ব্যবসা বন্ধ হোক স্কুলে।
সিবিএসই বোর্ড স্কুলে স্কুলে বই, খাতা, পড়ার অন্য সামগ্রী, পোশাক, জুতো বিক্রি বন্ধে নির্দেশিকা জারি করেছে। এ বার আইসিএসই বোর্ডের স্কুলগুলির অভিভাবকেরাও একই দাবি তুলছেন।
সিবিএসই স্কুলগুলিতে তবু এনসিইআরটি-র বই কিনতে হয়। বই নিয়ে তেমন ব্যবসার সুযোগ নেই। কিন্তু আইসিএসই বোর্ডে নির্দিষ্ট প্রকাশনা সংস্থা না থাকায় অনেক স্কুলেই বইয়ের ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠেছে বলে অভিযোগ কলকাতার একটি আইসিএসই স্কুলের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সিবিএসই-র থেকে আইসিএসই-তে পড়ার চাপ বেশি। তাই সেখানে বইও বেশি লাগে। তার অধিকাংশই কিনতে হয় স্কুলের নির্দিষ্ট দোকান থেকে।’’
সোমবার মধ্য কলকাতার জিউইশ বালিকা বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা ফি বৃদ্ধি নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। সেই সঙ্গেই স্কুল থেকে বই, পোশাক কেনার বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে তাঁদের। মধ্য কলকাতারই একটি আইসিএসই স্কুলের এক অভিভাবকের মন্তব্য, ‘‘শুধু বই-খাতা হলে কথা ছিল। পোশাক, জুতো নিয়েও স্কুল যা আদিখ্যেতা করে তাতে আমাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত।’’ দক্ষিণ কলকাতার এক কলেজ শিক্ষিকার বড় মেয়ে সিবিএসই স্কুলে পড়ে। ছোটটি আইসিএসই স্কুলে। তিনি বলেন, ‘‘বড় মেয়ের বই কিনতে সমস্যা হয় না। ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল অ্যান্ড রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (এনসিইআরটি) বইয়ের দাম অপেক্ষাকৃত কম। অনলাইনেও মেলে। কিন্তু ছোটর বেলায় নির্দিষ্ট প্রকাশনা সংস্থা নেই। বইয়ের দাম বেশি। একই বিষয়ে একাধিক বইও কিনতে হয়। তা-ও স্কুল থেকেই।’’ কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক কেন সিবিএসই ও আইসিএসসি বোর্ডকে এক নিয়ম মেনে চলতে বলতে পারে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন ওই শিক্ষিকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের এক আইসিএসই স্কুলের অধ্যক্ষ অবশ্য মনে করেন, এনসিইআরটি’র বই দেখতে এত আকর্ষণহীন যে পড়ুয়ারা পড়তে চায় না। সেই বই আইসিএসইতে চালুর চেষ্টা হলে পডুয়া তা পড়বে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন ওই অধ্যক্ষ। লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজ এবং গার্লস স্কুলের সচিব সুপ্রিয় ধর জানালেন, এই দুই স্কুলেরই বইপত্র স্কুল থেকে দেওয়া হয়। পোশাকের জন্য তাঁদের নিজস্ব টেলার রয়েছেন। কিন্তু বাইরে থেকে পোশাক কিনতে অসুবিধা কী? সুপ্রিয়বাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘ছেলেদের ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা নেই। কিন্তু মেয়েদের স্কার্টের বিশেষ ‘কাট’ অনেক সময় বাইরের টেলার ঠিক বানাতে পারেন না। কিন্তু চাইলে পড়ুয়ারা বাইরে থেকে পোশাক বানাতে পারে।’’
দিল্লি পাবলিক স্কুল মেগাসিটি’র অধ্যক্ষা ইন্দ্রাণী সান্যাল জানালেন, তাঁরাই বই এবং পোশাক স্কুল থেকে দেন। তাঁর মতে, এতে অভিভাবকদের সুবিধা হয়। রামমোহন মিশন স্কুলের অধ্যক্ষ, সুজয় বিশ্বাসেরও একই মত। বরানগর সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুলের অধ্যক্ষ নবারুন দে জানালেন তাঁরা ৩০টি বইয়ের দোকানের নাম অভিভাবকদের দিয়ে দেন।
কিন্তু অভিভাবকেরা সিবিএসই স্কুলগুলির মতোই ‘স্বাধীনতা’ চান। আইসিএসই বোর্ডের চিফ এগ্জিকিউটিভ জেরি অ্যারাথুন সোমবার কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বোর্ডের একটি স্তরে বলা হয়েছে, অভিভাবকরা প্রস্তাব দিলে তাঁরা বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy