Advertisement
E-Paper

ভবন সংস্কারের সময় চাঙর ভেঙে মৃত ১

সংস্কার চলাকালীন তিন তলা থেকে কংক্রিটের ভাঙা টুকরো মাথায় পড়ে মৃত্যু হল ভবনেরই এক নিরাপত্তা কর্মীর। শনিবার সকালে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে এই ঘটনা ঘটে। ভবনের সামনের অংশ ভাঙার জন্য চারতলা পর্যন্ত বাঁশের কাঠামো তৈরি করা হলেও, উপর থেকে পড়া ভাঙা পাথর ও কংক্রিটের টুকরো আটকাতে নীচে কোনওরকম ছাউনি বা শেড তৈরি করা হয়নি বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:১১
ঘটনাস্থল। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

ঘটনাস্থল। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

সংস্কার চলাকালীন তিন তলা থেকে কংক্রিটের ভাঙা টুকরো মাথায় পড়ে মৃত্যু হল ভবনেরই এক নিরাপত্তা কর্মীর। শনিবার সকালে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে এই ঘটনা ঘটে। ভবনের সামনের অংশ ভাঙার জন্য চারতলা পর্যন্ত বাঁশের কাঠামো তৈরি করা হলেও, উপর থেকে পড়া ভাঙা পাথর ও কংক্রিটের টুকরো আটকাতে নীচে কোনওরকম ছাউনি বা শেড তৈরি করা হয়নি বলে অভিযোগ। সে কারণেই এ দিন সকালে তিনতলায় কংক্রিটের ‘বিম’ ভেঙে দেওয়ার পরে তা সরাসরি নীচে দাঁড়ানো নিরাপত্তা কর্মীর মাথায় পরে। ঘটনাস্থলেই ওই কর্মীর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম নয়ন রায় (৪৮)। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার পরেই নয়নবাবুর দেহ ভবনের ভিতর ঢুকিয়ে মিস্ত্রিরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পরেও ভবন কর্তৃপক্ষের কেউ এলাকায় না আসায় ক্ষোভ জানাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাটি চেপে যাওয়ার চেষ্টাও হয়েছিল বলেও তাঁদের অভিযোগ।

পুরসভা থেকে কোনওরকম অনুমতি ছাড়াই হাসমিচক লাগোয়া ওই চার তলা ভবনের সামনের দিকে সংস্কার চলছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর। মৃত্যুর ঘটনায় ভবন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে মামলা করার দাবি তুলেছেন এলাকার ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দারা। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেন, “অভিযোগের বিষয়গুলি শুনেছি। বহুতল ভবন সংস্কার করতে হল অনেক সর্তকতা নিতে হয়। তদন্তে সবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে।”

ভবনটির মালিকানা যে সংস্থার তাঁদের তরফে নিরঞ্জন মিত্তলের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “শিলিগুড়ির বাইরে রয়েছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে পরে বলতে পারব।”

ময়নাগুড়ির দেবীনগরের বাসিন্দা নয়নবাবু গত ৫ বছর ধরে একটি বেসরকারি সংস্থার তরফে ওই ভবনের নিরাপত্তা এবং দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ভবনের ভিতরেই তিনি রাতে থাকতেন। এ দিন সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে ভবনের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। সে সময় ভবনের তিনতলার সামনের অংশে কংক্রিট ভাঙার কাজ চলছিল। প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন, হঠাৎই একটি কংক্রিটের বিম ভেঙে নয়নবাবুর পরে। মাথার পিছন থেকে দরদর করে রক্ত বের হতে শুরু করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। নয়নবাবুর ভাই জয়ন্তবাবু বলেন, “কোনও বহুতল ভাঙার কাজ হলে নীচের দিকে দাঁড়ানো, হাঁটাচলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে তার কিছুই করা হয়নি। সে কারণেই আমার দাদাকে মরতে হল। এই ঘটনায় যাদের গাফিলতি রয়েছে, তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।”

পুরসভা সূত্রের খবর, কোনও বহুতলে ভাঙাভাঙি বা সংস্কারের কাজ করতে হলে পুর কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি নিতে হয়। কী ধরণের সর্তকতা নিয়ে সংস্কার কাজ করতে হয়, তা পুরকর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন। কোনও বিপদের আশঙ্কা যাতে না থাকে তার জন্যও নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যদিও, পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ভবনের ক্ষেত্রে তার কোনটাই নেওয়া হয়নি। ৪/৫ মাস আগে যখন সংস্কারের জন্য ভবনের সামনে বাঁশ বাঁধা হয় তখনই আপত্তি জানিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর রুমা নাথ। তিনি বলেন, “সে সময় খোঁজখবর করে জেনেছিলাম, কোনও অনুমতি ছাড়াই সংস্কারের কাজ হচ্ছে। তখন আপত্তি জানিয়েছিলাম। তারপরেও কোনও সর্তকতা ছাড়াই বিনা অনুমতিতে কাজ চলছিল। যার জন্য একটি প্রাণ হারাতে হল। তদন্ত করে পদক্ষেপ করবে।”

শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভূটিয়া বলেন, “পুর এলাকায় কোনও বাড়ি বা বহুতলের ইট ভাঙতে গেলেও পুরসভার অনুমতি নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়েছিল কিনা জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব। পুলিশের থেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে আমাদের বক্তব্য জানাব।”

accident hill cart road siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy