Advertisement
E-Paper

স্কুলে পাঠাব সন্তানকে, অঙ্গীকার অভিভাবকদের

বাবা সানারুল হক সাত সকালেই রিকশা নিয়ে বের হয়ে যান। বাড়ি ফিরতে রাত্রি। সকাল হলেই পরিচারিকার কাজে বেরিয়ে যেতে হয় মা রুবি বিবিকেও। কিন্তু মেয়ে স্কুলে ভর্তি হলেও অভাবের সংসারে ওর পড়াশোনা নিয়ে কোনও মাথাব্যথা ছিল না ওই দম্পতির।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:১৭
অভাবী পড়ুয়াদের হাতে উঠল খাতা, কলম। —নিজস্ব চিত্র।

অভাবী পড়ুয়াদের হাতে উঠল খাতা, কলম। —নিজস্ব চিত্র।

বাবা সানারুল হক সাত সকালেই রিকশা নিয়ে বের হয়ে যান। বাড়ি ফিরতে রাত্রি। সকাল হলেই পরিচারিকার কাজে বেরিয়ে যেতে হয় মা রুবি বিবিকেও। কিন্তু মেয়ে স্কুলে ভর্তি হলেও অভাবের সংসারে ওর পড়াশোনা নিয়ে কোনও মাথাব্যথা ছিল না ওই দম্পতির। কখনও খাতা, কখনও কলম-পেন্সিল না থাকায় ধীরে ধীরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সোনালি। সে কথা জানতে পেরে বাড়ি গিয়ে সোনালির বাবা-মাকে বুঝিয়ে ফের স্কুলে পাঠানোর বন্দোবস্ত করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

শুধু সোনালি নয়। মালদহের চাঁচলের নয়াটোলার এমন আরও চার শিশুকে ফের স্কুলমুখী করাই নয়, তারা যত দিন পড়াশোনা করবে ততদিন ধরে তাদের ব্যাগ, খাতা, কলম-পেন্সিল দিয়ে সাহায্য করারও দায়িত্ব নিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। শনিবার ছিল সরস্বতী পুজো। আর রবিবার ভ্যালেন্টাইন’স ডে। ওই দুই ভালোবাসার দিন অনেকেই নিজের মতো করে পালন করেছে। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা এদিন ওই পাঁচ পড়ুয়াকে স্কুলমুখী করতে পেরে তাদের হাতে ভালোবাসার স্মারক হিসেবে তুলে দিয়েছে স্কুলব্যাগ, জলের বোতল, টিফন বাক্স, খাতা, কলম-পেন্সিল। পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের ফের স্কুলে পাঠাবেন বলে অভিভাবকদেরও অঙ্গীকার করিয়ে নিয়েছেন তারা।

ওই পাঁচ পড়ুয়ার বাড়ি নয়াটোলা এলাকায়! এদের মধ্যে সোনালি খাতুন দ্বিতীয় শ্রেণিতে ওঠার পড়েই স্কুল যাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। একই অবস্থা রুহুল আলি, বিক্রম দাস, আব্দুল মালেক ও শেখ মোতিউরের! পাঁচ দিস্তা খাতা, পাঁচটি কলম, পেন্সিল বইয়ের ব্যাগ পেয়ে মহাখুশি ওরা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে কয়েকদিন আগে থেকেই অবশ্য ওদের স্কুল যাওয়া শুরু হয়েছিল। এবার অন্যদের মতো ব্যাগ কাঁধে ওরাও স্কুল যেতে পারবে ভেবে রীতিমতো খুশিতে ডগমগ পাঁচ পড়ুয়াই।

স্কুলে পোশাক, মিড ডে মিলের খাবার, বইপত্রও পড়ুয়াদের দেওয়া হয়! তারপরেও কেন স্কুলমুখী না হওয়ার মতো সমস্যা তৈরি হচ্ছে সেই প্রশ্নও উঠেছে! স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও অভিভাবকদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, অভাবি পরিবারের ছেলেমেয়েরা কম বয়সেই অনেকেই বাবা-মাকে সংসার চালাতে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে। পাশাপাশি অনেকেরই ছেলেমেয়েদের খাতা, কলমটুকুও কিনে দেওয়ার সামর্থ্য থাকে না। অনেকের সেটুকুর সামর্থ্য থাকলেও নজর দেন না। তাই স্কুলের প্রতি অনীহা তৈরি হয় তাদের।

সোনালির বাবা-মায়ের মতোই অবস্থা অন্যদেরও। যেমন বিক্রমের কথাই ধরা যাক। বাবা ফুলবাবু দাস সারাদিন একটি ছোট দোকানে কাজ করেন! স্ত্রী তেঁতলিদেবীও পরিচারিকা! ছেলেকে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু খাতা, পেন্সিল না থাকায় একসময় স্কুলে যাওয়াই বাদ দিয়ে দেয় ও। এখন আব্দুল মালেক, রুহুল আলিরা জানায়, এখন থেকে প্রতিদিন স্কুলে যাব।

state news children in school
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy