Advertisement
E-Paper

বনধে ভাল সাড়া, উত্তরে আশা দেখছে বিজেপি

ইনিংসের শুরুতেই দ্রুত রান তুলতে বনধকেই অস্ত্রের মতো বারবার ব্যবহার করছে বিজেপি। তাতে ফলও মিলতে শুরু করেছে। বিভিন্ন কলেজে এবিভিপি এবং বিজেপি সমর্থকদের উপরে শাসক দলের হামলার অভিযোগ তুলে পরপর নানা জেলায় বনধ ডাকছে বিজেপি। শুক্রবার উত্তর দিনাজপুর বনধে আশাতীত সাড়াও পেয়েছে তারা। আজ, শনিবার মালদহ এবং ডুয়ার্সেও ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে বিজেপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৪
পুড়ছে টায়ার। ডালখোলার জাতীয় সড়কে। ছবি: সন্দীপ পাল।

পুড়ছে টায়ার। ডালখোলার জাতীয় সড়কে। ছবি: সন্দীপ পাল।

ইনিংসের শুরুতেই দ্রুত রান তুলতে বনধকেই অস্ত্রের মতো বারবার ব্যবহার করছে বিজেপি। তাতে ফলও মিলতে শুরু করেছে। বিভিন্ন কলেজে এবিভিপি এবং বিজেপি সমর্থকদের উপরে শাসক দলের হামলার অভিযোগ তুলে পরপর নানা জেলায় বনধ ডাকছে বিজেপি। শুক্রবার উত্তর দিনাজপুর বনধে আশাতীত সাড়াও পেয়েছে তারা। আজ, শনিবার মালদহ এবং ডুয়ার্সেও ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে বিজেপি।

তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেসের তুলনায় এবিভিপি এখনও শক্তিশালী নয়। কিন্তু কলেজ ভোটকে ঘিরে সংগঠনের প্রভাব কোথায় কতটা বেড়েছে, তা যাচাই করতেই পরপর উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় বনধ ডাকছে বিজেপি। এ দিন বিজেপি-র ডাকা বনধে স্কুল কলেজ খোলা থাকলেও মোটের উপর অনুপস্থিতির হারই ছিল বেশি। রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার, হেমতাবাদ, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লকের বেশিরভাগ স্কুল, কলেজ, দোকানবাজার বন্ধ ছিল। সরকারি বাস চললেও, বেসরকারি বাসের অভাবে দুর্ভোগে পড়তে হয় বাসিন্দাদের।

বিজেপি-র কর্মী সমর্থকেরাও নেমে পড়েন মাঠে। কালিয়াগঞ্জের বিবেকানন্দ মোড়, রায়গঞ্জ, হেমতাবাদ ও ইসলামপুরে পথ অবরোধ করেন তাঁরা। ডালখোলা এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ২০ মিনিট অবরোধ চলে। বনধের সমর্থনে ইসলামপুরে মিছিলও করে এবিভিপি। সেই মিছিলে পুলিশের লাঠির আঘাতে তাদের ৫ সমর্থক জখম হয়েছেন বলে দাবি করেছে এবিভিপি।

বিজেপি-র উত্তর দিনাজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তীর দাবি, দলের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করতে জোর করে বনধ সফলের চেষ্টা হয়নি। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, “কংগ্রেস, সিপিএম-ও বিজেপি-র সঙ্গে মিলে তলে তলে বোঝাপড়া করে বনধের চেষ্টা করছে। তাতে বাসিন্দারা সাড়া দেননি।”

কংগ্রেসের দুর্গ উত্তর দিনাজপুরে বিজেপি-র যে শক্তি বাড়ছে, লোকসভা ভোটের সময় থেকেই তা টের পাওয়া যাচ্ছিল। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে এই জেলার রায়গঞ্জ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী নিমু ভৌমিক পান ২ লক্ষ ৩ হাজার ১৩১টি ভোট। যা মোট যত ভোট পড়েছিল তার ১৮.৭৫ শতাংশ। নিমুবাবু তৃণমূল প্রার্থী পবিত্ররঞ্জন দাশমুন্সিকে পিছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছিলেন। মোট যা ভোট পড়েছিল তার ২৯ শতাংশ পেয়ে এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। সামান্য পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সি। তবে এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গ্রন্থাগারমন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীর খাসতালুক ইসলামপুর বিধানসভা আসনে এগিয়ে ছিল বিজেপি-ই। বিজেপি-র দাবি, জেলায় তৃণমূল ছেড়ে তাদের দলে যোগ দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। বনধ সফল হওয়ায় তাঁদের জমি আরও শক্ত হচ্ছে বলেই দাবি করেছে বিজেপি।

ঘটনাচক্রে, বনধকে ‘সফল’ বলে দাবি সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পালেরও। তবে তাঁর দাবি, এর পিছনে বিজেপি-র সংগঠনের জোর নেই। বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় রয়েছে, তাই জেলায় ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে। তাঁর কথায়, “সারদা সহ নানা বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের অবশ্য কটাক্ষ, জেলায় যে কোনও ক্লাব, সংগঠন ও রাজনৈতিক দল ধর্মঘট ডাকলেই তা সফল হয়, এতে বিজেপি-র কোনও কৃতিত্ব নেই।

তবে লম্বা ইনিংস খেলার জন্য বনধকেই অস্ত্র করে বিজেপি নিজেদের শক্তি পরীক্ষা ও প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা ছাড়ছে না। বিজেপি-র আলিপুরদুয়ার জেলার সাধারণ সম্পাদক মনোজ টিগ্গা অবশ্য দাবি করেন, “বীরপাড়া সহ নানা কলেজে যে ভাবে শাসক দলের সন্ত্রাস হয়েছে, তার বিরুদ্ধেই বনধ ডাকা হয়েছে। এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।”

strike bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy