শিলিগুড়ির আসন্ন পুরভোটের আগে ঘর গোছাতে পুরোপুরি আসরে নেমে পড়ল বিজেপি।
দলের তরফে আগামীকাল, শুক্রবার সকাল ১১টায় শিলিগুড়ি শহরের বাঘা যতীন পার্কে ‘সংঘর্ষ সংকল্প সমাবেশে’র ডাক দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা তথা দলের রাষ্ট্রীয় সচিব সিদ্ধার্থ নাথ সিংহ, রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ ও দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া এই সভায় উপস্থিত থাকবেন। গত মে মাসে লোকসভা ভোটের আগে শিলিগুড়ি লাগোয়া খাপরাইলে সভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরে এই অঞ্চলে এই প্রথম এত বড় মাপের সভা করতে চলছে বিজেপি। আগামী বছরের শুরুতেই শিলিগুড়ি ছাড়াও উত্তরবঙ্গের কয়েকটি পুরসভায় নির্বাচন হওয়ার কথা। তার পরেই শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচনও হবে।
দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্যে তৃণমূলের সন্ত্রাস, বিভিন্ন অথর্লগ্নি সংস্থার হাতে প্রতারিত মানুষদের আর্থিক নিরাপত্তা ও চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির মত একাধিক ইস্যুতে সমাবেশের ডাক দেওয়া হলেও আদতে এই সভা থেকেই বিজেপি শহরে পুরভোটের প্রচার শুরু করে দিতে চলেছে। পাশাপাশি, ওই দিনের সমাবেশেই শিলিগুড়ির তৃণমূল, কংগ্রেস এবং সিপিএমের একদল নেতা-কর্মী বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে দাবি করা হয়েছে। সভার পর দলীয় বৈঠকে জেলার নেতাদের ওয়ার্ড ধরে ধরে আরও জোরদার প্রচার ও কাজে নামার নির্দেশ দেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে।
বুধবার শিলিগুড়িতে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া বলেন, “আমরা এটাকে পুরভোটের প্রচার সভা বলছি না। এটা রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে এই অঞ্চলের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সভা। তবে প্রতিটি নির্বাচনই রাজনৈতিক দলের জন্য একটা পরীক্ষা। আমরা তার জন্য ভালভাবেই প্রস্তুত হচ্ছি।” তিনি জানান, এদিন বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সভার দিনই তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেবেন। সাংসদ বলেন,“প্রাথমিকভাবে তাঁদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। তারপরে দলে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি স্থির হয়েছে। আগামী দিনে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তেও এই ধরণের বড় সভা হবে।”
বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসেই শিলিগুড়ি পুরভোট হওয়ার কথা রয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২২টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়েছিল। অন্য দলগুলির তরফে স্থানীয় পুরভোটে লোকসভার প্রভাব পড়বে না বলে দাবি করা হলেও বিজেপি’র বক্তব্য, গত কয়েক বছরের পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে শহরের মানুষ তিতিবিরক্ত। নাগরিক পরিষেবা কার্যত লাটে উঠেছে। মানুষের সেই ক্ষোভকে সামনে রেখেই লোকসভায় নিজেদের ‘জমি’ করতে উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে দলের জেলা সভাপতি রথীন বসু কর্মীদের নিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে মানুষের সমস্যার কথা শুনে জনসংযোগ বাড়াতে শুরু করেছেন। মানুষের সঙ্গে কথা বলে প্রার্থী বাছাই-এর কাজও চলছে।