Advertisement
E-Paper

বর্ষণে ঘাটতি সত্ত্বেও রাজ্যে ভাল ফলন ধানের

গত বর্ষায় তেমন বৃষ্টি হয়নি। আমন ধানগাছ বেড়ে ওঠার সময়েও প্রয়োজনমাফিক স‌েচ মেলেনি। তবে পোকামাকড়ের আক্রমণ না-থাকায় এবং টানা রোদ পাওয়ায় রাজ্যের খরিফ মরসুমে ধানের উৎপাদন এ বার লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে চলেছে। ফলে রাজ্যে চালের জোগানে সমস্যা হবে না বলেই আশা করা হচ্ছে। 

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৮

গত বর্ষায় তেমন বৃষ্টি হয়নি। আমন ধানগাছ বেড়ে ওঠার সময়েও প্রয়োজনমাফিক স‌েচ মেলেনি। তবে পোকামাকড়ের আক্রমণ না-থাকায় এবং টানা রোদ পাওয়ায় রাজ্যের খরিফ মরসুমে ধানের উৎপাদন এ বার লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে চলেছে। ফলে রাজ্যে চালের জোগানে সমস্যা হবে না বলেই আশা করা হচ্ছে।

ফলনের প্রাথমিক আভাস অনুযায়ী কৃষি দফতর মনে করছে, এ বার খরিফ মরসুমে আউস-আমন চাষ থেকে ১১৭ লক্ষ মেট্রিক টন চাল মিলতে পারে। রাজ্যে প্রতি বছর ১২৩ লক্ষ মেট্রিক টন চাল লাগে। এই পরিমাণ চাল উৎপাদিত না-হলে গণবণ্টন ব্যবস্থা, মিড-ডে মিল এবং খোলাবাজার— সর্বত্রই সমস্যা অনিবার্য। কৃষিকর্তারা জানান, বোরো ধানের ফলন যোগ করলে রাজ্যে এ বারেও ১৬০ লক্ষ মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হবে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই বেশি। যদিও এ বার পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ফলন নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন কৃষিকর্তারা। ৪ জানুয়ারি দফতরের পর্যালোচনায় খরিফ উৎপাদনের যে-প্রাথমিক হিসাব এসেছে, তাতে ওই কর্তারা খুশি।

কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৃষ্টি কম হলেও সরকার আউস-আমন চাষে ক্যানালের মাধ্যমে জল দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। তার ফল মিলেছে। ধান-চালের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে কিছুটা বেশিই হবে। ফলে চালের বাজারও সস্তা থাকবে।’’

কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এ বার খরিফ মরসুমে বৃষ্টি কম হয়েছিল। বিশেষত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সময়ে বৃষ্টি না-হওয়ায় ধান রুইতে দেরি হয়। ফলে উৎপাদন কেমন হবে, তা নিয়ে আশঙ্কা ছিল। ধান রোয়ার পরে যখন দ্বিতীয় দফার বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়, তখনও তেমন বর্ষণ হয়নি দেয়। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, সরকার বিভিন্ন জলাধার থেকে খরিফ মরসুমেই ক্যানালের মাধ্যমে সেচের জল দিতে বাধ্য হয়। বর্ষার জল ধরে রেখেই রবি মরসুমে চাষে জল দেওয়াটাই রীতি। এ বার তা ভাঙতে হয়েছিল।

কৃষি অধিকর্তা সম্পদকুমার পাত্র বলেন, ‘‘পশ্চিমের কয়েকটি জেলায় কিছুটা সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। তবে তা শুধু ডাঙা জমির ক্ষেত্রে। নিচু জমিতে যাঁরা ঠিক সময়ে আমন ধান চাষ করতে পেরেছিলেন, তাঁদের ফলন ভাল হয়েছে। তাই উৎপাদন একই থাকছে। খরিফের এলাকাও কমেনি। বরং সামান্য বেড়েছে।’’

ফলন ভাল হল কী ভাবে?

কৃষি বিশেষ়জ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এ বার চাষের এলাকা ও ফলন ব্যাপক ভাবে বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু ভাল বৃষ্টি না-হওয়ায় তা হয়নি। তবে বৃষ্টি না-হওয়ায় টানা রোদের জন্য রোগ-পোকার আক্রমণ কম হয়েছে। ফলে গত বছরের চেয়ে ফলন কিছুটা বেড়েছে। কৃষিকর্তারা জানান, রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকের খেত থেকে ১৫ হাজার ৩০০টি ধানের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। তার মধ্যে প্রায় ৪৫০০টি নমুনার রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। ‘কর্প কাটিং’-এর ফল বিশ্লেষণে যে-প্রাথমিক আভাস মিলেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, এ বার চালের উৎপাদন বাড়বে। চূড়ান্ত রিপোর্ট আসতে আরও কয়েক মাস লাগতে পারে।

Rain Paddy Production West Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy