Advertisement
০৩ মে ২০২৪

সাফল্যে খুশি কর্তারা, এ বার নজর বড় ম্যাচে

কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবলের স্যফল্যে খুশি শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ কর্তারা এবার বড় প্রতিযোগিতার আয়োজনের দিকে হাত বাড়াচ্ছেন। এর আগে আই লিগ, ফেডারেশন কাপের মত প্রতিযোগিতা আয়োজন করে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন তাঁরা। এবার তাঁরা চান আইএসএল আয়োজন করতে।

রবিবারের শেষ হল শিলিগুড়ির কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবল। ফাইনালে মহানন্দা স্পোর্টিং হারিয়ে দেয় জিটিএসকে। ওই খেলার ঝলক দেখতে অ্যাপ্‌ল অ্যাপ স্টোর (আইফোন/ আইপ্যাড) অথবা গুগল প্লে স্টোর থেকে ABP AP Appটি ডাউনলোড করে এই ছবিটি স্ক্যান করুন।

রবিবারের শেষ হল শিলিগুড়ির কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবল। ফাইনালে মহানন্দা স্পোর্টিং হারিয়ে দেয় জিটিএসকে। ওই খেলার ঝলক দেখতে অ্যাপ্‌ল অ্যাপ স্টোর (আইফোন/ আইপ্যাড) অথবা গুগল প্লে স্টোর থেকে ABP AP Appটি ডাউনলোড করে এই ছবিটি স্ক্যান করুন।

সংগ্রাম সিংহ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৪৫
Share: Save:

কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবলের স্যফল্যে খুশি শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ কর্তারা এবার বড় প্রতিযোগিতার আয়োজনের দিকে হাত বাড়াচ্ছেন। এর আগে আই লিগ, ফেডারেশন কাপের মত প্রতিযোগিতা আয়োজন করে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন তাঁরা। এবার তাঁরা চান আইএসএল আয়োজন করতে।

চলতি বছরেই আইএসএলের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন, কিন্তু পরিকাঠামোর দিক থেকে তাঁরা তৈরি না হওয়াতে এবারে এআইএফএফ তাঁদের অনুমতি দেয়নি। আইএসএলের আটলেটিকো দ্য কলকাতার কয়েকটি ম্যাচ শিলিগুড়িতে করানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ কর্তারা। তাঁদের আব্দার হয়তো মেনেও নিতেন এআইএফএফ কর্তারা। কিন্তু বাদ সাধে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মান্ধাতার আমলের পরিকাঠামো। কয়েকটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোগত বদল না করলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের আর ম্যাচ দেওয়া হবে না কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামকে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপরেই নড়েচড়ে বসেন ক্রীড়া পরিষদ কর্তারা। কয়েকটি বিষয়কে চিহ্নিত করে তা রাজ্য ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতরে পাঠানো হবে। তাঁরাই পুরো স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজ করবে। সংস্কারের নকশা হয়ে গিয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে তা পাঠানো হবে জেলা দফতরে। সেখান থেকে তা যাবে রাজ্য দফতরে।

শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষ বলেন, “ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ পাণ্ডে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম ঘুরে দেখে প্রস্তাবিত বিষয়গুলির লিখিত আবেদন পাঠাতে বলেছেন। তার ভিত্তিতে আমরা পদক্ষেপ করছি।” আশা করছি, পরবর্তী মরসুমের আগে নতুন কাঞ্চনজঙ্ঘা পেয়ে যাবেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। ক্রীড়া পরিষদের তরফে অভিযোগ, মন্ত্রী গৌতম দেবকে জানানো সত্ত্বেও কোনও উদ্যোগ নেননি উনি। গৌতমবাবুকে এ ব্যপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আগামী মরসুমের আগেই স্টেডিয়ামের ঘাটতি মিটিয়ে দেওয়া হবে। আশা করছি, ২০১৫ মরসুমেই ম্যাচ পাওয়া যাবে।”

মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট পাঁচটি বিষয়ে পরিমার্জনের প্রয়োজন আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আন্তর্জাতিক মানের প্রেসবক্স তৈরির প্রস্তাব। সর্ম্পূণ বাতানুকূল এবং আধুনিক সুবিধাযুক্ত এই প্রেসবক্সে কমপক্ষে ৫০ জন যাতে একসঙ্গে বসে কাজ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে। এর আগে ফেডারেশন কাপ বা আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনের খেলায় সংবাদমাধ্যমের বসার জায়গা নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল।

দু’টি নতুন ড্রেসিং রুম তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া পুরনো দুটি ড্রেসিং রুমকেও তৈরি করা হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগ বা লা লিগা-র ক্লাবের মত অত্যাধুনিক করে। তাতে যে দলের খেলা তার প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য আলাদা করে পোশাক বদলের জায়গা থাকবে। তা আগে থেকেই নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে খেলোয়াড়দের জার্সি ঝুলিয়ে। সব রকম ব্যবস্থাই রাখা হবে।

মাঠের দু’পাশের অংশ ছোট করে গ্যালারির সামনের যাতায়াতের পরিসর বড় করা হচ্ছে। আগে মাঠের অংশ ছোট ছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে যখন এই মাঠে ফুটবল ও ক্রিকেট দুই-ই হত, তখন রঞ্জি ট্রফি ও দেওধর ট্রফির খেলার জন্য মাঠের দু’পাশ চওড়া করতে হয়েছিল। এখন এই মাঠে ফুটবল নির্দিষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাঠের বাড়তি অংশ অপ্রয়োজনীয়।

মাঠ ছোট করলে মাঠের নিকাশি ব্যবস্থা আরও ভাল করা যাবে বলে দাবি করেছেন ক্রীড়া পরিষদের সহ -সভাপতি মদন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “আগে মাঠের নীচ দিয়ে নিকাশির ব্যবস্থা ছিল। তাতে মাঠ খঁুড়ে মেরামতি করতে হত। নতুন ব্যবস্থা চালু হলে মাঠের ক্ষতি করতে হবে না।”

এ ছাড়াও স্টেডিয়ামের ভিআইপি বক্সের উপরটি স্থায়ী ছাদ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে। কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে যেমন রয়েছে, সেভাবেই ১ থেকে ৩ নম্বর গেট পর্যন্ত এই আচ্ছাদন তৈরি করা হচ্ছে।

ক্রীড়া পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও চূড়ান্ত বাজেট ঠিক হয়নি। এক কর্তা জানান, শুধু উপরের ছাদ তৈরি করতেই ৭০ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হবে। সব মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকা খরচ হবে স্টেডিয়ামকে নতুন চেহারা দিতে। যুব কল্যাণ দফতর থেকে সাড়া মেলায় অবশ্য আশ্বস্ত ক্রীড়া কর্তারা।

১৯৮৭ সালে কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্রীড়াঙ্গণ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকে পরিকাঠামোগত কোনও পরিবর্তন হয়নি স্টেডিয়ামে। মাঝে মধ্যে রঙ করা, নতুন চেয়ার বা ফ্লাড লাইট বসানোর মতো ছোটখাটো কাজ হয়েছে। এ ছাড়া এই প্রথম স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর ফলে যে কোনও ম্যাচ খেলাতেই আর কোনও সমস্যা হবে না।

শিলিগুড়িতে খেলধূলার বিষয়ে সবরকম সাহায্য করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন শহরের শিল্পপতি তথা কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন ট্রফির স্পনসর প্রসেনজিতত্‌ সাহা। তিনি বলেন, “আমি খেলাধূলা ভালবাসি। ক্রীড়া পরিষদ চাইলে খেলার উন্নতিতে সবরকম সাহায্য করতে প্রস্তুত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE