সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের ক্ষোভ।
ফের সিভিক ভলান্টিয়ারদের সভা ভেস্তে দেওয়ার অভিযোগ উঠল মালদহ জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে। সভা করতে জড়ো হওয়া সিভিক ভলান্টিয়ারদের এ দিন পুলিশ লাঠিপেটাও করেছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়ার ঘটনা। আগেও দু’দফায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের সভা ভেস্তে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল মালদহ জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে। গত ৬ সেপ্টেম্বর চাঁচল এবং তার সপ্তাহখানেক পরে মালদহের পাকুয়ায়ও একই ভাবে সভা ভেস্তে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এ দিন সিভিক ভলান্টিয়ারদের সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ও জেলা সম্পাদককে মারধর করে থানায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে, এ দিন দুপুর ১২টা থেকে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। পুলিশের দাবি, অনুমতি না নিয়েই এ দিন সভার আয়োজন করা হয়েছিল। যদিও সিভিক ভলান্টিয়ারদের সংগঠনের দাবি, রাজ্যের অন্য কোনও জেলায় সভা করতে বারবার বাধা দেওয়ার অভিযোগ নেই। শুধু মালদহ জেলা পুলিশই কেন এমন করছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংগঠনের সদস্যরা। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অনুমতি ছাড়াই সভা হচ্ছিল। তাই সভা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কাউকে মারধর করা হয়নি।”
সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন সকাল ১১টা থেকে কনুয়া গোপালপুর ফুটবল মাঠের পাশের একটি আমবাগানে জেলার সদস্যদের নিয়ে সভা ডাকা হয়েছিল। সভায় যোগ দিতে আসেন সিভিক ভলান্টিয়ারদের রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় পৌড়িয়া। সভার জন্য কোনও মঞ্চ, সামিয়ানা বা মাইকের ব্যবস্থা ছিল না। সকলে মিলে বসে আলোচনার পরিকল্পনা হয়েছিল বলে জানানো হয়। তবে সভা শুরু আগে যখন সদস্যরা আমবাগানে জড়ো হতে শুরু করেছেন, তখনই ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছে সকলকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। শ’খানেক সিভিক ভলান্টিয়ার তখন আমবাগানের পাশের মাঠে ছিলেন। পুলিশের তাড়া খেয়ে সকলে উল্টোদিকের অন্য একটি আমবাগানে গিয়ে ফের সভার কাজ শুরু করেন তাঁরা। কিছু পরে সেখানেও হরিশচন্দ্রপুরের আইসি বাবিন মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী পৌঁছয়। সেখান থেকেও তাদের হঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, সভা ভেস্তে যাওয়ার আধঘণ্টা পরে কনুয়া বাজার এলাকায় রাস্তা ধরে যখন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সঞ্জয়বাবু, জেলা সম্পাদক আবু বক্কর সহ অন্য নেতাকর্মীরা ফিরছিলেন, তখন ফের পুলিশ তাঁদের উপর চড়াও হয়। সভাপতি ও সম্পাদককে টেনে হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। সে সময়ে অন্য সিভিক ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি বেধে যায় বলে প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন। সে সময়ে পুলিশ দু’জনকে লাঠিপেটা করে বলে দাবি। সভাপতি ও সম্পাদককে দ্রুত থানায় নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে এমন খবর রটে যাওয়ায় সংগঠনের তরফে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ শুরু হয়া। রাস্তা থেকে দুই জনকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া এবং লাঠি পেটা করার ঘটনা দেখে স্থানীয় বাসিন্দারাও অবরোধে সামিল হন বলে সংগঠনের দাবি।
দেড় ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলায় জাতীয় সড়কে যানজট শুরু হয়ে যায়। দু’দিকে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। চাপে পড়ে যায় পুলিশ-প্রশাসনও। এর পরেই থানায় নিয়ে যাওয়া সিভিক ভলান্টিয়ারদের সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ও জেলা সম্পাদককে ছেড়ে দেয় পুলিশ। সঞ্জয়বাবুর দাবি, “আমবাগান মালিকদের অনুমতি নিয়ে সভা করার সিদ্ধান্ত হয়। বারবার মালদহ জেলা পুলিশ সভা করতে দিচ্ছে না। এটা গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার উদাহরণ।” জেলায় অন্তত ৫ হাজার সিভিক ভলান্টিয়ার কাজ না পেয়ে বসে রয়েছে বলে সংগঠনের অভিযোগ। হাইকোর্ট নির্দেশ থাকলেও তাঁদের অনেককেই কাজে ফেরানো হচ্ছে বলে দাবি। এর প্রতিবাদেই এ দিন সভা ছিল বলে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy