Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রতিমা তোলা নিয়ে গোলমাল, আধঘণ্টা দাঁড়িয়ে রইল ট্রেন

রাধিকাপুর থেকে কাটিহারগামী একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেনে প্রতিমা তোলাকে কেন্দ্র করে দু’দল যাত্রীদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি হল। বৃহস্পতিবার বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ স্টেশনে। ওই ঘটনার পর ট্রেনে থাকা একদল যাত্রী বেআইনিভাবে ট্রেনে প্রতিমা তোলা বন্ধ করার দাবিতে প্ল্যাটফর্ম চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এই ভাবেই ট্রেনে প্রতিমা নিয়ে ওঠানামা করলেন যাত্রীরা। আটকে রইল কামরার দরজা। ছবি: গৌর আচার্য।

এই ভাবেই ট্রেনে প্রতিমা নিয়ে ওঠানামা করলেন যাত্রীরা। আটকে রইল কামরার দরজা। ছবি: গৌর আচার্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৭
Share: Save:

রাধিকাপুর থেকে কাটিহারগামী একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেনে প্রতিমা তোলাকে কেন্দ্র করে দু’দল যাত্রীদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি হল। বৃহস্পতিবার বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ স্টেশনে। ওই ঘটনার পর ট্রেনে থাকা একদল যাত্রী বেআইনিভাবে ট্রেনে প্রতিমা তোলা বন্ধ করার দাবিতে প্ল্যাটফর্ম চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন।

নিরাপত্তার অভাব বোধ করে চালকেরা ট্রেন ইঞ্জিন ছেড়ে নীচে নেমে যান। আরপিএফ ও স্টেশন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে প্রায় আধঘন্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। রায়গঞ্জ স্টেশনে দু’মিনিট স্টপ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও এ দিনের গোলমালের জেরে ট্রেনটি স্টেশনে আধঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকে। রায়গঞ্জ স্টেশনের সুপার জয়ন্ত চন্দ বলেন, “কিছু যাত্রী ট্রেনে বেআইনিভাবে প্রতিমা তোলায় সামান্য সমস্যা হয়েছে। স্টেশন কর্তৃপক্ষ ও আরপিএফের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।”

কাটিহারগামী ওই প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি এ দিন রাধিকাপুর থেকে ছেড়ে বেলা ১১টা ১৩ মিনিটে রায়গঞ্জ স্টেশনে এসে দাঁড়াতেই ঝিটকিয়া, কাঁচনা, ধাঁচনা, বারসই, মুকুরিয়া, সালমারি, ঝাউয়া, সোনালি ও কাটিহারগামী কয়েকশো যাত্রী সরস্বতী প্রতিমা নিয়ে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করেন। ট্রেনের সব কামরার দরজা আটকে যায়।

রাধিকাপুর, বাঙালবাড়ি, কালিয়াগঞ্জ ও বামনগ্রামের যাত্রীরা ট্রেন থেকে রায়গঞ্জ স্টেশনে নামতে গিয়ে অসুবিধায় পড়েন। তেমনই রায়গঞ্জ স্টেশন থেকে সাধারণ নিত্যযাত্রীরাও কাটিহারগামী ওই ট্রেনে উঠতে গিয়ে বাধা পান। তখনই প্রতিমাবহনকারী যাত্রীদের সঙ্গে যাত্রীদের হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তখন এক দল যাত্রী প্রতিমা নিয়ে ইঞ্জিনে ওঠার চেষ্টা করলে ট্রেনের দুই চালক নিরাপত্তার অভাবের কারণ দেখিয়ে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। দু’দল যাত্রীদের মধ্যে প্রবল হই হট্টগোল শুরু হয়।

কালিয়াগঞ্জের স্কুলপাড়া এলাকার বাসিন্দা সোনালি চক্রবর্তী, বাঙালবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী প্রহ্লাদ বর্মন বলেন, “রায়গঞ্জ স্টেশনে ট্রেনটি এসে দাঁড়ানোর পর বহু যাত্রী একসঙ্গে প্রতিমা নিয়ে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করেন। আমরা দীর্ঘক্ষণ ট্রেনে আটকে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাঁরা জানান, ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে পরে যাত্রীরা স্টেশন কর্তৃপক্ষ ও আরপিএফের কাছে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এর পর এক দল নিত্যযাত্রী ট্রেনে বেআইনিভাবে প্রতিমা তোলা বন্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এর পর স্টেশন কর্তৃপক্ষ ও আরপিএফ দু’পক্ষের যাত্রীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলেও শতাধিক যাত্রী ট্রেনের বিভিন্ন কামরায় প্রতিমা তোলেন। তার জেরে কামরায় জায়গা না পেয়ে বহু যাত্রী এ দিন গন্তব্যে যেতে পারেননি। নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধঘন্টা পরে পৌনে ১২টা নাগাদ ট্রেনটি কাটিহারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

রায়গঞ্জের উকিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক বাবু সরকারের এ দিন ট্রেনে চেপে কাটিহার যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গোলমাল ও ভিড়ের চাপে তিনি ট্রেনে উঠতে পারেননি। তিনি জানান, যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখালেও ভবিষ্যতে ট্রেনের প্যাসেঞ্জার কামরায় প্রতিমা তোলা নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে স্টেশন কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনও আশ্বাস দেননি। তিনি বলেন, “স্টেশন কর্তৃপক্ষ আগাম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বা মাইকে ঘোষণা করে যাত্রীদের লাগেজ ভ্যানে প্রতিমা তোলার নিয়মটি জানিয়ে দিলে এমন ঘটনা ঘটত না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

train raiganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE