চা শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১২ নভেম্বর দার্জিলিঙে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার চা শ্রমিক সংগঠন। শুক্রবার দার্জিলিং তরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন লেবার ইউনিয়নের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাধারণ ধর্মঘট হলেও, পর্যটন এবং শিক্ষাকে বন্ধের আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছে বলে সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে। চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে ছ’মাসে ছ’টি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হলেও, সমাধান সূত্র বের হয়নি। তার জেরেই মাস দু’য়েক আগে থেকেই ডান-বাম মিলিয়ে চা শ্রমিকদের ২১টি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ আগামী ১১ এবং ১২ নভেম্বর চা বাগানে দু’দিনের ধর্মঘট এবং ১২ নভেম্বর দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং উত্তর দিনাজপুর ও কোচবিহারের ১২ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘট ডাকার প্রস্তাব দেয়।
মোর্চার চা শ্রমিক সংগঠনের মুখপাত্র মিলন প্রধান বলেন, “যৌথ মঞ্চের প্রস্তাব মতো দার্জিলিঙে সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তবে এখন পর্যটন মরসুম চলছে, সে কারণে পর্যটন এবং পর্যটকদের বন্ধের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। স্কুল কলেজের পরীক্ষাকেও ছাড় দেওয়া হয়েছে।”
তিন বছর অন্তর চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি হয়। শ্রমিক, মালিক এবং সরকারপক্ষের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মজুরি চুক্তি হয়। সেই নিয়ম মেনেই ২০১১ সালের পর চলতি বছরে মজুরি চুক্তি নিয়ে বৈঠক শুরু হয়। একের পর এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিষ্ফলা হতে থাকায় রাজ্য সরকারের তরফে শ্রমিক সংগঠনকে একাধিক প্রস্তাবও দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। তবে যৌথ মঞ্চের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নু্যনতম মজুরি কাঠামো গড়ে তার ভিত্তিতেই মজুরি ঘোষণা করতে হবে। জট কাটাতে গত ৫ নভেম্বর কলকাতায় শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক চা শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। টানা দেড় ঘণ্টার সেই বৈঠকে ১১ এবং ১২ নভেম্বরের ধর্মঘট পিছিয়ে দিতে শ্রমমন্ত্রী অনুরোধ করেন। যৌথমঞ্চের তরফে জিয়াউল আলম বলেন, “সে দিনের বৈঠকে শ্রমমন্ত্রী নতুন কোনও প্রস্তাব দিতে পারেননি। তাই ধর্মঘট থেকে সরে আসারও কোনও প্রশ্ন নেই।” এ দিকে ধর্মঘটের প্রস্তুতি হিসেবে শুক্রবার বিক্ষোভ সমাবেশও শুরু করেছে যৌথ মঞ্চ। শুক্রবার ধূপগুড়িতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে যৌথ মঞ্চ। আগামী ১১ নভেম্বর প্রোগ্রেসিভ পিপলস পার্টির চা শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দ্রুত মজুরি সমস্যার জট কাটাতে কলকাতার ধর্মতলাতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপালকেও স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পিপিপি সুপ্রিমো কিরণ কালিন্দী।
এ দিকে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের তরফে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক তেজকুমার টোপ্পো বলেন, “শ্রমমন্ত্রীর প্রস্তাবটি নিয়ে আমরা বিবেচনা করতে চাই। সে কারণে আগামী রবিবার মালবাজার শ্রমিক সংগঠনের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।” এর আগে গত ৪ নভেম্বর আদিবাসী বিকাশ পরিষদ ধর্মঘটে নৈতিক সমর্থন রয়েছে বলে ঘোষণা করেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy