Advertisement
১৯ মে ২০২৪

বিজেপিতে যোগ দিলেন রাজীব নারায়ণ

শাসকদলকে ধাক্কা দিতে ‘বঞ্চিত ও অপমানিত’দের তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে এসে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ডাক দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। রবিবার কোচবিহারে দলের জেলা দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে করে রাহুলবাবু ওই আর্জি জানিয়েছেন।

কুমার রাজীব নারায়ণের সঙ্গে রাহুল সিংহ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

কুমার রাজীব নারায়ণের সঙ্গে রাহুল সিংহ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৫
Share: Save:

শাসকদলকে ধাক্কা দিতে ‘বঞ্চিত ও অপমানিত’দের তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে এসে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ডাক দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। রবিবার কোচবিহারে দলের জেলা দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে করে রাহুলবাবু ওই আর্জি জানিয়েছেন। এ দিনের অনুষ্ঠানে বিজেপিতে যোগ দেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের অন্যতম প্রাক্তন প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক কুমার রাজীব নারায়ণ। রাজীববাবুর হাতে বিজেপির পতাকা তুলে দেন দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ সেখানেই তৃণমূলে বঞ্চিত, ব্যথিত, অপমানিত ‘সাচ্চা’ তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ডাক দেন।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “যারা দুর্দিনে তৃণমূল গড়েছেন তাঁরা দল ছাড়তে শুরু করেছেন। রাজীববাবুর পথ অনুসরণ করে তৃণমূলে বঞ্চিত, ব্যথিত, অপমানিত নেতাকর্মী যাঁরা আছেন, তাদের বেরিয়ে আসার আবেদন জানাচ্ছি। তোলাবাজেরা তৃণমূলে থাকুন।” দলবদলের ব্যাপারে কুমার রাজীব নারায়ণ বলেন, “তৃণমূলে নীতি, আদর্শ নেই। স্বজনপোষণ, নেতাদের দাম্ভিকতা, সর্বোপরি রাষ্ট্রদ্রোহী কাজের প্রতিবাদে বিজেপিতে যোগ দিলাম।”

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “রাজ্যে একটা রাস্তা, স্কুল, কলেজ তৈরি করতে রাহুলবাবুরা পারবেন না। মানুষ উন্নয়ন চান। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন যজ্ঞে সকলের সমর্থন আছে, থাকবে। রাহুলবাবুর কথায় ন্যূনতম বুদ্ধিমান একজনও বিজেপিতে যাবেন না।”

রাহুলবাবু এ দিন দাবি করেন, কোচবিহার রাজ পরিবারের সদস্য রাজীববাবুর সঙ্গে তাঁর দেড় হাজার অনুগামী বিজেপিতে এসেছেন। তবে রবীন্দ্রনাথবাবুর পাল্টা দাবি, “এ দিনও কোনও একজন কর্মী বিজেপিতে যাননি। যাঁরা দেড় হাজার লোকের কথা বলছেন, তাঁরা নামের তালিকা দিন।” দেড় হাজার অনুগামীর মধ্যে কারা আছেন তা নির্দিষ্ট করে জানতে চাওয়া হলে রাজীববাবু কয়েকজন অঞ্চল নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করেন।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজীববাবু দীর্ঘদিন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। পরে অবশ্য তাঁকে সরিয়ে অর্ঘ্য রায়প্রধান জেলা সভাপতি হন। প্রদেশ যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক হন তিনি। গত মাসে অর্ঘ্যবাবুর বদলে শুভজিৎ কুণ্ডু জেলা যুব সভাপতি হন কোনও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাননি রাজীববাবু তার আগে লোকসভা নির্বাচনেও রাজীববাবু টিকিট পাওয়ার অন্যতম দাবিদার হিসাবে তুলে ধরতে ‘আমল’ পাননি রাজ্য তৃণমূল যুব সভাপতি পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে সরিয়ে দেওয়ার পর তিনি আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েন পরপর বঞ্চনা ও ক্ষোভের জেরে একসময় তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত রাজীববাবু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। রাজীববাবু অবশ্য জানিয়েছেন, “ব্যক্তিগত কোনও বিষয় দলবদলের কারণ নয়, তবে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে সরানোর ঘটনাও মন থেকে মানতে পারিনি।” কোচবিহার পরিচালন সমিতি-সহ একাধিক সরকারি কমিটি থেকেও ইস্তাফা দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

বিজেপি’র অন্দরের খবর, ‘তৃণমূল ভাঙাতে’ শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের সুযোগ নিতে চাইছেন দলের নেতাদের একাংশ। তা স্পষ্ট রাহুলবাবুর বক্তব্যেও, “১০ বছর আগের পুরানো তৃণমূল-বিজেপি কর্মীরা এক সঙ্গে কাজ করেছেন। অথচ আজকে যারা তৃণমূলের বিভিন্ন নেতৃত্বে আছেন তাঁরা সেই সময় সিপিএমের হয়ে দু’দলের কর্মীদের হামলাকারী হিসাবে পরিচিত ছিলেন রাজ্যের কল্যাণের জন্য বিজেপিতে আসুন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kumar rajib narayan rahul sinha bjp tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE