E-Paper

যোগ্যতায় চাকরি সত্ত্বেও সন্দেহ করছেন মানুষ, আক্ষেপ শিক্ষকদের

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে, তাতে টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষামহলের একাংশের দাবি, অনেকেই নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু, তাঁদেরও এখন লোকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৩২
An image of a teacher

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

২০১৯ সালে স্কুলে চাকরি পেয়েছেন? আপনাদের নিয়োগ নিয়ে তো বিস্তর গন্ডগোল আছে শুনেছি। ২০১৯ সালে স্কুলে নিয়োগ হয়েছে শুনে অনেকে আবার একটু বাঁকা হাসছেন। ২০১৯ সালে নিয়োগ শুনে ঋণ দেওয়া নিয়েও কোথাও দু’বার ভাবছে কোনও কোনও ব্যাঙ্কও।

যে সব চাকরিপ্রার্থীরা ওই বছর বিভিন্ন স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন তাঁদের অনেকেই এরকম অভিজ্ঞতার মুখে পড়ছেন। তাঁদের অভিযোগ, নিজের যোগ্যতায় স্কুলে চাকরি পেয়েও অনেকের চোখ সন্দিহান। এমনকি অনেক ক্ষেত্রেই সামাজিক অসম্মানের সামনে পড়তে হচ্ছে তাঁদের।

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে, তাতে টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষামহলের একাংশের দাবি, অনেকেই নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু, তাঁদেরও এখন লোকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। বিশেষ করে চার বছর আগে পাওয়া চাকরির এখনও যেহেতু স্থায়ীকরণ হয়নি।

নবম থেকে দ্বাদশের এক শিক্ষিকা সুমিত্রা সিংহ জানাচ্ছেন, ২০১৬-তে পরীক্ষা দিয়ে ২০১৯ সালে তিনি চন্দননগরের একটি স্কুলে নিয়োগ পান। সুমিত্রা বলেন, ‘‘আমাদের যখন নিয়োগ হয়, তখনও কোনও মামলা হয়নি। পরে র‌্যাঙ্ক জাম্প থেকে শুরু করে ওএমআর শিটে কারচুপি, এ সব নানা অভিযোগে মামলা হয়েছে। এই মামলাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে বারবার করে নিয়োগপত্র থেকে শিক্ষাগত যোগ্যতা, সুপারিশপত্র-সহ আমাদের সব ধরনের নথি ফের পাঠানোর নির্দেশ আসছে জেলা শিক্ষা দফতর থেকে। আদালতের নির্দেশের কপিও আমাদের দেওয়া হচ্ছে।’’

সুমিত্রাদের দাবি, এ সব জানতে পেরে স্কুলের সহ-শিক্ষক থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন, অনেকেই আমাদের নিয়োগ স্বচ্ছ ভাবে হয়েছে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। পড়াশোনা করে নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছি আমরা। এটাই কি কাম্য ছিল?’’ সুমিত্রার কথায়, সব ধরনের নথি জেলা স্কুল পরিদর্শককে দিয়ে দেওয়ার পরেও আমাদের স্থায়ীকরণের চিঠি না-আসায় এই নিয়ে অনেকেই আরও বেশি অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। আশপাশের লোকজনের সন্দেহ আরও বাড়ছে।

বাড়ির কাছে স্কুল পেতে ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্কুলে নিয়োগ পেয়েছেন ভূগোলের এক শিক্ষক। তিনি জানিয়েছেন, জেলা স্কুল পরিদর্শকের নির্দেশে এ নিয়ে দু’বার নিজের চাকরির সব নথি জমা দিয়েছেন। ওই শিক্ষকের মতে, যাঁরা নতুন শিক্ষক হিসেবে ২০১৯ সালে নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁদের নাম আলাদা করে নোটিস বোর্ডে লিখে রাখা হয়েছে কিছু স্কুলে। নতুন শিক্ষকদের নাম সাধারণ ক্ষেত্রে নোটিস বোর্ডে ঝোলানো হয় না। এ ক্ষেত্রে কেন ঝোলান হল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। নাম বলতে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষক বলেন, ‘‘বারবার নিয়োগ নথি পাঠাতে হচ্ছে বলে বাড়ির লোকও প্রশ্ন করছে কেন একই নথি বারবার পাঠাচ্ছি? তা হলে কি নিয়োগে কোনও গন্ডগোল আছে? কেন এখনও স্থায়ীকরণের চিঠি এল না সেই প্রশ্নেরও সম্মুখীন
হতে হচ্ছে।’’

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘স্থায়ীকরণ বা কনফার্মেশনের কিছু নথি চাওয়া হয়েছিল। সেই নথি সব পাওয়া যায়নি। সেগুলো আসতে শুরু করেছে। এই প্রক্রিয়া দ্রুত
শেষ হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SSC Recruitment Educational qualification

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy