পুরসভা ভোটের মুখে কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করতে ‘রক্তক্ষয়ী’ আন্দোলনের জন্য তৈরি থাকার পরামর্শ দিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ। রবিবার কোচবিহার পান্থনিবাসে আয়োজিত দলের মহিলা সংগঠন অগ্রগামী মহিলা সমিতির জেলা কনভেনশনে বক্তৃতা করার সময়ে তিনি ওই প্রসঙ্গ তোলেন।
এ দিন কনভেনশনে উদয়নবাবু পুলিশের বিরুদ্ধে মাতালহাটের নাবালিকার ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের সকলকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর কথায়, “ছাত্রীটি তিন জনের নাম বলার পরেও পুলিশ তৃণমূলের দু’জন নেতাকে আগলে রেখেছে। যতক্ষণ না দোষীদের গ্রেফতার করা হয় আন্দোলন চলবে। দরকারে আবার সেই রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পথে যেতে হবে।” আজ, সোমবার মাতালহাট কাণ্ডে দিনহাটায় পথ অবরোধ ও জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে জেলার কোচবিহার, দিনহাটা, তুফানগঞ্জ ও মাথাভাঙার চারটি পুরসভার ভোট হওয়ার কথা। তারমধ্যে দিনহাটা, তুফানগঞ্জ ও মাথাভাঙা বামেদের দখলে রয়েছে। কোচবিহার পুরসভার ক্ষমতায় আছে তৃণমূল। গত বিধানসভা, পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে জেলায় তৃণমূলের শক্তি বেড়েছে। বামেদের হাত থেকে জেলা পরিষদ, লোকসভা, চারটি বিধানসভা ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। বেশিরভাগ পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতেও জিতেছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে বিরোধী শক্তি হিসাবে বিজেপির উত্থান কোচবিহারেও বাম নেতাদের চিন্তা বাড়িয়েছে। বিরোধী দল হিসেবে আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে দল আন্দোলন করতে পারছে না বলে ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্দরেই সমালোচনা শুরু হয়েছিল। পরিস্থিতি সামলাতে দিনহাটা পুরসভায় খোদ উদয়নবাবুকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করে করে ভোটে যাওয়ার দাবিও উঠেছে দলের অন্দরে। সব মিলিয়ে দলের কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করার দাওয়াই হিসেবে ‘রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে’র জন্য তৈরি থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন নেতাদের একাংশ।
নাম না করে সিপিএম বিরোধিতার বার্তাও দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। কনভেনশনে জেলা সম্পাদক বলেন, “লাল, নীল, সবুজ- কেউ ফরওয়ার্ড ব্লককে ঠেকাতে পারবে না। আগেও ফরওয়ার্ড ব্লককে শেষ করার চক্রান্ত সফল হয়নি।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা অবশ্য এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে বলেন, “বামফ্রন্ট ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। কোন প্রসঙ্গে কী ভাবে মন্তব্য করা হয়েছে, তা জেনেই কিছু বলতে পারব।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “আর বিধানসভায় জেতা সম্ভব নয়, বুঝেই উদয়নবাবু পুরভোটে দাঁড়াতে চাইছেন। যাঁরা এসব বলছেন, তারা আগে রক্তদান শিবির করে মানুষের পাশে দাঁড়ান।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy