কংগ্রেস নেতৃত্বের সুপারিশ এড়িয়ে মানস ভুঁইয়াকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান পদে বসিয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই এ বার জানিয়ে দিলেন, মানসববাবু তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে ‘আনুষ্ঠানিক ভাবে’ জানানো হলে পিএসি-র চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হবে বিরোধী দলকেই। ওই কমিটির দায়িত্ব বিরোধীদের দেওয়ার রেওয়াজ তিনি ভাঙতে চান না।
সম্প্রতি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সবংয়ের বিধায়ক মানসবাবু। কিন্তু কংগ্রেস পরিষদীয় দল তাঁর অবস্থান জানতে চেয়ে যে চিঠি দিয়েছে, তার উত্তর আসেনি এখনও। স্পিকারের দফতরকেও কিছু জানানো হয়নি। আনুষ্ঠানিক ভাবে মানসবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিলে দলত্যাগ-বিরোধী আইনে তাঁর বিধায়ক-পদ খারিজ হয়ে যাওয়ার কথা। তখন পিএসি-র শীর্ষ পদ ফের বিরোধীদেরই দিতে চান স্পিকার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মানসবাবুকে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হয়েছে এক বছরের জন্য। তার আগে তাঁকে সরাতে চাই না। কিন্তু তিনি শাসক দলে চলে গিয়েছেন বলে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানালে এবং বিধি মেনে বিধায়ক-পদ চলে গেলে ওই পদ বিরোধীদেরই দেওয়া হবে।’’ তখন কি তিনি বিরোধী শিবিরের প্রবীণতম বিধায়ককে বাছবেন? স্পিকারের জবাব, ‘‘সেটা ঠিক করার এক্তিয়ার আমার আছে। বিরোধী দল তাদের পছন্দের নাম সুপারিশ করতেই পারে। কিন্তু স্পিকার কী করবেন, সেটা তিনিই ঠিক করতে পারেন।’’
মানসবাবু অবশ্য ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তিনি পিএসি-র চেয়ারম্যানের পদ স্বেচ্ছায় ছাড়বেন না। বিধায়ক-পদ থেকে ইস্তফা দেবেন কি না, তা-ও ছেড়ে রেখেছেন তৃণমূল নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের উপরে। এই অবস্থায় চিঠির উত্তরে তিনি কী বলেন, তার অপেক্ষায় আছেন কংগ্রেস পরিষদীয় নেতৃত্ব। আর স্পিকারও জানিয়েছেন, মানসবাবুর দলীয় অবস্থানের ব্যাপারে সরকারি ভাবে তাঁর কিছু জানা নেই।
প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানসবাবুর আগে বিষ্ণুপুর ও রেজিনগরের দুই বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য ও রবিউল আলম চৌধুরী কংগ্রেস ছেড়েছেন। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কারণ দর্শানোর চিঠির জবাবে দু’জনেই দাবি করেছিলেন, তাঁরা কংগ্রেসেই আছেন। তার পরে মান্নানের দ্বিতীয় চিঠির উত্তর দেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও নীরব থেকেছেন তুষারবাবু। স্পিকারের দফতর থেকে এ বার তুষারবাবুর দলীয় অবস্থান জানতে চেয়ে এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে। স্পিকার সোমবার বলেন, ‘‘আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করেছি। সেই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসাবে কী করেছি, তা নিয়ে মন্তব্য করব না।’’ বিরোধী দলনেতার দফতর সূত্রের খবর, স্পিকারের সচিবালয়ের চিঠির প্রতিলিপি মান্নানের কাছে পৌঁছেছে।
সিপিএমের দলত্যাগী বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসও কারণ দর্শানোর দ্বিতীয় চিঠির জবাব দেননি। জবাবের সময়সীমা পেরিয়েছে এ দিনই। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী আজ, মঙ্গলবারই বিষয়টি স্পিকারের নজরে আনবেন। তবে দলত্যাগীদের নিয়ে বিধানসভার হঠাৎ তৎপরতায় ঈষৎ আলোড়িত বিরোধী শিবির। তাদের ব্যাখ্যা, দল ভাঙনো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলার প্রস্তুতি শুরু হতেই এমন নড়েচ়়ড়ে বসা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy