আরও একটি বন্ধ বাগানের লিজ বাতিল করল রাজ্য সরকার। শুক্রবার বিকেলে ধূপগুড়ি ব্লকের রেড ব্যাঙ্ক চা বাগানে প্রশাসনের তরফে লিজ বাতিলের নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় এক বছর থেকে ওই বাগান পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। এর আগে গত ১৮ নভেম্বর নাগরাকাটা ব্লকে রেড ব্যাঙ্ক গোষ্ঠীর ধরণীপুর বাগানের লিজ বাতিল করে রাজ্য সরকার। গোষ্ঠীর আরও একটি বাগান রয়েছে সুরেন্দ্রনগরে। একই সময়ে তিনটি বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার শ্রমিক বিপাকে পড়েন।
এদিন বিকেলে ভূমি রাজস্ব দফতরের কর্তাদের নিয়ে রেড ব্যাঙ্ক বাগানে যান জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক সীমা হালদার, মালবাজারের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি, ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীপিকা ওঁরাও। প্রশাসনের কর্তারা শ্রমিকদের সরকারি নোটিসের বয়ান পরে শোনান। সেই সঙ্গে জানান, যতদিন না বাগান চালু হচ্ছে সরকারি যে সমস্ত সাহায্য দেওয়া হত সে সব চালু থাকবে। এর পরে তাঁরা দুটি বাংলো, কারখানা, অফিস চত্বর ঘুরে দেখেন নোটিস ঝুলিয়ে সেগুলি সিল করা হয়। জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক বলেন, “লিজ বাতিলের নোটিস ঝুলিয়ে কারখানা, অফিস এবং বাংলো সিল করা হয়েছে।” মালবাজারের মহকুমাশাসক বলেন, পরে যেভাবে সরকারি নির্দেশ আসবে সেই ভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ হাজার ৩৭৬.৫৬ একর জমির উপরে রেড ব্যাঙ্ক চা বাগান রয়েছে পুরো এলাকা এদিন রাজ্য সরকারের তরফে অধিগ্রহণ করা হয় বাগানের শ্রমিক সংখ্যা ৮৮৬ জন বলা হলেও জনসংখ্যা দেড় হাজারের বেশি স্থানীয় শ্রমিক এবং তাঁদের সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের ১৯ অক্টোবর কতৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে যায় এর পরে অভাবের তাড়নায় কাজের খোঁজে শ্রমিক পরিবারের ছেলেমেয়েরা ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে শুরু করে বাগানের শ্রমিক বসতি এলাকায় অপুষ্টির ছায়া নেমে আসে ৪৬ জন শ্রমিক মারা যায় বাগান খোলার দাবিতে আন্দোলন হলেও কোন লাভ হয়নি বলে শ্রমিকদের অভিযোগ এদিন লিজ বাতিলের খবর পেয়ে তাঁরা খুশি পাশাপাশি লালু তাঁতি, বিন্না ওঁরাও-র মতো শ্রমিকদের দাবি, শুধু লিজ বাতিল করলে হবে না দ্রুত বাগান খোলার ব্যবস্থা নিতে হবে ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব প্ল্যানটেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের শীর্ষ নেতা মণি ডারনাল মনে করেন শ্রমিকরা ঠিক দাবি করেছে তিনি বলেন, “লিজ বাতিল করা অথবা বন্ধ বাগান অধিগ্রহণ করা সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ নয়। তাড়াতাড়ি নতুন মালিকের ব্যবস্থা করে বাগান খোলার ব্যবস্থা করতে হবে।” চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল আলম বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা অন্ধকারে পুরনো মালিকের কাছে শ্রমিকদের প্রচুর টাকা প্রাপ্য ছিল। তাঁকে বাঁচাতে লিজ বাতিলের পদক্ষেপ কিনা সেটাও বুঝতে পারছি না। কারণ বাগান খোলার ব্যবস্থা করাটাই মুখ্য হওয়া উচিত ছিল।” শ্রমিক নেতারা জানান, বামফ্রন্ট বন্ধ কাঁঠালগুড়ি এবং রামঝোরা বাগানের লিজ বাতিল করেছিল নতুন মালিক আসার পরে প্রচুর শ্রমিক ছাটাই করে শ্রমিক নেতৃত্বের প্রশ্ন ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না তো। প্রশাসনের কর্তারা ওই বিষয়ে এদিন কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy