ফুলের বাজারে। নিজস্ব চিত্র।
‘ডাচ গোলাপ’কে হার মানাল ‘মিনি কুইন’। দিনভর তাদের মধ্যে যুদ্ধ চলেছে। কখনও হাড্ডাহাড্ডি। কখনও বাউন্ডারি হাঁকিয়ে কেউ এগিয়ে গিয়েছে। শেষপর্যন্ত জয় হয়েছে মিনি কুইনের। তাতে অবশ্য খানিকটা অখুশি বিক্রেতারা। তাঁদের কয়েকজন বলেন, “ডাচের দর বেশি। ওই ফুল বেশি বিক্রি হলে আয় একটু বেশি হয়। মিনি কুইন সেখানে দামে অনেক কম। তাই লাভ হয় কম। মন তো একটু অখুশি হবেই।” আরেক বিক্রেতা বলেন, “গোলাপের ক্রেতা বেশিরভাগ ১৮ থেকে ২২ বছরের তরুণ-তরুণীরা। তাঁরা এ বারে একটু কম দামের দিকেই ঝুকেছে।”
সরস্বতী পুজোয় যে গোলাপের চাহিদা তুঙ্গে উঠবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ ছিল না কারও। তার উপরে পরের দিন ভ্যালেন্টাইনস ডে। সেদিকে তাকিয়ে কোচবিহারের ফুল ব্যবসায়ীরা গোলাপ তুলেছেন এ বার। তাঁরা জানান, ডাচ গোলাপের আসে বেঙ্গালুরু ও পুণে থেকে। ওই গোলাপের দাম শুরু হয় ৩০ টাকা থেকে। ৪০ টাকা পর্য়ন্ত একটি ফুল বিক্রি হয়। তা অনেক আকর্ষণীয় ও সুন্দর বলেই ওই গোলাপের দাম বেশি। সেখানে ‘মিনি কুইন’ স্থানীয় গোলাপ হিসেবে পরিচিত। যদিও কোচবিহারে ওই গোলাপ চাষ হয় না। তা আসে মেদিনীপুর ও রানাঘাট থেকে। ওই গোলাপের দাম অনেকটাই কম। একটি গোলাপ ১০ টাকায় বিক্রি হয়। প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে ঝাঊগাছের পাতা দিয়ে গোলাপটি একটু সাজিয়ে দিলে দাম পড়ে ২০ টাকা।
শহরের হাসপাতাল মোড়ের ফুল ব্যবসায়ী নীরেন দে বলেন, “আমি এ দিন ৫০টিরও বেশি ডাচ গোলাপ বিক্রি করেছি। মিনি কুইন তার দ্বিগুণ মতো বিক্রি হয়েছে। তবে এ বারে কেন জানি না গোলাপের চাহিদা অন্যবারের তুলনায় কম। ডাচ গোলাপের বিক্রি তো অনেক কম হল। আমরা যা আশা করেছিলাম তা হয়নি।” আরেক ফুল ব্যবসায়ী রণজিৎ হালদার জানান, তিনি দুটি মিলিয়ে ৫০০ টি গোলাপ বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে মিনি কুইনের চাহিদা কিছুটা বেশি ছিল। তিনি বলেন, “দুটি উৎসব একসঙ্গে পড়ে যাওয়াতেই এ বারে ব্যবসা খারাপ। তার মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সামনে। ভ্যালেন্টাইনস ডে আবার রবিবার পড়ে যাওয়ায় ভিড় একটু কম হবে বলে মনে হচ্ছে।” আলাদা হাসপাতাল সংলগ্ন ১৪টি ফুলের দোকান রয়েছে। আরেক ব্যবসায়ী জানান, তিনি এক হাজারের উপরে ডাচ গোলাপ বিক্রি করেছেন।
এ দিন হাসপাতাল মোড় থেকেই ‘মিনি কুইন’ গোলাপ কিনছিলেন এক কলেজ ছাত্রী ও তাঁর বান্ধবীরা। তাঁদের কথায়, “একটু সাজিয়ে নিলেই ‘মিনি কুইন’ টেক্কা দেয় ডাচ গোলাপকে। তাহলে আর কেন বৃথা বেশি টাকা নষ্ট করতে যাব। তাই ডাচের বদলে ‘মিনি কুইন’কেই বেছে নিলাম।” আরেক তরুণীর কথায়, “গোলাপ তো অনেক কিনতে হয়। শুধু একজন ভালবাসার লোককে একটি গোলাপ দিলাম বিষয়টি সেরকম নয়। এ দিন বন্ধু, বান্ধবী থেকে বাবামায়ের হাতেও গোলাপ তুলে দিতে ইচ্ছে করে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy