কিছু দিন আগেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের আপ্ত সহায়ক অমিত দত্তের বিরুদ্ধে। এ বার পথ দুর্ঘটনায় তাঁর বাঁ পায়ের নীচের অংশের হাড় ভাঙল। শনিবার গভীর রাতে সমরনগর এলাকা থেকে স্কুটার নিয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় তিনি জখম হন বলে অভিযোগ। বর্তমানে শিলিগুড়ির খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে তিনি ভর্তি রয়েছেন। নার্সিংহোমেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁ পায়ের নিচের অংশের হাড় ভেঙে যাওয়ায় অস্ত্রোপচার করাতে হবে। চিকিত্সা সময় সাপেক্ষ। তাঁকে কয়েক মাস বিশ্রামে থাকতে হবে।
অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি কমার্স কলেজে ছাত্র সংসদ গঠনের দিন ছিল। কিন্তু সংগঠনের জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় কলকাতায় থাকায় অধ্যক্ষকে চাপ দিয়ে তা পিছিয়ে দিতে তত্পর হয় টিএমসিপি-র একাংশ। তবে অপর গোষ্ঠী এ দিনই ছাত্র সংসদ গঠন করতে ময়দানে নামে। তাঁদের পাশে থেকে অমিতবাবুও অধ্যক্ষকে ফোন করে এ দিনই ছাত্র সংগঠন গঠন করতে অনুরোধ করেছিলেন বলে পাল্টা অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত ছাত্র সংসদ গঠন হলে অমিতবাবুর পক্ষের প্রার্থীই সাধারণ সম্পাদক হন। নির্ণয়বাবুর পক্ষে যাঁকে সাধারণ সম্পাদক করার কথা, সেই ছাত্রী এবং অপর তিন জনকে নতুন কমিটির কয়েকটি পদে রাখা হয়েছিল। তবে রাতেই তাঁরা পদত্যাগ করেন। তা নিয়ে নির্ণয়বাবুর বিরোধী শিবির উত্ফুল্ল হয়ে ওঠে। ওই আনন্দে এ দিন রাতে সংগঠনের কয়েকজন দল বেঁধে সমরনগর এলাকায় একটি বাগানবাড়িতে পানভোজনের আয়োজন করেন বলে অভিযোগ। অমিতবাবু তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন বলে বিরোধী গোষ্ঠীর অভিযোগ। তাঁদের দাবি, রাতে সেখান থেকে ফেরার পথেই মাল্লাগুড়ি এলাকায় স্কুটার উল্টে অমিতবাবু জখম হন। অল্পবিস্তর জখম হন তাঁর স্কুটারে থাকা আরও একজন আরোহী। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ প্রশাসনের তরফেও এ দিন খোঁজখবর শুরু হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক হওয়ার সুবাদে তাঁকে অনেকেই চেনেন।
সেখান থেকে তাঁকে শিলিগুড়ির খালপাড়ার নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে কাউকেই বিষয়টি জানানো হয়নি। খবর পৌঁছেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর কাছেও। তিনি এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি। দুর্ঘটনার কারণে নার্সিংহোমে ভর্তি হতে হওয়ায় নিয়ম মতো নার্সিংহোমের তরফে শিলিগুড়ি থানায় বিষয়টি জানানো হয়েছে। অমিতবাবু ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। নার্সিংহোমে শয্যাশায়ী অমিত বলেন, “মিথ্যে এ সব নিয়ে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে। ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে হইচই হচ্ছে।”
টিএমসিপি-র একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি কমার্স কলেজে ছাত্র সংসদে টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি তাঁর নিজের পছন্দের প্রার্থী এক ছাত্রীকে সাধারণ সম্পাদক করতে চান। কিন্তু তাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের একটা বড় অংশের মত ছিল না। নির্ণয়বাবু আত্মীয়ের বিয়েতে কলকাতায় থাকায় অধ্যক্ষকে ফোন করে তিনি ছাত্র সংসদ গঠন পিছিয়ে দিতে চাপ দেন। অভিযোগ, অপর পক্ষের হয়ে পাল্টা আসরে নামেন অমিতবাবু। তবে অমিতবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২৫ জানুয়ারি রাতে কলেজের সামনে একটি সরকারি অফিসারে সামনে তাঁকে অসুস্থ হয়ে লুটিয়ে পড়তে দেখেন কয়েকজন। প্রথমে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে এবং পরে সেখান থেকে তিলক রোডের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। একসঙ্গে তিনি অন্তত ৬টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেন বলে চিকিত্সকরা জানিয়েছিলেন। পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা বলে দলেরই একাংশের অনুমান। ফের এই ঘটনায় তাঁর পরিচিত মহল উদ্বিগ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy