Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বান্ধবীর নামে ভুয়ো প্রোফাইল, ধৃত যুবক

ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে প্রাক্তন বান্ধবীর মোবাইল নম্বর ছড়িয়ে দিয়ে তাকে অপদস্থ করা, এমএমএস ছড়ানোর হুমকি ও মারধরের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে শিলিগুড়ির এনজেপি ফাঁড়ি এলাকা থেকে শাহবাজ আলম নামে ওই যুবককে ধরা হয়। তার বাড়ি আশরফনগরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪১
Share: Save:

ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে প্রাক্তন বান্ধবীর মোবাইল নম্বর ছড়িয়ে দিয়ে তাকে অপদস্থ করা, এমএমএস ছড়ানোর হুমকি ও মারধরের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে শিলিগুড়ির এনজেপি ফাঁড়ি এলাকা থেকে শাহবাজ আলম নামে ওই যুবককে ধরা হয়। তার বাড়ি আশরফনগরে। সূর্য সেন কলেজের ওই পড়ুয়া কলেজে টিএমসিপি কর্মী বলে পরিচিত। যদিও ঘটনার পরে টিএমসিপি তা অস্বীকার করেছে।

অভিযোগকারিনী ছাত্রীটি অন্য কলেজে পড়েন। ১৭ জানুয়ারি তিনি শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তারপরেও বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে তাঁর দাবি। মঙ্গলবার তিনি সূর্য সেন কলেজে গিয়েছিলেন। সেখানে শাহবাজের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। তাঁকে সামনে পেয়ে শাহবাজ তাঁকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। তর্কাতর্কির পরে তাকে লাথি ও ঘুষি মারা হয়। ছাত্রীর কথায়, “অভিযোগ তুলে না নিলে আমার ছবি দিয়ে ভুয়ো এমএমএস বানিয়ে তা ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয়। আমি এখন পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চাইছি। দোষীর দ্রুত শাস্তি চাইছি।” তারপরে ফের প্রধাননগর থানায় অভিযোগ করেন তিনি। এনজেপি ফাঁড়ি এলাকা থেকে ধরা হয়। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “ওই ছাত্রটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও গত ১৫ দিনে কেন তদন্ত এগোয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ছাত্রীর সহপাঠীরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের গোড়ায় ছাত্রীটির সঙ্গে শাহবাজের আলাপ হয়। কয়েক মাস পরে শাহবাজের আচরণ পছন্দ না হওয়ায় ছাত্রীটি তার সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখতে চাননি। সম্পর্ক ভেঙে যায়। ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে বিভিন্ন নম্বর থেকে ওই ছাত্রীর মোবাইলে ফোন আসতে শুরু করে। তাকে অশালীন কথা বলা হয়। ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর কী ভাবে এত লোকের কাছে গেল, তা বুঝতে পারেননি ওই ছাত্রী। আশপাশের লোকজনও তাঁর প্রতি কটূক্তি করছেন বলে লক্ষ করেন ছাত্রীটি। এই বছর জানুয়ারির মাঝামাঝি তিনি এক বন্ধু মারফত জানতে পারেন, অন্য নামে ফেসবুকে একটি প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছে। তাতে তাঁর ব্যক্তিগত ফোন নম্বর দিয়ে ফোন করতে বলা হয়। অ্যাকাউন্টটি তৈরি হয়েছে গত বছরের এপ্রিল মাসে। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন ওই ছাত্রী। ১৭ জানুয়ারি প্রধাননগর থানায় সমস্ত জানিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দার্জিলিং জেলা আহ্বায়ক গণেশ কামতি। তিনি বলেন, “সারা রাজ্যেই নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে তৃণমূল ও তার সহযোগীরা। আমরা দোষীর নজিরবিহীন শাস্তি দাবি করছি। এমন অপরাধ কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এসএফআইয়ের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সৌরভ দাসও। তিনি বলেন, “শিক্ষাক্ষেত্রে এমন ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। দল না দেখে পুলিশের কাছে দোষীর কড়া শাস্তির দাবি করছি।” টিএমসিপির জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় দাবি বলেন, “ওই ছাত্রের সঙ্গে তাঁদের সংগঠনের কোনও যোগাযোগ নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE