Advertisement
E-Paper

ইভিএম-বিতর্কে এককাট্টা বিরোধীরা, স্থগিত রাজ্যসভা

ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তুলে বিজেপির বিরোধিতায় আজ রাজ্যসভায় একজোট হলেন বিরোধীরা। যার ফলে রামনবমীর ছুটির পর অধিবেশন বসলেও একেবারে শুরুতেই স্থগিত করে দিতে হল রাজ্যসভা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪১

ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তুলে বিজেপির বিরোধিতায় আজ রাজ্যসভায় একজোট হলেন বিরোধীরা। যার ফলে রামনবমীর ছুটির পর অধিবেশন বসলেও একেবারে শুরুতেই স্থগিত করে দিতে হল রাজ্যসভা।

উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটের প্রকাশের পর থেকেই ইভিএমে কারচুপির প্রশ্নে সরব মায়াবতী ও অরবিন্দ কেজরীবাল। তাঁদের অভিযোগে ইন্ধন জুগিয়েছে মধ্যপ্রদেশের ভিন্দের একটি ঘটনা। সেখানে উপনির্বাচন উপলক্ষে একটি ‘মক’ ভোটদান পর্ব চলছিল। সেখানে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের সামনেই দেখা যায়, ইভিএমের যে বোতামই টেপা হোক, ভোট পড়ছে বিজেপির ঘরে! এর পরেই এককাট্টা বিরোধীরা আজ তেড়েফুঁড়ে সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছে।

বিরোধীদের দাবি, আসন্ন দিল্লি পুরভোট, গুজরাত বিধানসভা-সহ সব উপনির্বাচনে কাগজের ব্যালট ফেরাতে হবে। সেই দাবি আজ ফের খারিজ করেছে নির্বাচন কমিশন। কারচুপি প্রসঙ্গে তাদের দাবি, বিদেশের ইভিএমগুলি কম্পিউটার-ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকায় হ্যাকিং-এর সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এ দেশের ইভিএমে কম্পিউটার-ইন্টারনেটে যুক্ত করার প্রযুক্তি থাকে না। ফলে হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু ভিন্দের ইভিএমে কেন সব ভোট বিজেপির ঘরে পড়ছিল, তার কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা এখনও দিতে পারেনি কমিশন। বলা হয়েছে, ওই ঘটনার তদন্ত চলছে। সম্পূর্ণ রিপোর্ট পেলে তবেই এ নিয়ে মুখ খোলা হবে।

যন্ত্র-কথা

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এ দু’টি ইউনিট থাকে। কন্ট্রোল ইউনিট ও ব্যালট বা ব্যালটিং ইউনিট। দু’টি ইউনিট যুক্ত থাকে ৫ মিটার লম্বা একটি তারের মাধ্যমে। কন্ট্রোল ইউনিট থাকে প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে। ব্যালট ইউনিট থাকে যন্ত্রের ভিতরে। ব্যালট ইউনিটে থাকা বোতাম টিপে ভোট দিয়ে থাকেন ভোটাররা।

ভারতে ইভিএম বানায় দু’টি সংস্থা। ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড, বেঙ্গালুরু।

ইলেকট্রনিক কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড, হায়দরাবাদ।

প্রথম পরীক্ষামূলক ইভিএম ব্যবহার হয় ১৯৯৮ সালে।

২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ১০ লক্ষ ইভিএম ব্যবহার করা হয়।

একটি ইভিএমে ৩৮৪০ জন ভোট দিতে পারেন।

একটি ইভিএমে সর্বাধিক ৬৪ জন প্রার্থীর নাম থাকতে পারে, মোট চারটি ব্যালট ইউনিটে।

একটি ইভিএমের দাম প্রায় সাড়ে দশ হাজার টাকা।

বিরোধীরা তাতে চুপ করেননি। বিরোধীরা, বিশেষ করে কংগ্রেস যে বিষয়টি নিয়ে সরব হবে, তার ইঙ্গিত মিলেছিল আজ সকালে তাদের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে। সেখানে কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘আগে আমারও ইভিএম-এর উপরে আস্থা ছিল। কিন্তু ভিন্দের ঘটনা আমার চোখ খুলে দিয়েছে। আপনারা বিষয়টি নিয়ে সরব হন।’’ তার পরে আজ অধিবেশন বসতেই রাজ্যসভায় রুটিন কাজ বন্ধ করে ইভিএম নিয়ে আলোচনার দাবিতে আলাদা করে চারটি নোটিস দেন কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির সাংসদেরা। কিন্তু আলোচনায় রাজি হননি ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়েন। নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তিনি জানান, ইভিএমে কারচুরি অসম্ভব। বিরোধীদের অভিযোগের প্রশ্নে কুরিয়েন জানিয়ে দেন, রাজ্যসভার বদলে বরং নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হোক বিরোধীরা।

কুরিয়েন এ কথা বলতেই একজোটে ওয়ালে নেমে আসেন বিরোধী নেতারা। বিজেপিকে ‘বেইমান’ তকমা দিয়ে বিএসপি নেত্রী মায়াবতী বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে চূড়ান্ত কারচুপি করে জিতেছে বিজেপি।’’ বিজেপির সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি পাল্টা বলেন, ‘‘এই ইভিএমে-ই হওয়া ভোটে বিজেপি বিহার, দিল্লি, পঞ্জাবে হেরেছে। তখন কেউ কারচুপির অভিযোগ তোলেনি।’’ পাল্টা কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘ধরা যাতে পড়ে, সে জন্য উত্তরপ্রদেশে বেছে বেছে কারচুপি করেছে নকভির দল।’’ তাঁকে সমর্থন করেন সপা’র রামগোপাল যাদব। সপা-র নরেশ অগ্রবালের অভিযোগ, গুজরাতের যে সংস্থাটি ইভিএম রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে, তার সঙ্গে বিজেপি নেত্রী তথা লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের ছেলে জড়িত। পরে নকভি পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করে দেন কুরিয়েন।

Rajya Sabha EVM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy