Advertisement
E-Paper

দু’বছরেও হয়নি ভবন, সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে

দ্বিতীয় শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার আগে অন্তত চারটি ক্লাস ঘর তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মন্ত্রী-আধিকারিকরা। একটিও হয়নি। তাই উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দোতলা ভবনেই কোনওমতে চলছে ক্লাস। উপাচার্য যে ঘরে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন সেখানেই আপাতত হিন্দি প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ক্লাস হচ্ছে। লাইব্রেরির রিডিং রুম প্রথম বর্ষের ইংরেজি ক্লাস ঘরে পরিণত হয়েছে।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:০৫

দ্বিতীয় শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার আগে অন্তত চারটি ক্লাস ঘর তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মন্ত্রী-আধিকারিকরা। একটিও হয়নি। তাই উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দোতলা ভবনেই কোনওমতে চলছে ক্লাস। উপাচার্য যে ঘরে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন সেখানেই আপাতত হিন্দি প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ক্লাস হচ্ছে। লাইব্রেরির রিডিং রুম প্রথম বর্ষের ইংরেজি ক্লাস ঘরে পরিণত হয়েছে। রেজিস্টারের ঘরের একটি অংশ ব্যবহার হচ্ছে গুদাম হিসেবে। পরীক্ষা নিয়ামকের ঘরে চলছে পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ। চালু হওয়ার দু’ বছর পরেও এমনই হাল কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের। উপাচার্য শুভ্রাংশু শেখর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ছোট জায়গায় অসুবিধে একটু হচ্ছে। স্থায়ী পরিকাঠামোর কাজ জোরকদমে চলছে। আশা করছি, শীঘ্র সেখানে যেতে পারব।” পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষও উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির কাজ অনেকটা এগিয়েছে। অনেক বড় কাজ বলে একটু সময় লাগছে। তাড়াতাড়ি ওই কাজ শেষ হবে।”

২০১২ সালে পুন্ডিবাড়িতে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দোতলা ভবনে কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়। ২০১৩ সাল থেকে পঠনপাঠন শুরু হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম বছর ছ’টি বিষয়ে ১৯৮ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হন। ওই সময়ে কোচবিহার জেলা কৃষি ফার্মের ১৯ একর জমিতে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়। সেই সময় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকলেই আশা করেছিলেন দ্বিতীয় শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগেই অন্তত চারটি ক্লাসঘরের স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি সম্ভব হবে। গত বছরের অগস্টের শেষ সপ্তাহে দ্বিতীয় শিক্ষাবর্ষের জন্য ছাত্র ভর্তি শুরু হয়। সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় ক্লাস। তারপরেও কেটে গিয়েছে পাঁচ মাস। এখনও একটিও ক্লাস ঘর তৈরি করা হয়নি। কয়েক মাস পরেই তৃতীয় শিক্ষা বর্ষ শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের বক্তব্য, স্থায়ী জায়গায় ক্লাস ঘর তৈরি না হলে সমস্যা হবে।

বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪৫২ জন। ক্লাস ঘর রয়েছে ১২ টি। প্রতিটি বিষয়ের জন্য ২ টি করে ক্লাস ঘর রয়েছে। দ্বিতীয় শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার পরে ক্লাস ঘর নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় কর্তৃপক্ষকে। সে সময়ই লাইব্রেরির রিডিং রুম, উপাচার্যের মিটিং রুম, একজন আধিকারিকের ঘরকে ক্লাস ঘর হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ামক সহ চার আধিকারিকের জন্য চারটি করে ঘর রয়েছে। সেগুলি খুব ছোট। এ ছাড়া রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ামকের ঘরের একটি করে অংশ অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সার্ভার রুমে ঘেঁষাঘেষি করে দুজন বসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ জন স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন। এ ছাড়াও ‘গেস্ট টিচার’ রয়েছেন অন্তত ২৭ জন। তাদের বসার জন্য একটি ছোট ঘর রয়েছে।

পড়ুয়াদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও কমন রুম নেই। নেই ক্যান্টিনের ব্যবস্থাও। প্রথম বর্ষের এক ছাত্র বলেন, “ছোট্ট জায়গায় ক্লাস করা খুব কষ্টকর। স্থায়ী জায়গা খুব দরকার।” বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্থায়ী জায়গা পেলে সব সমস্যা মিটে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর সবে দু’বছর হল। একটু অপেক্ষা তো করতেই হবে।”

পরীক্ষার সাত দিনের মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টারের ফল প্রকাশ করল পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২ টা নাগাদ তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের কোচবিহার জেলা দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে ফল প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুভ্রাংশু শেখর চট্টোপাধায় এবং পরীক্ষা নিয়ামক অমল হোড়। এদিন বেলা ৩ টা থেকে ওয়েবসাইটে এবং মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমেও জানতে পারবেন ছাত্রছাত্রীরা। সোমবার থেকে ছাত্রছাত্রীদের হাতে মার্কশিট তুলে দেবেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য জানান, এবারে প্রথম সেমিস্টারে পাশের হার ৮৯.৪৭ শতাংশ এবং তৃতীয় সেমিস্টারে পাশের হার ৯৫.৬১ শতাংশ।

northbengal agricultural university namitesh ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy