Advertisement
০৬ মে ২০২৪

রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে স্টল বসানোর সিদ্ধান্ত রাসে

প্রথমে এবিএন শীল কলেজ ময়দান, পরে জেনকিন্স স্কুল ময়দানে রাসমেলার পরিবর্ধিত স্টল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে মেলা হওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। প্রতিবাদ করেন স্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবক ও প্রাক্তনীদের একাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৪৯
Share: Save:

প্রথমে এবিএন শীল কলেজ ময়দান, পরে জেনকিন্স স্কুল ময়দানে রাসমেলার পরিবর্ধিত স্টল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে মেলা হওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। প্রতিবাদ করেন স্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবক ও প্রাক্তনীদের একাংশ। বিতর্ক এড়াতে সেই সিদ্ধান্ত বদল করে প্রশাসন। ঠিক হয়, কোচবিহার রাজবাড়ি লাগোয়া প্রাঙ্গণে ওই প্রদর্শনীর জন্য স্টল তৈরি করা হবে। তাতে অবশ্য মূল মেলা চত্বর থেকে ওই স্টলগুলি খানিকটা বিচ্ছিন্ন থাকবে। শুধু তাই নয়, স্টল তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ২০০ বাই ২০০ বর্গফুট জমির চাহিদাও মিটছে না।

সে কথা জানেন প্রশাসনের কর্তারাও। কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “রাসমেলার আয়োজন নিয়ে আমরা কোনও বিতর্কের অবকাশ রাখতে চাই না। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ না ব্যবহার করে রাজবাড়ি স্টেডিয়াম লাগোয়া প্রাঙ্গনে ওই সব হস্তশিল্পের স্টল বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় স্টলের সংখ্যা কিছুটা কমবে।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের রাসমেলায় প্রায় তিন হাজার স্টল বসে। ফি বছর এমজেএন স্টেডিয়াম, রাসমেলা ময়দান ও লাগোয়া রাস্তা জুড়ে পুরসভার উদ্যোগে ওই স্টল তৈরির জায়গা বণ্টন করা হয়। এই বার প্রথম মেলার আকর্ষণ বাড়াতে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের হস্তশিল্পীদের তৈরি সামগ্রী নিয়ে বাড়তি ৮০টি স্টল বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কেন্দ্রের বস্ত্রমন্ত্রক অনুমোদিত একটি সংস্থার মাধ্যমে ওই স্টল বসানোর বিষয়টি চূড়ান্ত হতেই শুরু হয় মেলা সংলগ্ন এলাকায় বিকল্প জমির খোঁজ। প্রথমে এবিএন শীল কলেজ ময়দানে প্রশাসনের তরফে ওই সব স্টল বসানোর কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদ নেতৃত্ব তাতে পঠনপাঠনের ক্ষতির আশঙ্কা জানিয়ে আপত্তি করে। তারপরেই বিকল্প জায়গা হিসাবে জেনকিন্স স্কুল ময়দানে স্টল তৈরির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় প্রশাসন। বিষয়টি জানাজানি হতেই হইচই শুরু হয়। ওই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র তথা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাণীকান্ত ভট্টাচার্য বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে মেলার স্টল তৈরির পরিকল্পনার কথা শুনেই পঠনপাঠন বিঘ্নিত হবে জানিয়ে প্রশাসনের কাছে আপত্তি জানাই। প্রশাসন সিদ্ধান্ত বদল করায় ভাল লাগছে।”

খুশি ছাত্র সংগঠনের নেতারাও। টিএমসিপি প্রভাবিত এবিএন শীল কলেজের ছাত্রছাত্রী সংসদের সম্পাদক বিমান চৌধুরী বলেন, “প্রায় এক মাস পুজোর ছুটির পরে ৭ নভেম্বর কলেজ খুলবে। তারপর মাঠে প্রায় ১৫ দিনের জন্য মেলা বসলে ক্লাস আরও ব্যাহত হবে। তাই সরাসরি জেলা প্রশাসনের কাছে আপত্তির কথা জানাই। সিদ্ধান্ত বদল করায় আমরা খুশি।” অন্য দিকে, এসএফআইয়ের কোচবিহার জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি গোস্বামী বলেন, “জেনকিনস স্কুল প্রতিষ্ঠার পর কোনও দিন সেখানকার মাঠে রাসমেলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। এতে ইউনিট টেস্ট, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সব কিছু ব্যাহত হত। স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানিয়ে স্মারকলিপি দিই। প্রশাসন সিদ্ধান্ত বদলানোয় আমরা খুশি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rashmela coochbehar rajbari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE