প্রচার শুরুর আগে গনি খানের সমাধিতে প্রার্থনায় দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রও। রবিবার ছবিটি তুলেছেন মনোজ মুখোপাধ্যায়।
বেলা তখন ১টা। কোতুয়ালি। গনি খানের বাড়ি সুনসান। মাজারেও লোক বিশেষ নেই। হঠাৎই লালবাতি জ্বালানো একটি গাড়ি। সঙ্গে অন্তত আরও তিনটি গাড়ি এসে থামল মাজারে। আশপাশের লোকজন ভেবেছিলেন, কংগ্রেসেরই কোনও তাবড় নেতা এসেছেন বুঝি। গাড়ির দরজা খুলে কিন্তু নামলেন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। সঙ্গে দক্ষিণ মালদহের তৃণমূল প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন। দু’জনেই গিয়ে ফুলের মালা দিলেন গনি খানের সমাধিতে। দক্ষিণপন্থী রাজনীতিতে মালদহ জেলায় এখনও যে অনেকটাই জুড়ে রয়েছেন প্রয়াত গনিখান চৌধুরী, রবিবার দুপুরের পর আবারও তা মনে হয়েছে জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
তৃণমূল প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন এ দিন এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমার সঙ্গে বরকতদার ছাত্র অবস্থা থেকেই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। তিনি আমার রাজনীতিরও গুরু। তাঁর জীবনের শেষ ১২ বছর আমি চিকিৎসক হিসেবেও পাশে ছিলাম।” পরে প্রয়াত নেতার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি ভোটের প্রচার শুরু করেন। আর এতেই শুরু হয়ে গিয়েছে জেলা কংগ্রেস আর তৃণমূলের তরজা। এর পরেই তৃণমূল প্রার্থীর প্রধান প্রতিপক্ষ তথা এলাকার বিদায়ী সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ঘটনাটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করার পাশাপাশি তৃণমূল প্রার্থীকে ‘বেইমান’ এবং ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি।
কংগ্রেস প্রার্থী বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বরকতদা’র কাছে থেকে চাকরি নিয়ে তাঁরই দল এবং উত্তরাধিকারকে হারানোর জন্য ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তৃণমূল প্রার্থী বেইমান, বিশ্বাসঘাতক। এখন প্রয়াত দাদার আশীর্বাদ চাইছেন। মানুষ এর উত্তর দেবেন।” তাঁর আরও অভিযোগ, “বরকতদাই যদি আদর্শ হত, তবে মোয়াজ্জেম হোসেন কংগ্রেস যোগ দিলেন না কেন? আসলে নিজের ব্যাক্তি স্বার্থে উনি তৃণমূলে গিয়েছেন। আর তৃণমূলের এত দৈন্যদশা যে জেলার কোনও লোককে দাঁড় করাতে না পেরে বাইরে থেকে মোয়াজ্জেম হোসনে নিয়ে এসেছে। দাদার কথা বলেই ওঁকে দাদার দলের বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে।”
এই প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী সাবিত্রীদেবী বলেন, “কে বেইমান, কে ইমান, এবার ভোটে এর জবাব দেবে মালদহের মানুষ। বরকতদার নাম ভাঙিয়ে কংগ্রেস চলছে। আর বরকতদা শুধু কোতুয়ালির বা কংগ্রেসের নয়। গোটা জেলার মানুষের।” সাবিত্রী বলেন, “বরকতদা আমার রাজনৈতিক গুরু তো বটেই, তাঁর হাত ধরেই রাজনীতিতে এসেছেন মোয়াজ্জেমও। আমরাই বরকতদার আদর্শের প্রকৃত উত্তরাধিকারী। ভোটে হার নিশ্চিত বুঝে কংগ্রেস নেতারা ওই সব বলছেন।” আর তৃণমূল প্রার্থীর কথায়, “গনিখান চৌধুরীর আদর্শ এবং দেখানো পথ ধরেই এগোচ্ছি। আমার সম্পর্কে কে কী বলছেন, তাঁর উত্তর আমি দেব না। শুধু এতটুকু বলব, রক্তের সম্পর্ক থাকলেই উত্তরাধিকারী হওয়া যায় না।” তিনি বলেন, ‘‘আমিই ওঁর যোগ্য উত্তরসূরি, আবু হাসেম নয়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে প্রার্থী করায়, আমি কৃতজ্ঞ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy