পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি
দাড়িভিট হাইস্কুল অবিলম্বে খুলতে হবে, মঙ্গলবার জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে স্কুল বন্ধ। এখন তদন্তের দাবিতে স্কুল খুলতে না দিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন নিহত দুই তরুণ রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণদের মা। স্কুলের পরিচালন সমিতিও অভিভাবকদের বৈঠক ডেকে শেষে পিছিয়ে গিয়েছে। ফলে দুশ্চিন্তায় রয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীরা এবং তাদের বাড়ির লোক। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের বার্তা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
পার্থবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘দাড়িভিটে আন্দোলন শুরু হয়েছিল শিক্ষক চেয়ে। এখন আন্দোলন হচ্ছে স্কুলে পড়া বন্ধ রাখতে। মৃতদের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে সকলের। তার মানে এই নয় যে, স্কুল বন্ধ থাকবে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘শিক্ষকদের স্কুলে যেতে হবে। পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অনিয়ম বরদাস্ত করব না।’’ স্কুল পরিচালন সমিতির সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
এলাকার মানুষের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খুলে ক্ষোভ কমানো যে এখনই জরুরি, সেটা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে প্রশাসনিক আধিকারিক, সকলেই বুঝতে পারছেন। কিন্তু কথা শুরু করা হবে কী ভাবে, তা কারও কাছেই স্পষ্ট নয়। ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘এলাকার মানুষের সঙ্গে শীঘ্রই কথা বলে স্কুল খোলা নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’
যদিও নিহতদের বাড়ির লোকেরা এ দিনও জানিয়েছেন, তদন্তের নির্দেশ দেওয়া না হলে তাঁরা স্কুল খুলতে দেবেন না। মঞ্জু বর্মণ বলেন, ‘‘স্কুল ছেলের প্রাণ নিল। সেই হত্যার তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত স্কুল খুলতে দেব না। তদন্ত শুরু হলে আমি নিজে গিয়ে স্কুল খুলে দিয়ে আসব। তবে সেই ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের কিছুটা ক্ষতি হলে কী আর করার আছে!’’ ঝর্ণা সরকার বলেন, ‘‘গুলি চালানো হল কার নির্দেশে, তদন্ত করে দেখা হোক। তবে তদন্ত না করে স্কুলের দরজা
খোলার চেষ্টা করলে তার সামনে শুয়ে পড়ব। আমাদের দেহের উপর দিয়েই যেতে হবে।’’
পরিচালন সমিতির কেউ কেউ জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তাঁরাও নিরুপায়। স্কুল পরিচালন সমিতির সরকার মনোনীত সদস্য তপন মজুমদার বলেন, ‘‘সোমবার বৈঠক না হওয়ায় অভিভাবকেরা অনেকেই অপমানিত। আমার ডাকে কেউ আর আসবেন না বলে জানিয়েছেন।’’ অভিভাবকদের একাংশ কিন্তু বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। চিন্তিত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও। তেমনই কয়েক জন ছাত্রী অঙ্কিতা মজুমদার, মিনু কীর্তনীয়া এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মণিকা বিশ্বাসদের কথায়, ‘‘সামনে টেস্ট পরীক্ষা। বুঝে উঠতে পারছি না সেই পরীক্ষা হবে কিনা। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’’ স্কুলের ১৯০০-এরও বেশি পড়ুয়ার ভাগ্য আপাতত ঝুলে এই টানাপড়েনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy