Advertisement
E-Paper

প্রাক্তন ছায়াসঙ্গীর সঙ্গেই লড়তে পারেন মন্ত্রী

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের ছায়া সঙ্গী হয়েও তৃণমূলের নীতি-আদর্শ ঠিক পথে চলছে না বলে সম্প্রতি তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। এ বার শিলিগুড়ি পুরভোটে নির্দল প্রাথী হিসাবে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেললেন। তিনি অরবিন্দ ঘোষ। তিনি যে এলাকার বাসিন্দা সেই ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসাবে তাঁর দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে তৃণমূল শিবির কিছুটা বিব্রত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৬

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের ছায়া সঙ্গী হয়েও তৃণমূলের নীতি-আদর্শ ঠিক পথে চলছে না বলে সম্প্রতি তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। এ বার শিলিগুড়ি পুরভোটে নির্দল প্রাথী হিসাবে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেললেন। তিনি অরবিন্দ ঘোষ। তিনি যে এলাকার বাসিন্দা সেই ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসাবে তাঁর দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে তৃণমূল শিবির কিছুটা বিব্রত।

তৃণমূলের একটি সূত্রই জানিয়েছে, গৌতমবাবু যে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বরাবর জিতে এসেছেন সেটা এ বার মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। গৌতমবাবুকে যদি পুরভোটে লড়তে হয় তবে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই তাঁর দাঁড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলের অন্দরেই আলোচনা চলছে। তা ছাড়া অরবিন্দবাবু এ বার প্রার্থী হবেন না বলেই ঠিক করেছিলেন। কিন্তু রবিবার তাঁর বাড়িতে এলাকার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা রীতিমতো বৈঠক করে অরবিন্দবাবুকে নিদর্ল প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করানোর বিষয়টি চূড়ান্ত করেন।

শুধু তাই নয় তৃণমূলের নীতি আদর্শ যে সঠিক পথে না এগোনোয় তিনি দল ছেড়েছিলেন সে কথা জানিয়ে দেন। অরবিন্দবাবু বলেন, “বদলা নয় বদল চাই, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এসবই ছিল তৃণমূলের ঘোষিত নীতি। তা নিয়েই মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাস্তবে যখন দেখলাম সেই পথে চলছে না, যে স্বপ্ন দেখেছিলাম সেই মতো স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না তখন দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তবে ব্যক্তি বিশেষ কাউকে দোষারোপ করতে তিনি নারাজ। অরবিন্দবাবুর দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত শোনার পর তৃণমূলের তরফেও এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “কে ভোটে দাঁড়াবে, না দাঁড়াবে সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। সবারই ভোটে দাঁড়াবার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। এ নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না।”

অরবিন্দবাবু বলেন, “গৌতমবাবু এই ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াবেন বলে আগে তো কিছু শুনিনি। এ বার প্রার্থী হব না বলেই ঠিক ছিল। কিন্তু ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশ যে ভাবে অনুরোধ করেছেন সেটা উপেক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ভোটে জেতা হারা বিষয় নয়। সকলের জন্য কিছু করতে চাই, সকলকে নিয়ে চলতে চাই এটাই বড় ব্যাপার বলে মনে করি।” বরাবর ওই ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেস, তৃণমূল, বিজেপি মনোভাবাপন্নদের সমর্থনও পেয়েছেন। ওই ওয়ার্ড থেকে বরাবর বামফ্রন্টের প্রার্থী হন সিপিআই-এর জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী। গত বার ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় তাঁর স্ত্রী দাঁড়িয়েছিলেন। দলীয় সূত্রে খবর, এ বছরও ওই ওয়ার্ডে তাঁকে বামফ্রন্টের প্রর্থী হতে অনেকেই বলেছেন। যদিও উজ্জ্বলবাবু প্রার্থী হতে চান না বলে দলীয় নেতাদের জানিয়েছেন। তা ছাড়া এ বার বিজেপিও প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমস্ত ওয়ার্ডে।

অরবিন্দবাবু অবশ্য বরাবরই নির্দল হিসাবেই ওই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে দাবি করা হয়, ১৯৯৯ সালে যখন প্রথম প্রার্থী হন সে বার বাড়ি থেকেও বাধা ছিল। তা উপেক্ষা করেই প্রার্থী হয়ে জিতেছিলেন অরবিন্দবাবু। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে পুর নির্বাচনে দাঁড়াবেন না ভেবেছিলেন। সে বার বাড়ির লোকই তাঁকে দাঁড়াতে চাপ দেন। বাবা গৌরাঙ্গ প্রসাদবাবু তখন ছেলেকে বলেছিলেন এক বার জিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলে। যে কাজ করেছ সেটা ভুল হল না মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হল তা প্রমাণ করতেই এ বার দাঁড়ানো দরকার। না হলে পালিয়ে যাওয়া হবে। যদি বাসিন্দারা গ্রহণ না-করেন তবে বুঝতে হবে ভুল হয়েছে, শুধরে নিতে হবে। সেই কথাকে মাথায় রেখেই পরিচিতদের পরামর্শে ফের দাঁড়িয়েছিলেন এবং জেতেন বলে জানান অরবিন্দবাবু। ২০০৯ সালে ওই ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যায়। অন্য ওয়ার্ড থেকে দাঁড়ানোর প্রস্তাবও এসেছিল কিন্তু দাঁড়াননি তিনি।

এর আগে থেকেই তিনি তৃণমূলের নীতি আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন বলে জানিয়েছেন। তবে নির্দল কাউন্সিলর হিসাবে জিতেছেন বলে তৃণমূলে তখন যোগ দিতে চাননি। ২০০৯ সালের শেষের দিকে কাউন্সিলর পদের মেয়াদ ফুরলে এর পর তৃণমূলে যোগ দেন। ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি এলাকায় উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী খগেশ্বর রায়ের সমর্থনে দলের কাজের দায়িত্বে ছিলেন। খগেশ্বরবাবু জেতেন। এর পর ২০১১ সালে গৌতমবাবু ওই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দাঁড়ালে তাঁর হয়ে সংগঠনের প্রচারের পুরভাগে ছিলেন অরবিন্দবাবু। গৌতমবাবু মন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর বিধানসভা এলাকার উন্নয়ন কাজ কোথায় কী হবে সে ব্যাপারে তদারকির দায়িত্ব বর্তায় অরবিন্দবাবুর উপরেও। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি দলে এসেছিলেন তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না দেখে হতাশ হন বলে জানিয়েছেন। এর পরেই গত জুন মাসে দল ছাড়েন।

siliguri gautam deb tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy