দীর্ঘদিন নেতৃত্বে থাকা প্রবীণরা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ‘অকেজো’ হয়ে পড়েছেন কেন, এই প্রশ্নে সিপিএম প্রভাবিত প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের দার্জিলিং জেলা দফতরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এক সপ্তাহ আগে ওই ঘটনা ঘটলেও তা নিয়ে সিপিএমের অন্দরে টানাপড়েন চলছেই। অবিলম্বে ‘বয়স্ক’দের পদ থেকে সরিয়ে নতুন মুখ আনার দাবি শিক্ষক সংগঠনে জোরালো হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত নবীন সদস্যদের ক্ষোভ সামাল দিতে প্রবীণদের গা ঝাড়া দিয়ে আসরে নামার নির্দেশ দিতে বাধ্য হয়েছেন দলের জেলা নেতৃত্ব। ফলে, সোমবার অল বেঙ্গল প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এবিপিটিএ) পক্ষ থেকে শিলিগুড়ি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মুকুল ঘোষকে স্মারকলিপি দিয়ে মর্জিমাফিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। ওই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিও তুলেছেন প্রবীণরা। সিপিএমের দার্জিলিং জেলার কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের বোর্ড মিটিঙে সংগঠনের সদস্যদের যাওয়াই উচিত হয়নি। সেখানে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও ওঁরা প্রতিবাদ করেননি। এতে অনেকের মনেই ক্ষোভ জমেছে। দফতরে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।”
অল বেঙ্গল প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রের খবর, সম্প্রতি শিলিগুড়ি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মুকুল ঘোষ বোর্ড মিটিং ডেকে প্রায় ৩০০ জন শিক্ষকের বদলির নির্দেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। ওই মিটিঙে সিপিএমের তরফে ৪ জন সদস্য থাকলেও ৩ জনই আগের চেয়ারম্যানের আমলে নেওয়া বদলির নির্দেশ বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদই করেননি। তাঁদের ওই ‘ভুল’ কাজের জন্য কেন সংগঠনের অন্য শিক্ষকদের মাসুল দিতে হবে সেই প্রশ্নেই ক্ষোভ দানা বাঁধে। গত সপ্তাহে এবিপিটিএ-এর শিলিগুড়ির বাগরাকোটের সদর দফতরে তা নিয়ে আলোচনার সময়ে অপেক্ষাকৃত নবীন সদস্যরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শুরু হয় চেয়ার ছোঁড়া। ‘বুড়োদের’ পদ থেকে সরানোর দাবি তুলে কিছুক্ষণ তুমুল তাণ্ডব চলে। সেই সময়ে সংগঠনের যে ৪ জন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদে রয়েছেন, তাঁদের পদ ছেড়ে সরে দাঁড়ানোর দাবিতে স্লোগানও ওঠে। সদস্যদের একাংশ সকলকে শান্ত করেন। এবিপিটিএ-এর একাধিক সদস-সদস্যা জানান, বয়সের ভারে কাবু নেতাদের দলের সব সংগঠন থেকেই সরে দাঁড়ানো উচিত।
তবে এবিপিটিএ সূত্রের খবর, সংগঠনের ৪ জন সদস্য শিলিগুড়ির প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের বোর্ডে রয়েছেন। তাঁরা নির্বাচিত হয়েই ৩ বছরের জন্য ওই পদে আছেন। তাঁরা হলেন, বিকাশকলি বিশ্বাস, অঞ্জলি কুন্ডু, রজনীকান্ত রায় ও মিহির কুমার বসু। বিকাশকলিবাবু মহকুমা পরিষদের সদস্যও। অঞ্জলি দেবী ও মিহিরবাবু প্রাথমিক শিক্ষকতায় অবসরের মুখে রয়েছেন। তুলনায় রজনীকান্তবাবু কম বয়স্ক। এবিপিটিএ সূত্রেই জানা গিয়েছে, বোর্ড মিটিঙের দিন যখন আগের চেয়ারম্যান সমর চক্রবর্তীর আমলে নেওয়া ৩০০ জনের বদলির নির্দেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়, তখন বিকাশবাবু ছাড়া কেউ আপত্তি নথিভুক্ত করাননি। তাই বোর্ড মিটিঙের পরে সংগঠনের জেলা দফতরে প্রথম বৈঠকেই বিষয়টি সরব হন অনেকেই। হইচই করে প্রতিবাদ জানিয়ে বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করা হয়নি কেন সেই প্রশ্নেও কৈফিয়ৎ চান সংগঠনের অন্য সদস্য-সদস্যারা। তা নিয়ে সদুত্তর না মেলায় শুরু হয় চেয়ার ছোঁড়াছুড়ি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy