Advertisement
E-Paper

সদস্য চুরির অভিযোগ উঠল দমকল কর্মীদের সংগঠনে

ডান-বাম দুই সংগঠনের সদস্য তালিকাতেই রয়েছে একই নাম। এমনই হয়েছে দমকল কর্মীদের সংগঠনের শিলিগুড়ি শাখায়। শিলিগুড়ির দমকল কর্মীদের বামপন্থী এবং তৃণমূলপন্থী দুই সংগঠনের খাতাতেই অন্তত ত্রিশটি একই নাম রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:২৯

ডান-বাম দুই সংগঠনের সদস্য তালিকাতেই রয়েছে একই নাম। এমনই হয়েছে দমকল কর্মীদের সংগঠনের শিলিগুড়ি শাখায়। শিলিগুড়ির দমকল কর্মীদের বামপন্থী এবং তৃণমূলপন্থী দুই সংগঠনের খাতাতেই অন্তত ত্রিশটি একই নাম রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রাজ্য কো অর্ডিনেশন কমিটির অন্তর্ভুক্ত ফায়ার্স সার্ভিস ওয়ার্কাস ইউনিয়নের রাজ্য সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে প্রকাশিত শিলিগুড়ি শাখায় সদস্য সংখ্যা দেখে ‘সদস্য চুরি’র অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল প্রভাবিত দমকল কর্মীদের সংগঠন। তাঁদের দাবি, শিলিগুড়ির নব্বই শতাংশ দমকল কর্মী তাদের সংগঠনের সদস্য, সে কারণেই নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণ দিতে বাধ্য হয়ে বামপন্থী সংগঠনটি সদস্য বাড়িয়ে দাবি করেছে। যদিও, বামপন্থী সংগঠনের দাবি, দল ছেড়ে কেউ চলে গিয়ে থাকলেও, সরকারি ভাবে সংগঠনকে জানানো হয়নি। সে কারণে খাতায় কলমে যে সদস্য রয়েছে তাই ছাপা হয়েছে।

কেন বিভ্রান্তির সূত্রপাত?

গত শনিবার থেকে ফায়ার সার্ভিস ওয়ার্কাস ইউনিয়ের রাজ্য সম্মেলন গত শনি এবং রবিবার শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সম্মেলনে প্রকাশ করা সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে বিভিন্ন জেলা কমিটিতে কতজন সদস্য রয়েছেন, তার সংখ্যাও ছাপা হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী দার্জিলিং জেলার সমতলে ১২০ জন দমকল কর্মী রয়েছেন। তার মধ্যে কো অর্ডিনেশন কমিটির অর্ন্তভুক্ত এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ৮০ জন। এই সংখ্যা নিয়েই শুরু হয়েছে বিভ্রান্তি এবং টানাপোড়েন। রাজ্যে পরিবর্তনের পরে দমকল বিভাগেও শাসক দল তৃণমূল প্রভাবিত কর্মী সংগঠনে সদস্য বেড়েছে। তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠনের দাবি, মোট কর্মীর মধ্যে তাদের সংগঠনের লিখিত সদস্য সংখ্যা ৭৫। তাদের দাবি, নিয়মিত কর্মসূচিতে সব সদস্যরাই সামিল হন। দুই সংগঠনের দাবি সত্যি হলে শিলিগুড়ি ক্ষেত্রে দমকল কর্মীর সংখ্যা ১৫৫। যা প্রকৃত সংখ্যার থেকে ৩৫ জন বেশি। সে কারণেই এই বাড়তি সংখ্যা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। দুই সংগঠনের খাতাতেই এদের নাম উল্লেখ্য রয়েছে বলে অভিযোগ।

বিভ্রান্তির কারণ হিসেবে যুক্তিও দিয়েছেন বামপন্থী সংগঠনের নেতৃত্বরা। সংগঠনের জেলা সম্পাদক তথা রাজ্য সম্মেলনের অর্ভথ্যনা কমিটির সদস্য দিলীপ দাস বলেন, “সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি নেই। কোনও সদস্য অন্য সংগঠনে চলে গিয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে। তবে সেই সদস্যরা আমাদের কাছে সংগঠন থেকে ইস্তফা বা অন্য সংগঠনে চলে যাওয়ার কথা যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে পালন করেননি। তাই তাদের নাম আমাদের সদস্য হিসেবে রয়ে গিয়েছে। এটাই পদ্ধতি।” বিরোধী সংগঠনের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানোর প্রশ্ন নেই। শাসক দলের সংগঠন ভয়ভীতি দেখায়, তবু সাধারণ সদস্যরা আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন।”

সাধারণ কর্মীরা অবশ্য এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি। ঋতব্রত ধর বলেন, “আমি কোন সংগঠনে রয়েছি, তা সংবাদমাধ্যমকে বলতে যাব না। যথাযথ কতৃর্পক্ষকেই জানাব।” আরেক কর্মী মহম্মদ আজাহারউদ্দিন বলেন, “বাইরে রয়েছি। কোনও মন্তব্য করতে পারব না।”

দমকল কর্মীদের তৃণমূল প্রভাবিত কর্মী সংগঠন ফায়ার সার্ভিস এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক শান্তিকমল দাস বলেন, “মোট ১২০ জন কর্মীর মধ্যে আমাদের যদি ৭৫ জন সদস্য থাকেন, তবে অন্য সংগঠনের সদস্য ৮০ হবে কী করে?” তাঁর কটাক্ষ, “চিরকাল এই গোঁজামিল দিয়েই সংগঠন টিকিয়ে রেখেছিল ওরা। এখন ওদের সংগঠন যখন মাটিতে মিশে গিয়েছে, তখনও সেই গোজামিল তত্ত্ব খাড়া করছে।”

anirban roy siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy