চালু হয়নি হিমঘর। পড়ে রয়েছে গাড়িও। হিমাংশুরঞ্জন দেবের তোলা ছবি।
পরিকল্পনার অভাবে উদ্বোধনের আট মাস পরেও চালু হয়নি সিতাইয়ের বহুমুখী হিমঘর। ওই হিমঘর তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। এই ঘটনায় হতাশ তাঁরা।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের উদ্যোগে জেলার প্রথম ওই বহুমুখী হিমঘর তৈরির কাজ শুরু করা হয়। কয়েক বছর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখে পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ওই হিমঘর উদ্বোধন করেন।
ওই গোষ্ঠীর মহিলারা জানান, বিদ্যুৎ পরিকাঠামো ও কক্ষ তৈরির কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় অনুমতি মেলেনি। তাই উদ্বোধনেই আটকে রয়েছে প্রকল্পটি হিমঘর পরিচালন কমিটির তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে তাঁরা ওই হিমঘর চালু করবেন সে ব্যাপারে হিমঘরের কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে।
কিন্তু কেন উদ্বোধনেই আটকে গেল হিমঘর?
সংস্থার সদস্যদের একাংশ জানিয়েছেন, হিমঘর উদ্বোধনে তাড়াহুড়ো করা হয়েছে। উদ্বোধন করলেই চালু করা যাবে, এমন একটা ধারণা থেকে কর্মকর্তাদের কয়েকজন ওই আয়োজন করেন। তার পরেই নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যায়। বাকি কাজ সম্পূর্ণ করা নিয়ে টাকার টানাটানি পড়ে যায়। অবশেষে মাসখানেক আগে নতুন কমিটি তৈরি করে হিমঘরের বাকি পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে।
হিমঘর পরিচালন কমিটির সম্পাদক আজিমুল হক জানান, সব মিলিয়ে আরও ২০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন ছিল। বেশ কয়েকজন ব্যাবসায়ীকে শেয়ারে নিয়ে ওই টাকা জোগাড় করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এখন আর অসুবিধে নেই। টাকার সংস্থান হয়েছে। মার্চ মাসের মধ্যে হিমঘর চালু করতে পারব বলে আশা করছি।” সমিতির প্রাক্তন সভাপতি উপেন বর্মন জানান, বিদ্যুতের পরিকাঠামো তৈরি এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কিছু কাজ বাকি ছিল। তিনি বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম উদ্বোধন হলে সে সব কাজ দ্রুত হয়ে যাবে। তা হয়নি। ওই কাজের শংসাপত্র হাতে পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দিলেই হিমঘর চালুর অনুমতি মিলবে।” আদাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সঙ্গীতা জানান, ওই হিমঘর সবাই মিলে দ্রুত চালুর চেষ্টা হচ্ছে।
প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে তিন একর জমির উপর ওই হিমঘর তৈরি হয়। হিমঘরের বড় অংশের মালিকানা রয়েছে ৪২৬টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর। প্রায় পাঁচ হাজার মহিলার তিলে তিলে টাকা জমিয়ে মহিলারা হিমঘরে নিজেদের শেয়ার দেন ব্যাঙ্ক ঋণ, নাবার্ড এবং গ্রাম উন্নয়ন দফতরের সহযোগিতায় হিমঘর গড়ে তোলা হয়। সব্জি চাষিদের হিমঘর ভাড়া দিয়ে ব্যাঙ্কের ঋণ পরিশোধ করার পরে যা লাভ থাকবে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েরা এবং অন্য শেয়ার মালিকেরা। সব্জি আনা নেওয়া করার জন্য একটি এসি গাড়িও সরকারের তরফে হিমঘরকে দেওয়া হয়। শিলিগুড়ি পর্যন্ত ওই গাড়িটি যাতায়াত করবে। কয়েক কোটি টাকার ওই গাড়িটি পড়ে রয়েছে। সেখানে কোচবিহারে ১০টি হিমঘর রয়েছে। তার একটিও বহুমুখী হিমঘর নয় স্বাভাবিক ভাবেই ওই হিমঘরের দিকে অনেকেই তাকিয়ে রয়েছেন।
হিমঘরে চারটি কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে চার হাজার মেট্রিক টন সব্জি সংরক্ষণ করা যাবে। হিমঘরে আপেল, আম, কুল-সহ নানা ফল রাখা যাবে আলুও রাখা যাবে। কোচবিহার জেলা উদ্যানপালন দফতরের আধিকারিক খুরশিদ আলম উদ্বোধনের দিন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “যতদূর জানি পুরো কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ার জন্য সেটি চালু হয়নি চালু হলে জেলার সব্জি চাষিদের ক্ষেত্রে খুব উপকার হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy