Advertisement
E-Paper

আলোছায়া মাখা গ্রামে রাত বাড়লে গুলির শব্দ

বারনেস বেক চা বাগানের এই গ্রামটিই ছোট রঙ্গিত যাওয়ার আগে শেষ জনপদ। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছোট রঙ্গিত নদীর ধারে শিবিরে অভিযান চালায় পুলিশ। বিমল গুরুঙ্গের বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াই চলে পুলিশের।

প্রতিভা গিরি

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

ছড়িয়ে ছিটিয়ে গুটি কয়েক দোকান। বেশিরভাগেরই ঝাঁপ বন্ধ। অপরিচিত মুখ দেখে দ্রুত পায়ে ঘরে ঢুকে গেলেন উঠোনে বসে থাকা মাঝবয়সী গৃহকর্ত্রী। সরু রাস্তার পাশে স্মৃতি ফলক বসানো কংক্রিটের একটি বেদি। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত গল্পগাছা করে অলস সময় কাটানোর জন্য তৈরি। দেখা গেল, বেদির ওপরে ধুলোর আস্তরণ। অন্তত দিন দু’য়েক সেখানে বসেননি কেউ। থমকে গিয়েছে এই পাহাড়ি গ্রামের জনজীবনের স্বাভাবিক গতি।

বারনেস বেক চা বাগানের এই গ্রামটিই ছোট রঙ্গিত যাওয়ার আগে শেষ জনপদ। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছোট রঙ্গিত নদীর ধারে শিবিরে অভিযান চালায় পুলিশ। বিমল গুরুঙ্গের বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াই চলে পুলিশের। বাসিন্দাদের কয়েকজন নাম গোপন রাখার শর্তে দাবি করলেন, নিশুতি রাতে জঙ্গলের ভিতর থেকে গুলির শব্দ তাঁরা স্পষ্ট শুনেছিলেন।

দার্জিলিঙের সিংমারি থেকে টকভার হয়ে বারনেসবেক পর্যন্ত গাড়িতে যাতায়াতের রাস্তা রয়েছে। তারপর সরু পাথুরে রাস্তা। যেই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল অসম্ভব, হাঁটাও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বারনেস বেকের ছোট গ্রামটিকে কলোনি বলা যায়। পাকা রাস্তার চিহ্ন নেই। বড় জোর ১৫টি পরিবার বাস করে বলে জানা গেল। গত বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার পর শুক্রবার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে গ্রামের বাসিন্দাদেরও।

চা বাগানের এক কর্মীর কথায়, ‘‘আমরা কোনও রাজনীতিতে নেই। এতদিন এখানে কোনও ঝামেলাও ছিল না। দু’তিন দিনের মধ্যে সব কেমন বদলে গেল। এখন অপরিচিত কাউকে দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে উঠছি।’’

আতঙ্কের কারণও রয়েছে।

বাসিন্দাদের কেই কেউ জনান্তিকে দাবি করলেন মাস খানেক ধরেই সন্ধের পরে জঙ্গলে ঘন অন্ধকার নামার পরে মানুষজনের চলাফেরার শব্দ পাওয়া যেত। গ্রামের থেকেই উতরাই পথে জঙ্গলের শুরু। প্রায় দু’কিলোমিটার নীচে ছোট রঙ্গিত নদী। নদী পার হলে সিকিম। জঙ্গলে কোনও বসতি নেই। তবে অন্ধকারে কারা চলাফেরা করত সেই প্রশ্ন নিয়ে গ্রামে কয়েকদিন চর্চাও হয়েছিল। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘দু’একজন জানিয়েছিল রাতের বেলায় জঙ্গলে হাঁটাচলার শব্দ শুনেছেন। আলো দেখেছেন। দিনকাল ভাল নয়। তাই এ নিয়ে কেউ আর কথা বাড়ায়নি।’’

বারবার পুলিশ আসছে গ্রামে। তিন দিন কেটে গিয়েছে। পাথুরে জমি থেকে রক্তের দাগ মুখে গেলেও, আতঙ্কের ছাপ এখনও স্পষ্ট বারনেস বেকের গ্রামে।

shootout GJM scare Police killed murder দার্জিলিং Darjeeling
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy