ছন্নছাড়া ফুটবল উপহার দিয়ে শুরু হল কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবল প্রতিযোগিতা ২০১৪। তুলনামূলক ভাল দল নিয়েও ম্যাচের শেষে খালি হাতেই ফিরতে হল শিলিগুড়ির বিবেকানন্দ ক্লাবকে। শুধুমাত্র হিসাব কষে শক্তিশালী দলকে হারিয়ে পরের রাউন্ডে চল গেল শিলিগুড়ি কিশোর সঙ্ঘ। খেলার ফল কিশোর সঙ্ঘের পক্ষে ২-০। খেলার পরে নিম্ন মানের রেফারিং হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দু ’দলই।
ম্যাচ জিতেও খেলা পরিচালনা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন কিশোর সঙ্ঘের কোচ চন্দন গুরুঙ্গ। তিনি বলেন, “রেফারির কয়েকটি সিদ্ধান্ত ম্যাচের গতি নষ্ট করে দিয়েছে। পরের রাউন্ডে আরও ভাল ম্যাচ পরিচালনা আশা করব। নক আউট প্রতিযোগিতায় একটা ভুলেই ম্যাচ শেষ হয়ে যেতে পারে।” তবে বিপক্ষকে জেতার পরেও পুরো নম্বর দিচ্ছেন তিনি। তিনি জানান, বিপক্ষে একাধিক বিদেশী খেলোয়াড় ও বড় চেহারার খেলোয়াড় থাকায় রক্ষণে জোর দিয়ে কাউন্টার আক্রমণের উপরে জোর দিয়েছিলেন। তাতেই সাফল্য আসায় তিনি খুশি। উল্টোদিকে দলের খেলায় হতাশ বিবেকানন্দের কর্মকর্তারা। ভাল দল গড়েও এভাবে সুযোগ নষ্ট করায় হতাশায় খেলার শেষে দ্রুত মাঠ ছেড়ে যান তাঁরা।
গোটা ম্যাচ জুড়েই অজস্র ভুল পাস, দিশাহীন ফুটবল খেলেছে দু’দলই। খেলা কেমন হয়েছে তার প্রমাণ গোটা ম্যাচে মাত্র তিনটি কর্ণার আদায় করতে পেরেছে দু’দল মিলিয়ে। সুযোগ বেশি পেয়েছে বিবেকানন্দই। কিন্তু গোলের সামনে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলায় একাধিক সোনালি সুযোগ নষ্ট হয়। প্রথমার্ধে গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোলে বল ঠেলতে পারেননি বিবেকানন্দের স্ট্রাইকার। দ্বিতীয়ার্ধেও একবার ক্রিস্টোফার ও আরেকবার অর্ঘ চক্রবর্তী সুযোগ নষ্ট করেন। প্রধমার্ধে কিশোরের পক্ষে সত্যেন রায় যে গোলটি করেন তার জবাব অবশ্য বিবেকানন্দের গোলরক্ষকের কাছে ছিল না। তিনজনকে পাশ কাটিয়ে যে গোলটি তিনি করেন, তা অনেকদিন মনে রাখার মত। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য জামশেদ আলির গোলটির মধ্যে তার নিজের চেয়ে বিপক্ষের রক্ষণের কৃতিত্ব বেশি। তাঁদের ভুল পাস পায়ে পেয়ে যান জামশেদ। তা থেকে গোল করতে ভুল হয়নি তাঁর।
সোমবার শিলিগুড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে প্রায় দর্শক শূন্য গ্যালারির সামনে বেলুন উড়িয়ে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষ। উপস্থিত ছিলেন কার্যকরী সভাপতি কুন্তল গোস্বামী, ফুটবল সচিব মানস দে প্রমুখ। এদিন ৩০ হাজার দর্শকাসন বিশিষ্ট স্টেডিয়ামের এক দশমাংশই ছিল খালি। বিএসএনএল প্রান্তের গ্যালারিতে একটিও লোককে দেখা যায়নি। সাই প্রান্তে জনা ২০-২৫ দর্শক হাজির ছিল। বাকি দু’দিকে মিলিয়ে হাজার দেড়েক লোক হবে। তবে ক্রীড়া পরিষদ সচিব অরূপরতনবাবু আশাবাদী পরের ম্যাচগুলোতে অন্তত গড়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক আসবেন। তিনি বলেন, “বরাবরই প্রথম ম্যাচে দর্শক মক থাকে। প্রতিযোগিতা যত গড়াবে তত লোকসংখ্যা বাড়তে থাকবে।”