা হলেও, স্টেডিয়াম তৈরির জন্য কোনও বরাদ্দ হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

স্টেডিয়াম তৈরি নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। দিনহাটার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক উদয়ন গুহ দাবি করে বলেন, “বিগত সরকারের ব্যর্থতা শুধু নয়, ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্বে যারা আছেন তাদের কাজ করার মানসিকতা ছিল না। এখন জেলা থেকে নেতাদের এনে সংস্থার রাজনৈতিককরণ করে নানা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করান হচ্ছে। বর্তমান রাজ্য সরকার সাড়ে ৩ বছরে স্টেডিয়ামের জন্য কিছু করেছেন কি না জানি না।”

পূর্ত পরিষদীয় সচিব তথা তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পাল্টা বলেন, “৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকে উদয়নবাবুরা শুধু ওই স্টেডিয়াম নয় দিনহাটায় সেতু, দ্বিতীয় কলেজ, সাব স্টেশনের মত অনেক কিছুই করতে পারেনি। ইতিমধ্যে সে সব কাজ শুরু হয়েছে। স্টেডিয়াম তৈরির জন্যও প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। যারা এতদিন কিছু করতে পারেননি তারা শুধু কিছুদিনের অপেক্ষা করুন।” তবে দিনহাটার ক্রীড়াপ্রেমীরা অবশ্য রাজনৈতিক দাবি-পাল্টা দাবিতে আগ্রহী নন, তাঁরা জানতে চান স্টেডিয়াম কবে তৈরি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dinhata stadium arindam saha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE