ঘোষণা ছিল, রাজ্যের কয়েকটি পুরসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে ৩ সেপ্টেম্বর। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিধাননগর, আসানসোল এবং হাওড়া পুরসভার নতুন সংযোজিত ১৬টি ওয়ার্ডের বিজ্ঞপ্তি জারি করল না রাজ্য সরকার। তবে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কয়েকটি আসনের উপ-নির্বাচনের জন্য এ দিন বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। সরকারের নতুন ঘোষণা, ওই তিনটি ক্ষেত্রে ভোটের বিজ্ঞপ্তি ৮ বা ৯ সেপ্টেম্বর জারি হবে। ভোট হবে ৩ অক্টোবর।
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির সময় রয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।’’ সরকারের দাবি, ভোটের ২২ থেকে ২৫ দিন আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করা যায়।
তাই হাতে এখনও কয়েক দিন সময় রয়েছে।
প্রশাসনের একাংশের ধারণা, হাওড়া পুরসভার অন্তর্ভূক্ত নতুন ১৬টি ওয়ার্ডের নির্বাচন করতে আগ্রহী নয় সরকার।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক কর্তা এ দিন জানান, পুরভোট নিয়ে গত ১৭ জুলাই সর্বদল বৈঠক হয়েছিল। রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে সেই বৈঠকে ৩ অক্টোবর ভোট এবং ৩ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারির কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু বুধবার রাজ্য সরকার একটি চিঠি দিয়ে জানায়, হাওড়ার ভোট নিয়ে জটিলতা রয়েছে। এটা কাটিয়ে উঠতে কয়েক দিন সময় লাগবে। তারপরেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। তবে ভোট হবে ৩ অক্টোবরেই। এ দিন সরকারের পক্ষ থেকে পুরসচিব আবার জানিয়েছেন, হাওড়া পুরসভার যে আইন রয়েছে, তার ভিত্তিতেই ওই ১৬টি ওয়ার্ডের নির্বাচন করা যাবে। এ জন্য রাজ্যের পুর নির্বাচন আইন সংশোধন করে অর্ডিন্যান্স জারি করার প্রয়োজন নেই। নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘পুরসচিবের বক্তব্য নিয়ে আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে তার ভিত্তিতে
পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’ যদিও এর আগে এই কমিশনারই জানিয়েছিলেন, রাজ্যের পুর নির্বাচনী আইন সংশোধন না করে হাওড়া পুরসভার সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ১৬টি ওয়ার্ডে ভোট করা সম্ভব নয়। এ কথা সরকারকে চিঠি দিয়েও জানিয়ে দিয়েছে কমিশন। স্বভাবতই তাঁর এ দিনের ভিন্ন বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন শিবিরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, এই পুরসভার ভোট বহু দিন আগেই বকেয়া হলেও তা করতে টালবাহানা করছে রাজ্য সরকার। এ দিন নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বিজ্ঞপ্তি জারি পিছিয়ে দেওয়া ঘটনা ভোট প্রক্রিয়াকে অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিল। তাদের দাবি, ৩ অক্টোবরই আসানসোল ও বিধাননগরের ভোট করতে হবে। বামফ্রন্ট প্রতিনিধি দলের পক্ষে রবীন দেব অভিযোগ করেন, ‘‘বামেদের পর পর দু’টি আন্দোলনে ভয় পেয়ে আসানসোল ও বিধাননগর পুরসভার ভোট পিছিয়ে দিতে চাইছে সরকার। তাই এ দিন বিজ্ঞপ্তি জারি করল না। তা ছাড়া ওই দুই পুর নিগম এলাকায় গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস হেরেছে।’’ কেন এ দিন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল না, তা নিয়ে কমিশন কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি বলে জানান রবীনবাবু। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘‘মানুষের মধ্যে যে ভাবে ক্ষোভ বাড়ছে তাতে মমতার সরকার উদ্বিগ্ন। আর রাজ্য নির্বাচন কমিশন চলে রাজ্য সরকারের অধীনে। তাই তাদের এত ঢিলেঢালা ভাব।’’
হাওড়া নিয়ে জটিলতা থাকলেও কেন অন্য দুই পুরসভার ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হল না? সরকারের ব্যাখ্যা, এক সঙ্গে তিনটি পুরসভার ভোটের দিন ঘোষণা করতে চায় রাজ্য। তাই এ দিন পুরসভা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy