এ ভাবেই কোচবিহারের নানা এলাকার মাঠে আলু রাখা রয়েছে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
ক্ষতির আশঙ্কায় চিন্তিত চাষিদের থেকে সাড়ে ৫ টাকা কেজি করে আলু কিনতে উদ্যোগী হল কোচবিহার জেলা প্রশাসন। শনিবার জেলাশাসকের দফতরে আয়োজিত বৈঠকে প্রাথমিকভাবে জেলার ১২টি ব্লকের চাষিদের থেকে ৮০ লক্ষ টাকার আলু কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, চাষিদের থেকে কেনা আলু স্কুলের মিড ডে মিল প্রকল্প ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। আলু কেনার পদ্ধতি ঠিক করতে সোমবার মহকুমা শাসকরা বৈঠক করবেন। কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবযানী ভট্টাচার্য বলেন, “সরকারি নির্দেশনামা মেনে আগামী সপ্তাহ থেকে জেলায় চাষিদের থেকে আলু কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সোমবার মহকুমা শাসকরা বৈঠক করে আলুকেনার পদ্ধতি ঠিক করবেন।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, গতবছর আলুর ভালো দাম মেলায় এবছর কোচবিহার জেলায় আলু চাষের এলাকা প্রায় ৩ হাজার হেক্টর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার হেক্টর। তার ওপর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বিঘা প্রতি ফলন গড়ে প্রায় ১৫- ২০ মণ করে বেড়েছে। জেলায় সবমিলিয়ে সাড়ে ৯ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। অথচ জেলার মাত্র ১২টি হিমঘরে দেড় লক্ষ মেট্রিক টন আলু মজুত রাখার পরিকাঠামো রয়েছে। তাই হিমঘরের বন্ড সংগ্রহে রীতিমতো হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। কৃষক সংগঠনগুলির অবশ্য অভিযোগ, অঙ্গনওয়াড়ি ও স্কুলের মিড ডে প্রকল্পের আওতাধীন উপভোক্তাদের মাথাপিছু প্রতি সপ্তাহে এক কেজি হিসাবে বরাদ্দ থাকে। ৮০ লক্ষ টাকায় প্রাথমিকভাবে প্রায় ১৪৫৪ মেট্রিক টন আলু কেনা যাবে। তাতে মোট আলু উৎপাদনের এক শতাংশও সরকার নির্ধারিত দামে কেনার আওতায় আসবেনা। তাই সাধারণ আলু চাষিরা কতটা উপকৃত হবেন সে প্রশ্ন থাকছেই।
প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্তে খুশি নন চাষি ও ব্যবসায়ীরাও। দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রাণা গোস্বামী বলেন, গতবার এমন সময়ে প্রতি কেজি আলু ৬ টাকার বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। অথচ এ বার ন্যূনতম ২ টাকা কেজিতে দাম নেমেছে। হিমঘরেও চাহিদা মত বন্ড মিলছে না। প্রশাসন সাড়ে ৫ টাকা দরে মাত্র ৮০ লক্ষ টাকার আলু কিনলে সমস্যা মিটবে না। ৬ টাকা কেজি দরে অন্তত ৩ লক্ষ মেট্রিক টন আলু কিনলে কিছুটা ফল মিলত। কোচবিহার জেলা আলু-ধান-পাট চাষি সংগ্রাম সমিতির সম্পাদক নৃপেন কার্জি বলেন, “গতবার ১৩ টাকা কেজি দরে প্রশাসন আলু কিনেছিল। এবার তা সাড়ে ৫ টাকা কিসের ভিত্তিতে হল? জেলায় মাত্র ৮০ লক্ষ টাকার আলু কেনা লোক দেখানো ব্যাপার।”
সোমবার থেকে ন্যায্য মূল্যে কৃষকদের থেকে আলু কিনবে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন। শনিবার এ কথা জানান মহকুমা শাসক সমীরণ মণ্ডল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy