Advertisement
E-Paper

বাবুর ব্যাঙ্ক ডাকাতিতে বিস্মিত প্রতিবেশীরা

ঘরে-বাইরে খামখেয়ালি হিসেবে পরিচিত ছিল বাবু। পরিবারও সম্পন্ন। সেই মিসবাবুর রহমান হঠাৎ ব্যাঙ্ক ডাকাতির চেষ্টা করে গ্রেফতার হওয়ায় হতবাক পরিবার থেকে পাড়া-পড়শি সকলেই। পাড়ার ছেলে বাবুর এমন কাণ্ডকারখানায় পড়শিদের সবার মনেই অসংখ্য প্রশ্ন।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০৬

ঘরে-বাইরে খামখেয়ালি হিসেবে পরিচিত ছিল বাবু। পরিবারও সম্পন্ন। সেই মিসবাবুর রহমান হঠাৎ ব্যাঙ্ক ডাকাতির চেষ্টা করে গ্রেফতার হওয়ায় হতবাক পরিবার থেকে পাড়া-পড়শি সকলেই।

পাড়ার ছেলে বাবুর এমন কাণ্ডকারখানায় পড়শিদের সবার মনেই অসংখ্য প্রশ্ন। বুধবার মালদহের গাজলের দেওতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের খলম্বা গ্রামে ব্যাঙ্কে ছিনতাই-এর চেষ্টায় ঘটনায় ধৃত মিসবাবুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, পড়শিদের ভিড়। পুলিশের জেরায় সে স্বীকার করেছিল চাকরির জন্য ঘুষের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

ধৃতের বাবা খলিলুর রহমান বলেন, “আমার কাছে কোনওদিন ও চাকরির জন্য টাকা চায়নি। মোবাইলের দোকান করতে চেয়েছিল। করে দিয়েছিলাম। তার আগে কাপড়ের দোকান করে দিয়েছিলাম। বাবুর মোবাইলের দোকানে ভালই লাভ হতো। আমাদের যা জমিজায়গা রয়েছে তাতে তাঁর চাকরির টাকা জোগাড় করা যেত। কী কারণে এমন করল কিছুই বুঝতে পারছি না।” তাঁর দাবি, “ছেলে আমার একটু রাগী স্বভাবের। তা বলে এমন ঘটনা ঘটাবে তা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না।” মিসবাবুরের মা খতেজা বিবি বলেন, “আমার এক ছেলে ও এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আমার ছেলের দোকানও খুব ভালো বেচা কেনা হয়। তার যে টাকার দরকার ছিল তা আমাকে কখনও জানায়নি। টাকার জন্য এমন করতে পারে তা বিশ্বাস করা যায় না। তবে ও ছোট থেকেই খামখেয়ালি স্বভাবের।”

মিসবাবুর গ্রামে কম কথা বললেও ছোট থেকে তার খামখেয়ালিপনা নিয়ে চিন্তিত পরিজনেরা। পরিজনেরা জানানছ, সে স্থানীয় তরিকুলা হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে। মাধ্যমিক শেষ হতেই বাড়ির লোকেদের না জানিয়েই হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তার সন্ধান মেলেনি। ফের মাসখানেক পর সে নিজেই জানায় দিল্লিতে রয়েছে। মাধ্যমিকে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করায় পরিবারের লোকেরা তাকে খবর দিলে সে গ্রামে ফিরে আসে। তার পালিয়ে যাওয়ার কারণ পরিজনেরা আজও জানেন না।

মিসবাবুর এর পর দৌলতপুর হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে। পরে স্নাতকও হয় গাজল কলেজ থেকে। বছর চারেক আগে বেশ কয়েকটি ঘুমের ওষুধ খেয়ে ফেলে সে। তার পর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বেঁচে যায়। এ বারও ঘটনার পিছনে কোনও কারণ জানতে পারেননি পরিবারের লোকেরা।

সোমবার দুপুরে গাজল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি সমবায় ব্যাঙ্কে খেলনা বন্দুক নিয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় মিসবাবুর। ব্যাঙ্কেরই উল্টোদিকেই তার মোবাইলের দোকান। তাকে জেলা আদালতে পাঠালো বিচারক ধৃতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশের কাছে সে জানিয়েছে, কৃষি দফতরে চাকরির জন্য এক জনকে টাকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সে ব্যাঙ্ক ডাকাতির পরিকল্পনা নিয়েছিল। এ বিষয়ে মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “কাকে সে টাকা দিত তা এখনও জানা যায়নি।”

তার গ্রামের বাসিন্দা রিয়াজউদ্দিন, ইব্রাহিম খান, মিজানুর রহমানেরা বললেন, “বাবু খামখেয়ালি স্বভাবের ছিল। সে খুব কম কথা বলত। তবে ডাকাতির চেষ্টা করবে তা বিশ্বাসই করা যায় না। শুনেছি খেলনা বন্দুক নিয়ে ডাকাতি করতে গিয়েছিল। খেলনা বন্দুক নিয়ে কেউ কি ডাকাতি করতে যায়!”

abhijit saha gajal bank robbery
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy