শ্রমিকের স্বীকৃতি চেয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মিছিল করলেন যৌনকর্মীরা। রবিবার কোচবিহারের প্রিয়গঞ্জ কলোনি এলাকায় শতাধিক যৌনকর্মী মিছিলে যোগ দেন। এই দাবিতে, আগামী মে দিবসে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে এ দিন। দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সাদার্ন হেলথ ইমপ্রুভমেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় মিছিলটি আয়োজিত হয়। মিছিলের পর দুপুরে যৌনপল্লি এলাকা চত্বরের কালীবাড়িতে অনুষ্ঠানও হয়। সেখানে রাজ্যের পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ-সহ বিশিষ্ট জনেরা উপস্থিত ছিলেন। এ দিন তিনি এলাকার ৫০জন যৌনকর্মীকে শাড়ি উপহার দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। কোচবিহার জেলা হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার বিষয়েও আগ্রহ বাড়তে হবে।”
শ্রম দফতরের কোচবিহার আধিকারিক সুমন্ত রায় অবশ্য বলেন, “দাবির বিষয়ে জেলা স্তরে কিছু করার নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার পুরসভা এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রিয়গঞ্জ কলোনি এলাকায় চার শতাধিক যৌনকর্মী বসবাস করেন। অনেকেরই ভোটার পরিচয় পত্র, আধার কার্ড নেই। সে কারণে নাগরিক হয়েও নাগরিকত্বের কোনও সুবিধাই তাঁরা পান না বলে অভিযোগ।
দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারীদের জন্য নির্ধারিত সরকারি সুবিধাও মেলে না বলে দাবি। বিধবা, বার্ধক্য ভাতার মতো সরকারি সুবিধাও যৌনকর্মীদের কাছে অধরাই রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। শ্রমিক হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি মিললে সরকারি প্রকল্পের সুবিধেও মিলবে বলে দাবি। দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির কোচবিহার শাখার সম্পাদিকা ছবি দাস বলেন, “শ্রমিকের অধিকার আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। এবারে ওই দাবিকে সামনে রেখেই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মিছিল করা হয়েছে।”
শ্রম দফতর ও ওই কমিটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প, স্বাস্থ্য ও দুর্ঘটনা বিমার সুযোগ রয়েছে। মাসে ন্যূনতম ২৫ টাকা জমা করলে (১৮-৬০ বছর পর্যন্ত) সর্বাধিক প্রায় পৌনে ৩ লক্ষ টাকা নগদ পাওয়ার প্রভিডেন্ট ফান্ড প্রকল্প রয়েছে। যৌন কর্মীদের শ্রমিকের স্বীকৃতির দাবি প্রসঙ্গে পরিষদীয় সচিব বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আইন অনুযায়ী কি করা যায় সরকারি ভাবে তা নিশ্চয়ই ভাবা হবে।” যদিও, শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি প্রাণেশ ধর বলেন, “যৌনকর্মীরা শ্রমিকের স্বীকৃতি পান সেটা আমরাও চাই। তা হলে নানা সরকারি প্রকল্পে তাঁরা উপকৃত হবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy