প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পরে কেরলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে বদল এনেছে হাইকম্যান্ড। নির্বাচনের ফলাফলের পর্যালোচনার জন্য গঠিত এআইসিসি-র কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার পরেই ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বার বাংলাতেও কি একই পথে হাঁটবে তারা? এই চর্চাই এখন শুরু হয়েছে কংগ্রেস শিবিরে।
বাংলার কংগ্রেসের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় ভার্চুয়াল আলোচনার পরে এআইসিসি-র কাছে রিপোর্ট দিয়েছে পর্যালোচনা কমিটি। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চবনের নেতৃত্বে ওই কমিটিতে ছিলেন সলমন খুরশিদ, মনীশ তিওয়ারি, ভিনসেন্ট পালা ও জ্যোতি মানি। সূত্রের খবর, সরাসরি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পরিবর্তনের কোনও সুপারিশ ওই কমিটি করেনি। কমিটির দায়িত্বও তেমন নয়। তবে রাজ্য কংগ্রেসের নানা স্তর থেকে পাওয়া মতামতের ভিত্তিতে তাদের পর্যবেক্ষণ, বাংলায় দলের সাংগঠনিক রদবদল দরকার। সংগঠনের বিভিন্ন স্তরেই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ঘাটতি এবং সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এই গোটা প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন করার জন্য প্রদেশ সভাপতি পদেও ‘২৪ ঘণ্টার লোক’ থাকলে ভাল হয়। কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাজ্যে দলের অনেক নেতাই যে এমন মনে করেন, তা উল্লেখ করা হয়েছে কমিটির পর্যবেক্ষণে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এখন একই সঙ্গে লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা এবং সংসদে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান। দলের কাজেই তাঁকে অনেকটা সময় দিল্লিতে দিতে হয়। পাশাপাশি বহরমপুরে নিজের লোকসভা কেন্দ্র তথা মুর্শিদাবাদেও বিশেষ নজর দিতে হয় তাঁকে। এমতাবস্থায় ‘পূর্ণ সময়ের’ সভাপতির অর্থ অন্য কাউকে রাজ্য কংগ্রেসের শীর্ষ পদে নিয়ে আসা— এমনই ধরে নিচ্ছেন দলের একাংশ।
অধীরবাবু অবশ্য ভোটের পরে প্রকাশ্যে এবং তার পরেও ঘনিষ্ঠ মহলে বলে রেখেছেন, প্রদেশ সভাপতি পদের জন্য তিনি দিল্লির কাছে দরবার করেননি। সোমেন মিত্রের প্রয়াণের পরে তিনি লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা জেনেও প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব অধীরবাবুকে দিয়েছিলেন সনিয়া গাঁধী। এখন সনিয়া বা রাহুল গাঁধী যদি মনে করেন বাংলায় দলের স্বার্থে ফের পরিবর্তন দরকার, তা হলে তিনি পদ ছেড়ে দেবেন। তবে কংগ্রেসের অন্দরে আরও বড় প্রশ্ন, প্রদেশ সভাপতি পদে পরিবর্তন আনতে হলে বিকল্প নাম কী আছে? ধারে-ভারে বর্তমান সভাপতির সমতুল কাউকে খুঁজে না পেলে তখন কি নতুন কাউকে দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পথে যাওয়া হবে?
পর্যালোচনা কমিটির কাছে বাংলার একাধিক নেতা মত দিয়েছেন, শুধু প্রদেশ সভাপতি বদলে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। কংগ্রেসের সংগঠন যে ভাবে ক্ষয়ে গিয়েছে এবং নিচু তলায় আন্দোলন থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে, তার সংশোধন দরকার। তার প্রেক্ষিতেই সাংগঠনিক রদবদলের প্রসঙ্গ এনেছে পর্যালোচনা কমিটি। পাশাপাশিই, বামেদের সঙ্গে জোট রেখে চলা উচিত এবং জোট ছেড়ে একা চলা উচিত— দু’রকম মতই জমা পড়েছিল কমিটিতে। রাজনৈতিক কৌশলের এই প্রশ্নে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কোর্টেই বল রেখেছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy