পুলিশের সামনেই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে দিয়ে জোর করিয়ে ‘মুচলেকা’য় সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার বিকেলে জলপাইগুড়ির নগর বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান প্রমীলা বর্মনকে স্মারকলিপি দিতে যায় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত তাঁকে ঘেরাও করে রাখে তৃণমূল। সে সময়ই প্রধানকে জোর করে একটি মুচলেকায় সই করতে বাধ্য করা হয় বলা অভিযোগ। তিনি বলেন, “স্মারকলিপি দেওয়ার নাম করে এসে তৃণমূল নেতা কর্মীরা জোর করে একটি কাগজে সই করিয়ে নেয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘেরাও করে ফেরার সময়ে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে চলে যায়।” পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, “ঘেরাওয়ের খবর পেয়ে পুলিশ এসেছিল। পুলিশ যদি সক্রিয় হতো তবে এই ঘটনা হত না।” মঙ্গলবার প্রমিলা দেবী জলপাইগুড়িতে এসে বিডিওর কাছে লিখিতভাবে সব ঘটনা জানিয়েছেন।
একশো দিনের কাজে রাস্তা তৈরি, জবকার্ড তৈরি নিয়ে নানা অনিয়মের পাঁচ দফা অভিযোগের কথা এই মুচলেকায় উল্লেখ করে সবক্ষেত্রেই তিনি জড়িত রয়েছেন বলে প্রধানকে সই করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে সিপিএমের অভিযোগ। সেই সময়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেসের সদস্যও প্রধানের ঘরে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে দিয়েও জোর করে সই করানো হয়। সোমবার রাতেই গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় তৃণমূল সদস্যরা। মঙ্গলবারেও তৃণমূলের বিক্ষোভে পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ ছিল। এই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দলগুলি। ঘেরাও চলার সময়ে পুলিশ কর্মীরা উপস্থিত থাকলেও দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার প্রশাসন কেন তালা খুলতে উদ্যোগী হল না তার জবাবদিহি চেয়েছে বিরোধীরা। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিডিও শ্রদ্ধা সুব্বা বলেন, “গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলি তদন্ত করে দেখা হবে। সেই সঙ্গে গত সোমবারের ঘটনার বিবরণও প্রধানকে লিখিতভাবে জমা দিতে বলা হয়েছে।” বিডিও জানিয়েছেন, আজ, বুধবার পুলিশের সহায়তায় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস খোলার ব্যবস্থা করা হবে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩ টি আসনের মধ্যে বামেরা জয়ী হয় ১০টি আসনে। কংগ্রেস দখল করে ৩টি আসন। তৃণমূল কোনও আসনই পায়নি। বামেদের দাবি, সদস্য না থাকায় জোর খাটিয়ে তৃণমূল পঞ্চায়েত দখল করতে চাইছে। কোতোয়ালি থানার আইসি আশিস রায়ের দাবি, “প্রধান পুলিশকর্মীদের থেকে কোনও সাহায্য চাননি। চাইলে পদক্ষেপ করা হতো।”তৃণমূলের নগর বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সভাপতি দয়াল চন্দ্র রায়ের দাবি, “জোর করে কোন কিছু সই করানো হয়নি। ”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy