ফাইল চিত্র।
জুন মাসের এক রাতের অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে আতঙ্ক সঙ্গী করে পাহাড় ছাড়তে হয়েছে পর্যটকদের। তার পর টানা বন্ধ, রক্তক্ষয়ী আন্দোলন পেরিয়ে আজ, বুধবার প্রথম উৎসব শুরু হতে চলেছে পাহাড়ে। যে উৎসব দার্জিলিঙে শুরু হয়ে ছুঁয়ে যাবে কালিম্পং, কার্শিয়াং ও মিরিককে। তার ঠিক আগে বড়দিনের মরসুমেও প্রায় ফাঁকা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে সেখানকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, সকলের প্রশ্ন— এই উৎসব দেখে পর্যটকদের আস্থা ফিরবে তো? তাঁরা আবার পাহাড়মুখো হবেন তো?
পাহাড়ে বন্ধ উঠে শান্তি ফিরেছে, জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডও আবার কাজ করতে শুরু করেছে। কিন্তু ফেরার বিমল গুরুঙ্গের প্রতি জন সমর্থন এখনও কিছুটা হলেও রয়ে গিয়েছে। সেই কট্টরপন্থীরা যে কোনও সময়ে গোলমাল বাঁধাতে পারে, এই আশঙ্কাও কাজ করছে মানুষের মনে। এর পাশাপাশি বিনয় তামাঙ্গদের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও এই তিস্তা-রঙ্গিত পর্যটন উৎসবকে সমর্থন করছে না। গোর্খা লিগ, সিপিআরএম, গোর্খাল্যান্ড সংযুক্ত সংঘর্ষ সমিতি সরাসরি এই উৎসবের বিরোধিতা করেছে। সিপিআরএমের দাবি, উৎসবের জন্য বরাদ্দ টাকা পাহাড়ের গরিব চা শ্রমিকদের মধ্যে বিলি করা হোক।
দার্জিলিঙে পোস্টার পড়েছে সংযুক্ত সংঘর্ষ সমিতির। তাদের অভিযোগ, পাহাড়ের নেতা-কর্মীদের অনেকে পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের দুর্দশার সময়ে উৎসবে মেতে ওঠা ঠিক হবে না, বক্তব্য সমিতির। এই দলের সঙ্গে গুরুঙ্গের একান্ত অনুগামীরাও যোগ দিয়েছেন বলে মনে করছেন বিনয়রা। তাঁদের অস্বস্তি বাড়িয়ে সুর চড়িয়েছেন গোর্খা লিগের নেতা প্রতাপ খাতিও।
এই পরিস্থিতিতে বিনয় তামাঙ্গ সবাইকে পাহাড়ে পর্যটনের স্বার্থে এক হতে ডাক দিয়েছেন। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘কিছু বিষয়ে মতবিরোধ থাকতেই পারে। তা আলোচনার মাধ্যমে মেটানো যাবে। এই মুহূর্তে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে শান্তি-উন্নয়নের বার্তা জোরালো করতে সব পাহাড়বাসীকে উৎসবে সামিল হওয়ার অনুরোধ করছি।’’ বেলা ১টায় ম্যাল চৌরাস্তায় হবে উৎসবের উদ্বোধন। সেখানে যোগ দিতে মঙ্গলবারই পাহাড়ে পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য। এই পরিস্থিতিতে উৎসবে কতটা সদর্থক বার্তা দিতে পারবে পর্যটকদের মধ্যে, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy